ভূমিকম্পের জেরে শিলিগুড়ির প্রধাননগরের একটি বাড়িতে ফাটল। —নিজস্ব চিত্র।
শনিবার থেকে ভূমিকম্পের জেরে শিলিগুড়ি পুর এলাকার বহু বাড়িতে ফাটল দেখা দিয়েছে। প্রধাননগরে মেঘনাদ সাহা সরণিতে একটি বাড়ির ব্যালকনি ভেঙে পড়া ছাড়া ওই এলাকায় একটি বহুতলের নানা জায়গায় ফাটল ধরেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অন্তত ২২ বছরের পুরনো এসজেডিএ মার্কেট কমপ্লেক্সটি। শহরে এখনও পর্যন্ত ২২৩৮টি ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির তালিকা তৈরি করেছেন পুর কর্তৃপক্ষ। তবে বেশ কিছু বাড়ি নিয়ম না মেনে তৈরির করার জেরেই বিপজ্জনক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে পুরসভার বাস্তুকারদের একাংশ মনে করছেন। তা ছাড়া শিলিগুড়ি শহরটি ভূমিকম্পপ্রবণ।
তবে বিভিন্ন বরো অফিস থেকে সমীক্ষা চলছে। বিশেষ করে রবিবার দুই দফায় এবং সোমবার সন্ধেয় ফের ভূমিকম্পের জেরে ওই সংখ্যা আরও বাড়বে বলে মনে করছেন কর্তৃপক্ষ। তেনজিং নোরগে বাস টার্মিনাস লাগোয়া এসজেডিএ মার্কেট কমপ্লেক্সে ১২৪টি দোকান রয়েছে। অধিকাংশ দোকানের দেওয়ালে ফাটল ধরেছে। কংক্রিটের বিমের অংশেও কয়েকটি জায়গা ফাটল ধরে বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে। ভয়ে ব্যবসায়ীরা এ দিন দোকান খোলেননি।
ওই ভবনের তিন তলায় শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের দফতর রয়েছে। এ দিন দফতরের মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক আর বিমলাকে স্মারকলিপি দিয়ে দোকানের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ সংস্কারের দাবি জানান তাঁরা। সংস্কার না করা পর্যন্ত দোকান খুলতেও অনেকে ভয় পাচ্ছেন। অন্য দিকে দোকান দিনের পর দিন বন্ধ রাখতে হলে বিপাকে পড়বেন ওই সমস্ত ব্যবসায়ীরা।
সে কারণে কী করা উচিত, তা নিয়ে কথা বলতে উত্তরবঙ্গের বৃহত্তর ব্যবসায়ী সংগঠন ফেডারেশন অফ চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি, নর্থবেঙ্গল (ফোসিন)-এর সম্পাদক বিশ্বজিৎ দাস এ দিন এসজেডিএ-র সিইও-র সঙ্গে দেখা করেন। সিইও আর বিমলা বলেন, ‘‘ইঞ্জিনিয়ার দোকানগুলি পরীক্ষা করছে। কী অবস্থায় সেগুলি রয়েছে তা খতিয়ে দেখা জরুরি। এসজেডিএ-র তরফে দোকানগুলি সংস্কার করতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
যেগুলি বেশি বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে, সেগুলি বাদ দিয়ে অন্য দোকানগুলি চিহ্নিত করার জন্য এ দিন ব্যবসায়ীদের তরফে জানানো হয়। ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক গোপাল মহুরি জানান, বছর কয়েক আগে ভূমিকম্পে এই ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। তা এখনও সংস্কার হয়নি। তার পর এ বার মার্কেটের অধিকাংশ দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ব্যবসায়ীরা ভয়ে রয়েছেন।’’
পুর কমিশনার সোনম ওয়াংদি ভূটিয়া বলেন, ‘‘ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িগুলি চিহ্নিত করার প্রক্রিয়া চলছে। প্রধাননগরে একটি বাড়ির ব্যালকনি ভেঙে পড়েছিল। পুরসভার তরফে ওই অংশ ভেঙে দেওয়া হয়েছে।’’ প্রধাননগরের ভেঙে যাওয়া অংশটির নির্মাণ কাজ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন পুর কতৃর্পক্ষ। বাড়ির মালিক মমতা সরকার তা স্বীকার করে নিয়েছেন। বস্তুত পুর এলাকার বিধানমার্কেট, শেঠ শ্রীলাল মার্কেটের মতো বিভিন্ন বাজারগুলিতে বহুতলের উপরের অংশে অনেকে নকশা ছাড়াই নিমার্ণ কাজ করেছেন বলে অভিযোগ। সে কারণে ওই সমস্ত এলাকার বাসিন্দারা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখার দাবি তুলেছেন। না হলে ভবিষ্যতে তা সকলের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে বলে তাঁদের আশঙ্কা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy