চা বাগান ও ডুয়ার্সে দলের নেতাদের কাজকর্মে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে অসন্তুষ্ট, তা প্রকাশ পেয়ে গেল প্রশাসনিক বৈঠকে। আলিপুরদুয়ারে দলের জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী পড়লেন তাঁর ক্ষোভের মুখে।
সৌরভ বলেছিলেন, রাস্তা খারাপ বলে ডুয়ার্সের কোনও কোনও জায়গায় বাস চালানো যাচ্ছে না। ক্ষুব্ধ মমতা তাঁকে বলে দেন, বিধায়ক, সাংসদদের মধ্যে সমন্বয় রেখে টাকা জোগাড় করে নিতে হবে। তিনি বলেন, সব কাজের জন্য রাজ্যের কাছে টাকা চাইলে হবে না। রাস্তা নির্মাণ সহ এ ধরনের কাজের টাকা বিধায়ক, সাংসদ কোটা থেকেই সংগ্রহ করতে হবে। তারপরে আবার ওই সব জায়গায় বাস চালাতে হবে। সেই সঙ্গে চা বাগানের প্রসঙ্গ তুলেই কেন্দ্রকে বিঁধেছেন মমতা। এক বছর পরেও কেন সাতটি চা বাগানের একটিও অধিগ্রহণ করা হয়নি, সে প্রশ্ন তোলেন তিনি।
বুধবার হাসিমারারা কোদালবস্তিতে আলিপুদুয়ার জেলা নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠকের পরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “নির্বাচনের আগে এসে তো বলে গিয়েছিলেন সাতটি চা বাগান অধিগ্রহণ করবেন। এক বছর হল। আজ পর্যন্ত একটিকেও টেক ওভার করেছে। উপরুন্তু বাংলায় চায়ের বাগান বেশি বলে আমাদের কলকাতায় যে টি বোর্ডের অফিস রয়েছে। সেই অফিস হস্তান্তর করে অসমে নিয়ে যাচ্ছে। আমার আপত্তি নেই যদি আলাদা ভাবে একটি অসমে করে। কিন্তু কেন বাংলারটা কেন তুলে নিয়ে যাবে বলুন তো। বাংলার আমরা কি ছাগলের তৃতীয় ছানা।”
নজরে আলিপুরদুয়ার
•
জেলায় এক জন এএসপি ও মহকুমাশাসক নিয়োগ
•
জয়গাঁয় ৭ কোটি টাকা খরচে বাস টার্মিনাস। কার পার্কিংও
• এথেলবাড়ি, জয়গাঁয় শিল্পতালুক গড়ার পরিকল্পনা
•আলিপুরদুয়ারে তৈরি হবে আরও ৬টি হিমঘর, পুলিশ লাইন
• বিধায়ক ও সাংসদ কোটার টাকা সমন্বয় রেখে খরচের নির্দেশ
• মালঙ্গি, বীরপাড়ার চা বাগানে চিকিৎসক তৈরির রাখার নির্দেশ
তবে বিজেপি নেতা মাদারিহাটের বিধায়ক মনোজ টিগ্গা বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকার অধিগ্রহণের লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছিল।। মামলার জন্যে তা আটকে আছে। মুখ্যমন্ত্রী সব জেনেও মিথ্যে বলছেন।”
এ দিন কোদালবস্তি এলাকায় প্রশাসনিক বৈঠকে নরমে-গরমে উন্নয়নের খতিয়ান নিয়ে বিশদে খোঁজ নেন মুখ্যমন্ত্রী। একশো দিনের কাজ থেকে নদী ভাঙন, পর্যটন সকল বিষয় মতামত নিলেন জেলাপরিষদের সভাধিপতি মোহন শর্মার।
এ দিন প্রশাসনিক বৈঠকে বেসরকারি নার্সিংহোম ও হাসপাতাল গুলির প্রতিনিধিদের আরও ভাল করে কাজ করার নির্দেশ দেন। রোগীদের নিয়ে প্রাথমিক সমস্যা নিজেদের মিটিয়ে নিতে বলেন। আলিপুরদুয়ার চেম্বার অফ কর্মাস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সাধারণ সম্পাদক প্রসেনজিৎ দে এলাকায় শিল্প তালুক, হিমঘর, বনজ সম্পদ নিয়ে শিল্পের সম্ভাবনা জানান মুখ্যমন্ত্রীকে। আলিপুরদুয়ারে প্রায় ৫০ কোটি টাকা ব্যয় তৈরি হচ্ছে প্রশাসনিক ভবন। সেই কাজে জেলার বর্ষ পূর্তি ২৫ জুনের আগে শেষ করার নির্দেশ দেন পূর্ত দফতরকে। জেলার তৃতীয় বর্ষ পূর্তি উৎসবে তিনি আবার আলিপুরদুয়ারে আসবেন বলে জানিয়ে দেন।