তৃণমূলের নেতাদের ডাকা সালিশি সভায় হেনস্থার জেরেই ধূপগুড়ির দশম শ্রেণির ছাত্রী আত্মঘাতী হয়েছে বলে দাবি করে চার্জশিট পেশ হল জলপাইগুড়ি জেলা আদালতে। গত ২ সেপ্টেম্বর ধূপগুড়িতে রেললাইন থেকে ওই ছাত্রীর দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তাকে ধর্ষণের পরে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ দায়ের করেন বাড়ির লোকজন। পুলিশ ধর্ষণ-খুনের মামলা রুজু করে। কিন্তু ঘটনার ৫৭ দিনের মাথায় রবিবার রেল পুলিশের তরফে তদন্তকারী অফিসার অভিষেক ভট্টাচার্য মামলার চার্জশিট দাখিল করে ওই কিশোরী আত্মহত্যা করেছে বলে দাবি করেছেন।
ওই চার্জশিটে ধূপগুড়ির ৪ তৃণমূল নেতা-সহ ১২ জনের নাম রয়েছে। তাঁরা সকলে এখন জেল হেফাজতে। পুলিশের দাবি, গত ১ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ ধূপগুড়িতে সালিশি সভায় বাবাকে জরিমানার প্রতিবাদ করায় ছাত্রীটিকে হেনস্থা করা হয়। চুলের মুঠি ধরে মারধর করা হয়। থুতু চাটানোর ‘ফতোয়া’ও দেওয়া হয়। ছাত্রীটি আতঙ্কিত হয়ে ছুটে পালিয়ে যায়। মেয়েকে খোঁজার জন্য বাবা তখন যেতে চাইলেও তাঁকে ওই তৃণমূল নেতা ও তাঁদের অনুগামীরা সালিশি সভায় আটকে রাখেন। পর দিন ভোরে ছাত্রীটির দেহ মেলে রেললাইনে।
পুলিশের বক্তব্য, ময়নাতদন্ত রিপোর্টে ধর্ষণের কোনও প্রমাণ মেলেনি। রেলের নথি অনুযায়ী, ইঞ্জিনের সামনে কাউকে ছুড়ে ফেলা অথবা ঝাঁপিয়ে পড়ার দৃশ্য কোনও চালক দেখেননি। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে চিকিৎসক স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, ‘রেললাইনের পাশে দাঁড়ানো বা চলন্ত অবস্থায় না থাকলে ওই ধরনের আঘাত হওয়া সম্ভব নয়।’ তবে রেললাইনের মাঝখানে সে ছিল না বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। সে জন্য তদন্তকারী অফিসারদের দৃঢ় ধারণা, সালিশি সভায় অপমানিত হওয়ার পরে ছাত্রী আত্মঘাতীই হয়েছে। না হলে অত রাতে একা রেললাইনের ধারে ছাত্রীটির যাওয়ার কোনও কারণ নেই বলে রেল পুলিশের দাবি।