গ্রেফতার: আলি ইমরাম রমজ। সোমবার। নিজস্ব চিত্র
মহকুমা শাসক দফতরের সামনে অবস্থান বিক্ষোভে বসে ১৪৪ ধারা লঙ্ঘন করায় চাকুলিয়ার বিধায়ক সহ এলাকার কৃষকদের গ্রেফতার করেছে ইসলামপুর থানার পুলিশ। সোমবার ইসলামপুর মহকুমা শাসক দফতরের এক ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায়। সেখানে ওই আন্দোলনে থাকা মহিলা শিশুরাও রয়েছে বলে দাবি তাদের। রাত পর্যন্ত ছাড়া পাননি। ইসলামপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কার্তিক মণ্ডল বলেন, ‘‘কী ব্যবস্থা নেওয়া যায়, তা দেখেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
শহরের যানজট এড়াতে ইসলামপুর শহরে বাইপাসের দাবি ছিল দীর্ঘ দিনের। জমি জটিলতা সংক্রান্ত সমস্যায় আটকে ছিল ওই বাইপাসের কাজ। বছর দেড়েক আগে উত্তর দিনাজপুরের জেলা সফরে চোপড়াতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বাইপাস নিয়েই হস্তক্ষেপ করেন। সেখানেই দায়িত্ব দেওয়া হয় পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেবকে। এর পর একাধিক বার এলাকার কৃষকদের নিয়েই বৈঠক করেন গৌতমবাবু। এলাকার অনেকে গীতাঞ্জলি প্রকল্পে ঘর বা বাইপাসের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পরিবারের সদস্যদের সিভিক ভলান্টিয়ারের চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকেই শুরু হয় বাইপাসের কাজ। যদিও কৃষকদের অভিযোগ বাইপাসের কাজ শুরু হলেও প্রতিশ্রুতি কিছুই মানা হয়নি। বৃহস্পতিবার থেকেই ইসলামপুর মহকুমা শাসক দফতরের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেন তাঁরা। যদিও গত শনিবারই ১৪৪ ধারা লাঘু করার বিজ্ঞপ্তিও জারি করে প্রশাসন। রবিবার তাঁদের সঙ্গে বৈঠক করতে আহ্বান করা হয়। কিন্তু ছুটির দিন বলে কৃষকেরা আলোচনায় বসতে চাননি।
সোমবার সকাল ১১টা নাগাদ ইসলামপুরের মহকুমাশাসকের দফতরে যাননি বাইপাসের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা। এ দিন অবশ্য কৃষকেরা গবাদি পশু পর্যন্ত নিয়ে সেখানে যান। ইসলামপুর থানার আইসি রাজেন ছেত্রী তাঁদের সঙ্গে কথা বললেও অবস্থান বিক্ষোভে অনড় থাকেন কৃষকেরা। এদিনও তাঁদের পাশে ছিলেন চাকুলিয়ার বিধায়ক ইমরান আলি রমজ ভিক্টর। ছিলেন ইসলামপুর ব্লক কংগ্রেস সভাপতি হাজি মুজাফ্ফর হুসেন। যোগ দেন ডিওয়াইএফআই নেতা সামি খান, জমি আন্দোলনের নেতা পাসারুল আলম সহ অনেকেই।
বাইপাস ল্যান্ড লুজার কমিটির সম্পাদক তথা চাকুলিয়ার বিধায়ক ভিক্টর বলেন, ‘‘এই সরকার নিজের প্রতিশ্রুতি মানতে ব্যর্থ। মহকুমাশাসক ছুটির দিন বৈঠক করতে ডেকেছিলেন। কিন্তু এ দিন অফিসের সময় মহকুমা শাসক বৈঠকের জন্য ডাকেননি। আমরা যেচে দেখা করতে যাব কেন?’’
এ দিন বিকেলে তাঁকে সেখান থেকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁর দাবি, বিক্ষোভে মহিলা শিশুদের পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হয়েছে। যদিও ইসলামপুরের মহকুমা শাসক মণীশ মিশ্র বলেন, ‘‘তাঁরা ১৪ ফেব্রুয়ারি স্মারকলিপি দিয়েছিলেন। সেটা ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট গ্রহণ করেছিলেন। অথচ তাঁরা দিন রাত অফিসের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ করছিলেন। এলাকার লোকেরা দেখা করতে এসে বাধার মুখে পড়ছিলেন। ১৪৪ ধারা লঙ্ঘন করায় তাঁদের গ্রেফতার করা হয়। এই ভাবে ১৪৪ ধারা লঙ্ঘন করা সহ্য করা হবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy