প্রতীকী ছবি
ওঁরা ‘বন্দি’। অপরাধে নয়, লকডাউনের জেরে গত ৫০ দিন ধরে চেন্নাইয়ের কোয়রান্টিন শিবিরে আটকে সকলেই। সেখানে কোচবিহার, মালদহ, মুর্শিদাবাদ থেকে নদিয়া, উত্তর ২৪ পরগনার বাসিন্দাও রয়েছেন। সকলেই শ্রমিক। কেরল থেকে বাড়ি ফেরার পথে চেন্নাইয়ে আটকে পড়েন। কেউ নির্মাণ শ্রমিক, কেউ হোটেল, কেউ তাঁতশিল্পের কাজে যুক্ত। শিবিরে রয়েছেন প্রায় ১০৫ জন।
আটক শ্রমিকরা জানান, কেরলে করোনার প্রকোপ বাড়তে থাকায় বন্ধ হতে থাকে সব ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। ২১ মার্চ তাঁরা কেরল থেকে রওনা দেন। ট্রেনে ওঠেন সকলে। ২২ মার্চ রাতে চেন্নাই থেকে হাওড়ার ট্রেন ছিল। কিন্তু সে দিনই কার্ফুতে আটকে পড়েন। এর পরে ট্রেন চলাচলও বন্ধ হয়ে যায়। তার পর থেকে শুরু হয় লকডাউন।
চেন্নাইয়ে পুলিশ-প্রশাসন তাঁদের শিবিরে পাঠিয়ে দেয়। শিবিরে আটকে থাকা নদিয়ার হাসখারির আজহার মণ্ডল, উত্তর ২৪ পরগনার বাসন্তীর সহদেব দাস বলেন, ‘‘প্রথমে বলা হল লকডাউন উঠে যাবে। তার পরে বাড়ি পাঠানো হবে। কিন্ত তার পরে ফের লকডাউন শুরু হয়। কিন্তু আমাদের ঘরে ফেরানোর বিষয়ে কোনও
প্রক্রিয়া হয়নি।’’
উত্তর দিনাজপুরের করণদিঘির শেখ আবু তালেব বলেন, ‘‘আমাদের সঙ্গে ওড়িশা, বিহার ও উত্তরপ্রদেশের শ্রমিকেরা ছিলেন। তাঁরা ফিরে গিয়েছেন। কিন্ত ৫০ দিন পরেও আমরা আটকে। বাড়ির লোকজন দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।’’
মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরের শেখ রমজান আলির আকুতি, ‘‘কী ভাবে ফিরব? চেন্নাই পুলিশ-প্রশাসন বলছে, পশ্চিমবঙ্গ থেকে এখনও পর্যন্ত কোনও নির্দেশ আসেনি।’’ নদিয়ার আজহার আলম জানান, কেরলে তাঁদের স্বাস্থ্যপরীক্ষা করে শংসাপত্র দিয়েছে। চেন্নাইয়ে নিয়মিত স্বাস্থ্যপরীক্ষা করা হচ্ছে। তাঁদের আরও অভিযোগ, বাড়ি ফেরার জন্য দিন-রাত পশ্চিমবঙ্গ সরকারের হেল্পলাইন নম্বরে যোগাযোগ করে যাচ্ছেন। কিন্তু কেউ ফোন ধরেননি।
এই বিষয়ে গোয়ালপোখরের বিধায়ক তথা রাজ্যের শ্রম দফতরের প্রতিমন্ত্রী গোলাম রব্বানি বলেন, ‘‘রাজ্যে সরকার পরিযায়ী শ্রমিকদের ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করছে। কন্ট্রোল-রুমে যোগাযোগ করে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। ধাপে ধাপে ফেরানোর ব্যবস্থা করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy