ফাইল চিত্র।
অগ্নিপরীক্ষা! শনিবার বৃষ্টির দুপুরে জলপাইগুড়ি জেলা আদালত চত্বরে দাঁড়িয়ে প্রবীণ এক আইনজীবীর মুখ থেকে বেরিয়ে এল একটাই শব্দ।
আজ রবিবার জলপাইগুড়িতে সার্কিট বেঞ্চের অস্থায়ী পরিকাঠামো পরিদর্শনে আসছেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্য-সহ তিন বিচারপতি। হাইকোর্টের তিন জন রেজিস্ট্রার জেনারেলও আসছেন বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। হাইকোর্টের প্রতিনিধি দল পরিকাঠামো দেখে সন্তোষ প্রকাশ করলে, তবেই জলপাইগুড়িতে অস্থায়ী ভাবে বেঞ্চ শুরুর প্রক্রিয়া শুরু হবে। এবারের পরিদর্শনেও যদি কোনও ত্রুটি ধরা পড়ে অথবা হাইকোর্ট অসন্তুষ্ট হয়, তবে অস্থায়ী বেঞ্চ শুরু করার প্রক্রিয়া আরও পিছিয়ে যাবে বলেই মনে করছেন আইনজীবীদের একাংশ। তাই আজকের পরিদর্শনকে ‘অগ্নিপরীক্ষা’ বলেই দাবি করছেন আইনজীবীরা।
জলপাইগুড়ি জেলা আদালতের বার অ্যাসোসিয়েশনের সদ্য নির্বাচিত সভাপতি তথা সার্কিট বেঞ্চ দাবি আদায় কমিটির সম্পাদক আইনজীবী কমলকৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “প্রধান বিচারপতির সঙ্গে আইনজীবীদের প্রতিনিধি দল দেখা করতে যাবে। দ্রুত যাতে অস্থায়ী পরিকাঠামোয় বেঞ্চের কাজ শুরু হয়, শুনানি শুরু হয় সেই আর্জি জানাব আমরা।”
টাউন স্টেশন লাগোয়া জেলা পরিষদ ডাকবাংলোয় হাইকোর্টের অস্থায়ী ভবন তৈরি হয়েছে। তিন তলা মূল ভবনের আশপাশে আরও কয়েকটি ভবন। সেখানে অফিস-রেকর্ড রুম আনুষাঙ্গিক পরিকাঠামো থাকছে। শনিবার দুপুরে গিয়ে দেখা গেল ডাকবাংলোর সবকটি ভবন মিলিয়ে অন্তত দেড়শো শ্রমিক কাজ করছেন। রঙের কাজ, টাইলস বসানোর কাজ, আসবাবপত্র পালিশ করা, বিদ্যুতের নতুন লাইন, পানীয় জলের বন্দোবস্ত, বিকল্প রাস্তা তৈরি সব কাজ একসঙ্গে চলছে। যেন রাজসূয় যজ্ঞ চলেছে। ডাকবাংলোর মূল গেট পেরিয়ে ভবনে যাওয়ার রাস্তায় নতুন ফ্লোর টালি বসানো হয়েছে। বিচারপতিদের গাড়ি ঢোকার জন্য পৃথক রাস্তা তৈরি ছিল। সেই রাস্তাও সংস্কার হচ্ছে। ডাকবাংলোর সঙ্গে তিস্তা ভবন এবং সার্কিট হাউসের সম্প্রসারিত অংশে বিচারপতিদের অস্থায়ী আবাসনও পরিদর্শনের কথা রয়েছে হাইকোর্টের প্রতিনিধিদের।
জলপাইগুড়ির পাহাড়পুরে প্রায় সাড়ে তিনশো কোটি টাকা বরাদ্দে হাইকোর্টের স্থায়ী ভবন তৈরির টেন্ডার হয়েছে। পুজোর পরে সেই ভবনের কাজ শুরুর কথা। ভবনের কাজ শেষ করতে দু’বছর প্রয়োজন বলে রাজ্যের তরফে হাইকোর্টকে জানানো হয়েছে। ততদিন অস্থায়ী ভবনে বেঞ্চের শুনানি চলবে বলে স্থির হয়েছিল। এর আগেও অস্থায়ী ভবনের পরিকাঠামো নিয়ে একাধিকবার উষ্মা প্রকাশ করেছিল হাইকোর্ট। নানা পরামর্শও দিয়েছিল। সেই মতো সব সংস্কার হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে। আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক ছাড়াও রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব গত দু’মাসে বেশ কয়েকবার সেই কাজ পরিদর্শন করে পর্যালোচনা করেছেন। আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে সংস্কারের কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে রাজ্যের তরফে হাইকোর্ট প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। সেই কাজ যথাযথ হচ্ছে কিনা তা আজ রবিবার হাইকোর্ট জানাবে রাজ্যকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy