প্রতীকী ছবি
করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের পর্যাপ্ত পরিমাণে এন-৯৫ মাস্ক, পার্সোনাল প্রটেকটেড ইকুইপমেন্ট(পিপিই)নেই বলে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে অভিযোগ উঠেছে। ইতিমধ্যে করোনা সংক্রমণ নিয়ে মেডিক্যালে ভর্তি এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এরপরে সোমবার নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীরা বিক্ষোভ দেখান। জুনিয়র চিকিৎসক, নিরাপত্তা কর্মীরাও অসন্তোষ প্রকাশ করেন। ভিডিয়ো কনফারেন্সে মুখ্যমন্ত্রীকে এই সমস্যার কথা জানান মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ প্রবীর কুমার দেব। এরপরে মঙ্গলবার ৫০০ পিপিই, এক হাজার এন ৯৫ মাস্ক, ৫০০ সার্জিক্যাল মাস্ক এসে পৌঁছয় মেডিক্যালে। তবে সেটাও প্রয়োজনের তুলনায় কম বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকদের একাংশ।
সোমবারই মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দফতরে প্রয়োজনীয় জিনিসের চাহিদার তালিকা পাঠানো হয়েছে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের তরফে। প্রতি সপ্তাহে কত পরিমাণ পিপিই, এন ৯৫ মাস্ক, সার্জিক্যাল মাস্ক, স্যানিটাইজ়ারের মতো বিভিন্ন সামগ্রী প্রয়োজন সে ব্যাপারে অধ্যক্ষ বিস্তারিত জানিয়েছেন। তাতে জানানো হয়েছে, সপ্তাহে ৭০০ পিপিই দরকার। এন ৯৫ মাস্ক চাই অন্তত ১৫০ টি। সার্জিক্যাল মাস্ক দরকার এক হাজার। এছাড়াও করোনা আক্রান্ত বা সন্দেহভাজন রোগীদের সুষ্ঠু পরিষেবা দিতে অ্যানাস্থেটিস্ট বা ক্রিটিক্যাল কেয়ারের প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত মেডিক্যাল অফিসার ১০ জন এবং ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট চালাতে ২০ জন টেকনিশিয়ান চাওয়া হয়েছে।
উত্তরবঙ্গে করোনার চিকিৎসায় অন্যতম কেন্দ্র উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল। সোমবার থেকে সেখানে ভাইরাল রিসার্চ অ্যান্ড ডায়গনেস্টিক ল্যাবরেটরিতে করোনা নির্ণায়ক পরীক্ষা চালু হয়েছে। এখন অন্য পরিকাঠামোও দ্রুত ঠিক করা দরকার বলেই কর্তৃপক্ষ মনে করেন। মঙ্গলবার পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব হাসপাতালে যান। জেলাশাসক, ডিভিশনাল কমিশনারও গিয়েছিলেন পরিকাঠামোর খামতির বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে। পরে পর্যটনমন্ত্রী বলেন, ‘‘মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক, নার্স, সাফাইয়ের কাজে যুক্ত কর্মীদের প্রতিনিধি, জুনিয়র ডাক্তার সকলে মিলে আলোচনা হয়। বেশিরভাগ বিষয়গুলো মেটানোর ব্যবস্থা হয়েছে। অন্য দিকগুলো নিয়ে আলোচনা চলছে।’’
হাসপাতাল সূত্রেই খবর, সাফাই কর্মীদের একাংশ পিপিই, মাস্ক ছাড়া কাজ করতে চাইছেন না। পর্যাপ্ত সামগ্রী না থাকায় তাঁদের সেসব দেওয়াও যাচ্ছিল না। তাতে গত কয়েক দিন ধরে আইসোলেশন ওয়ার্ডের কাছে আবর্জনা জমে রয়েছে। এ দিন মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বেহাল পরিস্থিতির কথা জানান রেসপিরেটরি ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটের চিকিৎসক প্রিয়াঙ্কা চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘‘সাফাই হচ্ছে না। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের মধ্যে রোগীদের থাকতে হচ্ছে, চিকিৎসকদের কাজ করতে হচ্ছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘প্রথম থেকে পিপিই কিট পাইনি সব সময়। তাই বলে রোগী পরিষেবায় যে সমস্যা হয়েছে তা নয়। তাও নিজেদের নিরাপত্তার জন্য দাবি করছি। কারণ আমরা নিরাপদ থাকলে বাকিরা থাকবে। আমি কাজ সেরে বাড়ি ফিরে যাচ্ছি। যেহেতু একজন মারা গিয়েছেন সে কারণে কর্মীদের মধ্যে একটা ভয় কাজ করে। তাঁদের বুঝিয়ে হয়তো ফিরিয়ে আনতে পারব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy