ভক্তিনগর থানা এলাকার মামলার বিচার যাতে জলপাইগুড়ি জেলা আদালতেই হয়, সেই আর্জি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন দুই আইনজীবী। বুধবার সেই আবেদন গ্রহণ করে শুনানির নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্টের বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত। এ বিষয়ে রাজ্য সরকারের মতামত জানতে চেয়ে চার সপ্তাহের মধ্যে হলফনামাও দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। হাইকোর্টের প্রশাসন কী ভাবছে, তা নিয়েও হলফানামা জমা দিতে বলেছেন বিচারপতি।
ভক্তিনগর থানা এলাকার মামলা কোন আদালতের আওতাভুক্ত হবে, তা নিয়ে টানাপড়েন দীর্ঘদিনের। ২০১২ সালে শিলিগুড়ি কমিশনারেট গঠন করার সময় সেখানে ভক্তিনগর থানাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তার পর থেকেই প্রতিবাদ আন্দোলন শুরু জলপাইগুড়িতে। দাবি, ভক্তিনগরের মামলা জলপাইগুড়িতেই করতে হবে। এর পাল্টা প্রতিবাদ শুরু করেন শিলিগুড়ির আইনজীবীরা। কমিশনারেটের মামলার শুনানির জন্য পৃথক মেট্রোপলিটান আদালত গঠনের কথা। সেই আদালত গঠন করে ভক্তিনগরের মামলা শিলিগুড়িতেই শুনানির দাবি জানিয়ে আন্দোলন শুরু করে বৃহত্তর শিলিগুড়ি নাগরিক মঞ্চও।
এই নিয়ে দীর্ঘ টানাপড়েনের পরে এ বারে হাইকোর্টে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন জলপাইগুড়ির দুই আইনজীবী গৌতম পাল এবং সুদীপ্তকান্ত ভৌমিক। এ দিন হাইকোর্টে তাঁদের পক্ষে সওয়াল করেছেন দেবাশিস মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘রাজ্যের মতামত চার সপ্তাহের মধ্যে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। রাজ্যের হলফনামা জমা পড়ার পরে মামলার শুনানি শুরু হবে।’’
শিলিগুড়ি পুরসভার ১৪টি ওয়ার্ড ভক্তিনগর থানার অর্ন্তভুক্ত। থানা চত্বরটিও শিলিগুড়ি পুর এলাকায়। তাই কমিশনারেট গঠনের সময়ে জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশের আওতা থেকে ভক্তিনগরকে সরিয়ে শিলিগুড়ি পুলিশের অর্ন্তভুক্ত করা হয়। তা ছাড়া ভক্তিনগর থেকে জলপাইগুড়ি জেলা আদালত অনেক দূর। সেখানে যেতে গেলে ভক্তিনগরের বাসিন্দাদের দুর্ভোগ পোহাতে হয় বলে অভিযোগ বৃহত্তর শিলিগুড়ি নাগরিক মঞ্চ এবং বাসিন্দাদের একাংশের। উল্টো দিকে, গৌতম পালের যুক্তি, ‘‘দু’টি জেলাকে নিয়ে একটি কমিশনারেট গঠন হতে পারে না।’’
ভক্তিনগর নিয়ে বিভ্রান্তি রয়েছে প্রশাসনেও। ২০১৪ সালের শেষে জলপাইগুড়িতে বিশ্ববাংলা ক্রীড়াঙ্গণের উদ্বোধনে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আশ্বাস দেন, ‘‘ভক্তিনগর জলপাইগুড়িতেই থাকবে।’’ গত বছরের এপ্রিল মাসে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতর নির্দেশিকা জারি করে ভক্তিনগর থানা এলাকার ‘এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটে’র ক্ষমতা শিলিগুড়ি কমিশনারেট থেকে জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসনকে ফিরিয়ে দেয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy