Advertisement
০৬ মে ২০২৪
Agitation

পাকুয়াহাট নিয়ে অবস্থান-মিছিলে সরগরম দুই জেলা

শুক্রবার রাতে মালদহ জেলার পাকুয়াহাটে চোর সন্দেহে দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে গণপ্রহারের অভিযোগের ভিডিয়ো সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়।

মালদহের এসপি অফিসের সামনে ডিএসপির আদেশে বিজেপি কর্মীদের ঘিরে কেন্দ্রীয় বাহিনী। ছবি স্বরূপ সাহা

মালদহের এসপি অফিসের সামনে ডিএসপির আদেশে বিজেপি কর্মীদের ঘিরে কেন্দ্রীয় বাহিনী। ছবি স্বরূপ সাহা

অভিজিৎ সাহা, অনুপরতন মোহান্ত
মালদহ, দক্ষিণ দিনাজপুর শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০২৩ ০৯:০২
Share: Save:

কোথাও রাতভর ঘেরাও-অবস্থান, কোথাও আবার মিছিল-পাল্টা মিছিল। মালদহের পাকুয়াহাটে মহিলাদের নির্যাতনের ঘটনায় রবিবারও তেতে রইল মালদহ ও দক্ষিণ দিনাজপুর। মালদহ ও দক্ষিণ দিনাজপুরে মণিপুরের প্রসঙ্গ টেনে পাকুয়াহাটের ঘটনায় রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তুলে পথে নামেন বিজেপির নেতা, নেত্রীরা। তাঁদের বিরুদ্ধে রাজনীতির অভিযোগ তুলে মালদহে পাল্টা কর্মসূচি পালন করে তৃণমূল। তবে পাকুয়ার ঘটনার নিন্দা করলেও মণিপুরের সঙ্গে তার তুলনা টানতে নারাজ বাম-কংগ্রেস।

শুক্রবার রাতে মালদহ জেলার পাকুয়াহাটে চোর সন্দেহে দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে গণপ্রহারের অভিযোগের ভিডিয়ো সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়। যদিও তা মঙ্গলবার বিকালের বলে দাবি পুলিশের। ঘটনাটি নিয়ে হইচই হতেই পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে। এর মধ্যে, তিন মহিলা। এ দিন তাঁদের আদালতে পেশ করে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব। তিনি বলেন, “ঘটনায় বাকি অভিযুক্তদেরও ধরার চেষ্টা চলছে।”

এ দিকে, পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে শনিবার দুপুর ২টা থেকে মালহদের পুলিশ সুপারের অফিসের সামনে অবস্থান-বিক্ষোভে বসে যান বিজেপির নেতা-কর্মীরা। প্রায় ২৪ ঘণ্টা ধরে তাঁরা অবস্থান বিক্ষোভ করেন। তাঁদের অবস্থান বিক্ষোভকে ঘিরে দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়াল পুলিশ সুপারের অফিস চত্বরে। অভিযোগ, চড়া রোদ থাকলেও পুলিশ বিজেপির অবস্থানকারীদের মাথার উপরে থাকা ত্রিপল খুলে দেয়। এ ছাড়া কয়েক জন কর্মীকে পুলিশ মারধরও করে, দাবি বিজেপির। তাদের দাবি, গরমে তিন কর্মী অসুস্থ হয়ে মেডিক্যালে ভর্তি। পরে, দুপুর ২টা নাগাদ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহ কুমার অমিত গিয়ে বিজেপির নেতৃত্বদের সঙ্গে কথা বলেন। তার পরে অবস্থান তুলে নেন তাঁরা। বিজেপির উত্তর মালদহের সাংসদ খগেন মুর্মু বলেন, “পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করতে অফিসে গিয়েছিলাম। অথচ, আমাদের সঙ্গে দেখা করতে পুলিশ সুপার আসেননি। আন্দোলনে চাপে পড়ে পরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এসে কথা বলে যান।”

এ দিন বামনগোলা থানায় গিয়েও বিজেপি-র নেতা এবং কর্মীরা বিক্ষোভ দেখান। এ ছাড়া দক্ষিণ দিনাজপুরের প্রতিটি থানায় মিছিল করে গিয়ে বিজেপি-র নেতা, নেত্রীরা বিক্ষোভ করেন। তবে সেখানে পুলিশ তাঁদের ব্যারিকেড দিয়ে আটকে দেয় বলে অভিযোগ। এ দিন বিজেপি জেলা নেত্রী পূর্ণিমা মহান্ত অভিযোগ করেন, ‘‘মালদহে প্রকাশ্যে নারী নির্যাতন হচ্ছে। মহিলাদের বিবস্ত্র করে মারধর করা হচ্ছে। অথচ মুখ্যমন্ত্রী কোন‌ও প্রতিক্রিয়া না দিয়ে মণিপুরে গিয়ে লড়ার কথা বলছেন।’’

এ দিন মণিপুরের ঘটনা ধামাচাপা দিতে বিজেপি মালদহের ঘটনা নিয়ে রাজনীতি করছে বলে অভিযোগ তুলে পাল্টা রাস্তায় নামে তৃণমূল। এ দিন ইংরেজবাজার শহরে মিছিল করে ফোয়ারা মোড়ে অবস্থান বিক্ষোভ করেন তৃণমূলের শহর সভাপতি নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি, জেলার মুখপাত্র আশিস কুণ্ডু প্রমুখ। আশিস বলেন, “মালদহের ঘটনা পুলিশ গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। বিজেপি মণিপুরের মতো অমানবিক ঘটনা থেকে নজর সরাতে মালদহের ঘটনা সামনে রেখে রাজনীতি করছে।” কংগ্রেস নেতা ইশা খান চৌধুরী বলেন, “পাকুয়ার ঘটনা নিন্দনীয় বলেও মণিপুরের সঙ্গে তুলনা করা যায় না।” একই বক্তব্য সিপিএম জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্রেরও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Agitation Malda South Dinajpur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE