Advertisement
E-Paper

রাস্তা জুড়ে জুলুমবাজি

চাঁদার জুলুম রুখতে উত্তরবঙ্গের কিছু এলাকায় পুলিশ আসরে নেমেছে। তা সত্ত্বেও কোথাও পুলিশের নজর এড়িয়ে জুলুমবাজি চলছেই বলে অভিযোগ।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০১৬ ০২:৪৬
এনজেপি স্টেশনের মুখে যাত্রী ও পর্যটকদের আটকে তোলা হচ্ছে চাঁদা। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

এনজেপি স্টেশনের মুখে যাত্রী ও পর্যটকদের আটকে তোলা হচ্ছে চাঁদা। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

চাঁদার জুলুম রুখতে উত্তরবঙ্গের কিছু এলাকায় পুলিশ আসরে নেমেছে। তা সত্ত্বেও কোথাও পুলিশের নজর এড়িয়ে জুলুমবাজি চলছেই বলে অভিযোগ। কোথাও পুলিশের একাংশের সামনেই সকাল থেকে দিনভর দৌরাত্ম্য চালাচ্ছে ‘চাঁদা বাহিনী’। জাতীয় সড়ক, রাজ্য সড়ক থেকে পূর্ত সড়ক বা পাড়ার অলিগলিতে চাঁদার জুলুম চলছে বলে অভিযোগ। শিলিগুড়ি থেকে কোচবিহার, ইসলামপুর বা মালদহ-উত্তরবঙ্গে প্রায় সর্বত্রই একই ছবি। ১০০ ডায়াল বা থানাগুলি টেলিফোন করার পর পুলিশ আসরে নামলেও বাসিন্দাদের অনেকেরই অভিযোগ, ধরা পড়লে ভাল নয়তো, কয়েক ঘণ্টার বিরতি। তার পরে ফের সক্রিয় চাঁদা বাহিনী। এরই মধ্যে সোমবারই চাঁদার জুলুমবাজির অভিযোগে ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

কোচবিহার জেলা পুলিশ সুপার অনুপ জয়াসবাল জানান, কোচবিহার কোতোয়ালি, বক্সিরহাট, ঘোকসাডাঙা ও মাথাভাঙা থানা এলাকায় চাঁদার জুলুমবাজির অভিযোগে একাধিক মামলা রুজু করা হয়েছে। তিনি বলেন, “সব মিলিয়ে চারটি মামলা হয়েছে। কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নজরদাড়ি চালানো হচ্ছে।”

শিলিগুড়ি শহর, ভক্তিনগর, মাটিগাড়া, বাগডোগরা, নিউ জলপাইগুড়ি সর্বত্র থেকেই রাস্তায় গাড়ি দাঁড় করিয়ে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ পুলিশের কাছে পৌঁছেছে। পুলিশ সূত্রের খবর, দুর্গা পুজোর মতো এ বারেই চাঁদা আদায়ের অভিযোগ কমিশনারেটের বড় কর্তাদের কাছেও পৌঁচেছে। অফিসারেরা জানান, প্রতি এলাকায় মাঝবয়সী ছেলেরাই চাঁদা বাহিনী গড়ে রাস্তা নেমে পড়ছে। সাদা পোশাকের পুলিশকর্মীরা তাড়া করে ধরলেই এলাকায় অনেক ‘দাদা’রাই তাঁদের ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যাচ্ছেন। সেখানে শাসক দল তো বটেই বিরোধী দলের লোকজনও রয়েছে। কয়েকটি জায়গায় সতর্ক করায় কাজ হয়েছে বলেও ওই অফিসারেরা জানিয়েছেন। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার চেলিং সিমিক লেপচা, ‘‘নজরদারি থানাগুলি আরও বাড়াতে বলা হয়েছে।’’

পুলিশি ধরপাকড়ের মধ্যেও রাস্তার গাড়ি থামিয়ে চাঁদা আদায় চলছে মালদহে। সোমবারও ইংরেজবাজার শহর ও সংলগ্ন এলাকায় গাড়ি থামিয়ে পুজো উদ্যোক্তারা জোর করে চাঁদা আদায় করছে বলে অভিযোগ। শহরের ফুলবাড়ি, দুর্গাবাড়ি মোড়, বাঁধ রোড টোটো চালকদের কাছ থেকে কুপনের মাধ্যমে চলছে চাঁদা আদায়। এ ছাড়া ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে ৩২০ মোড়, মঙ্গলবাড়িতে একই ছবি ধরা পড়ে এ দিন। তবে পুলিশের গাড়ি দেখলেই এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায় পুজো উদ্যোক্তারা। তাই চাঁদার জুলুম রুখতে সাদা পোশাকে পুলিশি টহল শুরু হবে বলে জানা গিয়েছে। পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ বলেন, ‘‘আমাদের কাছে কোন অভিযোগ এখনও জমা পড়েনি। তবে আমাদের টহলদারি চলছে।’’

তবে পুলিশকর্মীদের নজরদারি নিয়ে কেবল কথাই সার, বলছেন ইসলামপুরের বাসিন্দারা। তাঁরা জানান, মহকুমার শহর থেকে গ্রাম প্রতিটি এলাকাতে ভোর হতে হতেই রাস্তায় নেমে পড়ছে চাঁদা আদায়কারীরা। জাতীয় সড়কের দাঁড়িয়ে শুধু ট্রাক থেকে টাকা আদায় নয়, গ্রাম এলাকাতে দুপুর বেলাতেও রাস্তার উপর লাঠি নিয়ে দাড়িয়েই চাঁদা তুলছে এক দল যুবক।

ইসলামপুর থেকে দাড়িভিট যাওয়ার পথে রাজ্য সড়কেই অমলঝাড়ি, সোনামতি সংলগ্ন এলাকাতে কিছু দূরে পর পরেই এই ছবি দেখা যাচ্ছে। শুধু ট্রাক বা ছোট গাড়ি নয়, তাদের হাত থেকে রেহাই পায় না বাইক আরোহীরাও. একই পরিস্থিতি মহকুমার বিভিন্ন এলাকাতেই। পুলিশ অবশ্য ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে।

subscription
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy