E-Paper

এ বার পোশাক-বিতর্ক জলপাইগুড়ি জেলা স্কুলে

১৮৭৬ সালে তৎকালীন ব্রিটিশ বাংলা সরকারের লেফটেন্যান্ট গর্ভনরের নির্দেশে মাসিক ২০০ টাকা করে সরকারি বরাদ্দ মঞ্জুর করে জলপাইগুড়ি জেলা স্কুল প্রতিষ্ঠিত হয়।

অনির্বাণ রায়

শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০২৩ ১০:১৪
জলপাইগুড়ি জেলা স্কুল।

জলপাইগুড়ি জেলা স্কুল। —নিজস্ব চিত্র।

শতাব্দীপ্রাচীন জলপাইগুড়ি জেলা স্কুলের পোশাকের রং বদলে যেতে চলেছে। সাদা জামা, কালো রঙের প্যান্ট থেকে সাদা জামা এবং নীল রঙের প্যান্ট হতে চলেছে স্কুল পোশাক। তাতেই বেধেছে বিতর্ক।

স্কুলের প্রাতঃবিভাগের পড়ুয়াদের বৃহস্পতিবার নীল-সাদা পোশাক দিয়েছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। জলপাইগুড়ি জেলা স্কুলের পড়ুয়াদের সাদা জামা, কালো প্যান্ট পরে স্কুলে আসা এত দিন বাধ্যতামূলক ছিল। আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে সাদা জামা এবং নীল রঙের প্যান্ট পরেও স্কুলে আসা যাবে। প্রাক প্রাথমিক থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াদের সরকারি নীল-সাদা পোশাক দিচ্ছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। দু’বছর পরে,জলপাইগুড়ি জেলা স্কুলের সার্ধশতবর্ষ উদযাপন হবে। সে উপলক্ষে নতুন করে সাজছে প্রাক্তনী সংগঠন, স্কুলের পরিকাঠামোও সংস্কার হচ্ছে। এই আবহে স্কুল পোশাকের রং বদলানোর সিদ্ধান্ত ঘিরে তীব্র ক্ষোভ তৈরি হয়েছে প্রাক্তনীদের বড় অংশের মধ্যে। এ দিনও স্কুলে নীল-সাদা পোশাক নিয়ে আপত্তি তুলেছেন অভিভাবকদের অনেকে।

১৮৭৬ সালে তৎকালীন ব্রিটিশ বাংলা সরকারের লেফটেন্যান্ট গর্ভনরের নির্দেশে মাসিক ২০০ টাকা করে সরকারি বরাদ্দ মঞ্জুর করে জলপাইগুড়ি জেলা স্কুল প্রতিষ্ঠিত হয়। তার পরে কয়েক বার স্কুল ভবন বদলালেও, স্কুলের পোশাকের রং বদলায়নি বলেই দাবি প্রাক্তনীদের। অভিভাবকদের অনেকেই নীল-সাদা পোশাক নেননি, ফিরিয়ে দিয়েছেন। তাতে অবশ্য স্কুল কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত বদলাচ্ছেন না বলেই জানিয়েছেন।

পোশাক বিলি ঘিরে এ দিন অসন্তোষ তৈরি হতে পারে আগে থেকেই আন্দাজ করেছিলেন কর্তৃপক্ষ। জানিয়ে রাখা হয়েছিল প্রশাসনকেও। জেলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক ধর্মচাঁদ বাড়ুই বলেন, “সরকারি নিয়ম মেনে পড়ুয়াদের নীল প্যান্ট, সাদা জামা বিলি করা শুরু হয়েছে। এতে স্কুল কর্তৃপক্ষের কিছু করার নেই।সরকারি স্কুলে সরকারি নিয়ম মানতে হবে। সরকার স্কুলের পরিকাঠামোর জন্য ঢেলে বরাদ্দ করছে,সরকারি নির্দেশ মানতে হবে।” অভিভাবকদের আপত্তি প্রসঙ্গে প্রধানশিক্ষক বলেন, “কেউ কেউ আপত্তি করেছেন। অনেকেই পোশাক নিয়েছেন।” জেলা শিক্ষা দফতর বা প্রশাসনের কর্তারা এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে চাননি।

স্কুল ভবন বা স্কুলের পোশাকের রং নিয়ে বিতর্ক যদিও একেবারেই নতুন কোনও বিষয় নয়। কোচবিহারের সরকারি জেনকিন্স স্কুলেও সবুজ-সাদা পোশাকের পরিবর্তে নীল-সাদারঙের পোশাক দেওয়া শুরু হতেই আন্দোলন শুরু হয়ে যায়। তার পরে স্কুলের পোশাকের রং বদলায়নি। আন্দোলন হয়েছিল কোচবিহারের সুনীতি অ্যাকাডেমির পোশাকের রং বদল নিয়েও, সেখানেও স্কুলের ঐতিহ্যের রঙেরপোশাকই রয়েছে, নীল-সাদা রঙের পোশাক আর শেষমেশ হয়নি।

আবার শিলিগুড়ি গার্লস স্কুল ভবনের লালচে রং বদলে নীল-সাদা করার পরিকল্পনা হতেই প্রাক্তনীরা প্রতিবাদে নেমেছিলেন। স্কুল ভবনের রং বদলায়নি, স্কুলের পোশাকের রংও বদলায়নি শেষ পর্যন্ত। জলপাইগুড়ি রাষ্ট্রীয় বালিকা বিদ্যালয়ের ভবনের গা থেকেও লাল-হলুদ মুছে, নীল-সাদা করে দেওয়া হয়েছিল। এর প্রতিবাদ জানিয়েও স্কুলের প্রাক্তনীরা আন্দোলনে নেমেছিলেন। বছরখানেক পরে ফের স্কুল কর্তৃপক্ষ লাল-হলুদ রং ফিরিয়েদিয়েছিলেন স্কুলে।

এ দিন জেলা স্কুলের প্রাতঃবিভাগে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াদের নীল-সাদা পোশাক দেওয়া হযেছে। আজ, শুক্রবার থেকে স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে পড়ুয়াদের নীল-সাদা পোশাক বিলি করা হবে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Jalpaiguri Zilla School Jalpaiguri

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy