Advertisement
০২ মে ২০২৪

সংস্কৃতি যেখানে যেমন...

রায়গঞ্জের সুরেন্দ্রনাথ মহাবিদ্যালয়ের পঁচিশ বছর পুর্তি উপলক্ষে দু’দিনের জাতীয় আলোচনা চক্র অনুষ্ঠিত হল। বিষয়—‘লোকসংস্কৃতির নানা দিগন্ত’। বিজনকুমার মণ্ডল, (কিউরেটর, গুরুদাস দত্ত মিউজিয়াম) ইতিহাসের প্রেক্ষিতে লোকশিল্পের নানা দিক নিয়ে আলোচনা করেন। লোকনাট্যের ঐতিহ্য উত্তরবঙ্গ বিষয়ক বক্তব্য রাখেন মালদহের অতিরিক্ত জেলা সমাহিতা অমলকান্তি রায়।

শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০১৫ ০২:১৩
Share: Save:

লোকসংস্কৃতির নানা দিগন্ত

রায়গঞ্জের সুরেন্দ্রনাথ মহাবিদ্যালয়ের পঁচিশ বছর পুর্তি উপলক্ষে দু’দিনের জাতীয় আলোচনা চক্র অনুষ্ঠিত হল। বিষয়—‘লোকসংস্কৃতির নানা দিগন্ত’। বিজনকুমার মণ্ডল, (কিউরেটর, গুরুদাস দত্ত মিউজিয়াম) ইতিহাসের প্রেক্ষিতে লোকশিল্পের নানা দিক নিয়ে আলোচনা করেন। লোকনাট্যের ঐতিহ্য উত্তরবঙ্গ বিষয়ক বক্তব্য রাখেন মালদহের অতিরিক্ত জেলা সমাহিতা অমলকান্তি রায়। অধ্যাপক বিকাশ রায়ের বক্তব্যে উঠে আসে লোকসংস্কৃতির তাত্ত্বিক চর্চার নানা দিক। দ্বিতীয় দিন উত্তরবঙ্গের লোকসংস্কৃতি ও সাংস্কৃতিক রূপান্তর নিয়ে বলেন, অধ্যাপক দীপককুমার রায়। আলোচনার বিষয় হয়ে আসে লোকমিথ বা লোকপুরাণ, উত্তরবঙ্গের লোকসংস্কৃতি চর্চার নানা দিক। অংশ নেন বাসবী মুখোপাধ্যায়, সুধাংশুকুমার সরকার। অনুষ্ঠানটির উদ্বোধক ছিলেন গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য গোপালচন্দ্র মিশ্র। উপস্থিত ছিলেন লোকসংস্কৃতিবিদ বরুণকুমার চক্রবর্তী, অধ্যক্ষ ডঃ প্রভাস রায় চৌধুরী, রাখি দাস বিশ্বাস প্রমুখ বিশিষ্টজন। পরিবেশিত হয় মালদহর ‘গম্ভীরা’ ও দিনাজপুরের ‘খন’ গান।

লেখা ও ছবি: অনিতা দত্ত।

ভাষা শহিদের স্মৃতি তর্পণ

শিলচরের ভাষা শহিদদের উদ্দেশে স্মৃতি তর্পণের আয়োজন করেছিল নিখিল ভারতবঙ্গ সাহিত্য সম্মেলন, জলপাইগুড়ি শাখা। সদস্যদের সমবেত গানে অনুষ্ঠানের সূচনা। ভাষা দিবস স্মরণ অনুষ্ঠানে শাখা সভাপতি ডঃ আনন্দগোপাল ঘোষ বলেন, শুধু আবেগে ভর করে ভাষা বাঁচে না। ভাষার চর্চা হওয়া দরকার। আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে, কর্মক্ষেত্রে মাতৃভাষার ব্যবহার আরও বেশি হওয়া উচিত। ভাষার গতিশীলতা তবেই বজায় থাকবে। শীলা দত্ত ঘটক, নিরুপম ভট্টাচার্য, তিলাঞ্জলি বন্দ্যোপাধ্যায় ও প্রীতমা সাহার একক সংগীতে উজ্জ্বল হয়ে উঠল ভাষা আন্দোলনের স্মৃতি। ১৯ মে ভাষা দিবস স্মরণে কবিতা কোলাজে অংশ নেন বর্ণিল বন্দ্যোপাধ্যায়, শুভশ্রী চৌধুরী, মঞ্জিতা সরকার। স্বরচিত কবিতা পাঠ শোনা গেল পূর্ণপ্রভা বর্মন, শান্তা চট্টোপাধ্যায় ও গোপাল ঘোষ পালচৌধুরীর কণ্ঠে। ভাষা শহিদ সংখ্যা প্রকাশ করেন সাংসদ বিজয়চন্দ্র বর্মন। উপস্থিত ছিলেন উমেশ শর্মা, নিখিল ভারতবঙ্গ সাহিত্য সম্মেলনের রাজ্য সচিব অনিল ধর, বিমলেন্দু মজুমদার-সহ বিশিষ্টজন। সমগ্র অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন অধ্যাপিকা কোয়েলা গঙ্গোপাধ্যায়।

অনুরণনের সন্ধ্যা

সম্প্রতি বালুরঘাটবাসী উপহার পেল দু’দিনের এক সঙ্গীতমুখর সন্ধ্যা। সৌজন্যে অনুরণন সাস্কৃতিক সংস্থা। কচিকাঁচাদের সমবেত পরিবেশনায় মিলে সুর মেরা তুমহারা ছিল অনুষ্ঠানের উদ্বোধনের সুরটি। রচয়িতা মণ্ডলের ‘বৌ কথা কও’, দীপ ছিল শিখা ছিল শতব্রত দাশগুপ্ত, সংযুক্তা জানার ‘ছন্দে ছন্দে গানে গানে’, দেবর্ষি সাহার ‘আজ শ্রাবণের বাতাস বুকে’, দেবারতি মণ্ডলের কণ্ঠে ‘ও তুই নয়ন পাখি’ বহুশ্রুত গানগুলি মন ছুঁয়ে যায়। শিল্পীদের মধ্যে ছিলেন মালবী গোস্বামী, প্রান্তিক রায়। বারো জন শিক্ষার্থীর কণ্ঠে পূরবী রাগের ওপর ভোকাল সিম্ফনি শ্রোতাদের অন্য স্বাদ এনে দেয়। দ্বিতীয় দিন একক আধুনিক গান পরিবেশন করেন তিয়াসি সিংহ, সাম্বনীল মণ্ডল প্রমুখ। সংযুক্তা জানা ও রাজর্ষি গোস্বামীর যৌথ নিবেদন ‘মেরে ঢোলনা’ ছিল মনে রাখার মতো। দ্বিতীয় দিন উৎসবের সূচনা হয় ৩৫ জন ছেলেমেয়ের সমবেত কণ্ঠের (ইতনি শক্তি হামে দেনা দাতা) মধ্যে দিয়ে। দু’দিনের এই অনুষ্ঠানে শিল্পীদের বাদ্যযন্ত্রে সহযোগিতা করেছেন দেবাশীষ খাঁ, মানব বিশ্বাস, পুরঞ্জয় দাস, অনিন্দ্য দত্ত, তাপস দাস, কৃষ্ণেন্দু সাহা, বিশ্বজিৎ দাস ও সঞ্জীব দাস।

পথনাটক

পথনাটকের কর্মশালার আয়োজন করেছিল চাইল্ড ইন নিড ইনস্টিটিউটের শিলিগুড়ি শাখা। পিছিয়ে পড়া জনজাতির প্রায় ৫০ জন শিশু অংশ নিল কর্মশালায়। নিজেদের লেখা চিত্রনাট্যে, নাটকের মহড়া দিল তারা। উদ্দেশ্য বিভিন্ন সামাজিক অন্যায়ের প্রতিবাদ এবং নিজেদের অধিকার সুনিশ্চিত করা। ১২ জুন, বিশ্ব শিশু শ্রম বিরোধী দিবসে তাদের পথনাটক দেখা যাবে শিলিগুড়ির বিভিন্ন অঞ্চলে।

‘ছোটোদের কবিতা’ প্রকাশ

সুরশ্রী মহাবিদ্যালয়ের উদ্যোগে কোচবিহারের জামালদহে এস এইচ জি কমিউনিটি হলে সম্প্রতি প্রকাশিত হল কবিরত্ন শ্যামাপদ বমর্নের ‘ছোটদের কবিতা‌’। গ্রন্থটির আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করেন ডঃ আনন্দগোপাল ঘোষ। গ্রন্থপ্রকাশ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কবি পুণ্যশ্লোক দাশগুপ্ত, সন্তোষ সিংহ, প্রাবন্ধিক জিতেন্দ্রনাথ বর্মন, রজতলাল নিয়োগি, পরেশচন্দ্র রায় প্রমুখ বিশিষ্টজন। বইটিতে শিশু-উপযোগী মোট একচল্লিশটি কবিতা রয়েছে। কিছু কবিতার বিষয়বস্তুর মধ্যে ফুটে উঠেছে নীতিকথাও। গ্রন্থটির আরেকটি বিশেষত্ব হল, এর অলংকরণ ও প্রচ্ছদ প্রস্তুত করেছেন কবি নিজেই।

জরুরি নয়

দ্রোহজ কবিতা নিজেকে প্রশ্ন করে, ‘আমি সীমা টপকাই নাকি সীমারেখা আমাকে’? সীমারেখার এপার-ওপার, গদ্য-কবিতার ব্যবধান ক্রমশ মুছে ফেলে শব্দ, ‘নিরাসক্তি গড়িয়ে নামছে ভয়ানক শূন্যতা ছুঁয়ে। গোলাপি বালিকার হাতে বেঁধানো সূঁচ, চ্যানেল, লিউকোপ্লাস্ট আর উড়ন্ত বেলুন’। শব্দ এবং শব্দে জাত।

কবিতার ‘‘মাঝখানে স্পর্শবিন্দু নেই/অথচ স্পর্শক। সে জানে/মরে যাওয়া মানে ঠিক/কতখানি বেঁচে ওঠা থাকে’’। তার নিঃশব্দ শব্দে ‘লিখিত হচ্ছে এপিটাফের বয়ান, মেমোরিয়াম পর্ব’। শব্দ থেকে শব্দ, ক্রমে বাক্যে দ্রোহজের অনায়াস উড়ান! অথচ, স্রষ্টা উদাসীন অবহেলায় উচ্চারণ করেন, ‘তেমন জরুরি কিছু নয়’। জন্ম হয় একটি কাব্যগ্রন্থের। অনিন্দিতা গুপ্তরায়ের সঙ্গে সেও বলে ‘তেমন জরুরি কিছু নয়’। লেখা ও ছবি : সুদীপ দত্ত।

জলপিপি

‘‘সবচেয়ে গভীর সুন্দর কথাগুলো’’ পাঠকের কাছে পৌঁছে দেয় কবিতা। ‘‘গভীর কথা’’য় ‘‘জ্যোৎস্নারাত/আলোকিত অন্ধকার ছেড়ে/পরিযায়ী হয়।’’ সেই কথারা, ‘‘খুঁজে ফিরছিল/আগুনরঙা ফ্রকটাকে।’’কথার বুননে ‘‘সর্ষের ক্ষেত্র.....লাল রোদ্দুর—নষ্ট প্রেমের নক্সীকাঁথা’’য় আঁকা থাকে ভালবাসার ভুল গল্প। গভীর থেকে গভীরে গতিশীল এমন অজস্র কথা শোনাবে ‘‘জলপিপি’’। ‘‘শুধু কবিতায় কিছুক্ষণ’’ মগ্ন থাকতে চাইলে পড়া যেতেই পারে বিবেক কবিরাজ সম্পাদিত সংকলনটি। শিলিগুড়ির পত্রিকাটির মুখ্য আকর্ষণ কি শুধুই কবিতা? মোটেই না। কবিদের নিজে হাতে লেখা কবিতা পাঠ করার আলাদা অনুভূতিও উপহার দেবে ‘‘জলপিপি’’ ।

নাট্যশিল্পীর স্মরণসভা

নাটকের দুনিয়া ছেড়ে চলে গেলেন শিলিগুড়ির প্রবীণ অভিনেতা ও নাট্য সংগঠক প্রদীপ লাহিড়ী। বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর। নাট্যজগতে বিশু নামে পরিচিত অভিনেতা চার দশকের বেশি সময় ধরে নাট্যমঞ্চের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি কিডনির অসুখে ভূগছিলেন। নাট্যজীবনের প্রথম পর্বে ‘কর্ণিক ’ নাট্য সংস্থায় মামলার ফল সহ অনেক জনপ্রিয় নাটকে অভিনয় করেন। বিভিন্ন সময়ে ‘উত্তাল’ নাট্য সংস্থার সম্পাদক ও সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে কলকাতার রবীন্দ্র সদনে শেষ মঞ্চাভিনয়ে। উত্তালের উদ্যোগে আগামী ৩০ মে, শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৫টায় উদয়ন মেমোরিয়াল লাইব্রেরি হলে তাঁর স্মরণসভা হবে।

ইসলামপুরে নজরুল জয়ন্তী

কাজি নজরুল ইসলামের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে উত্তরবঙ্গ শিশু-কিশোর পরিষদ নামে একটি সাহিত্য সংস্থার উদ্যোগে দিনভর অনুষ্ঠান হল ইসলামপুরে। গত ২৬ মে ইসলামপুরের টাউন লাইব্রেরি হলে সেই অনুষ্ঠান হয়। এদিন সকাল ১০টায় ইসলামপুরের টাউন লাইব্রেরি হলে রঙ ভর প্রতিযোগিতার মধ্যে দিয়েই শুরু হয় অনুষ্ঠান। সেখানে অংশ নিয়েছিল কচিকাচারা। বিকেল ৫ টায় ইসলামপুরের টাউন লাইব্রেরিতেই বসে সাহিত্য আড্ডার আসর। সেখানে অংশ নিয়েছিলেন এলাকার কবি-সাহিত্যকেরা। সন্ধ্যা ৭ টায় শুরু হয় সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার আসর। অনুষ্ঠান সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন সুদীপ্ত ভৌমিক ও সুশান্ত নন্দী। তবে অনুষ্ঠানের বিশেষ আকর্ষণ ছিল কবিতা কোলাজ। তা পরিবেশন করেন, মিমো ধর, সুদীপ্ত ভৌমিক, সুশান্ত নন্দী, শ্রেয়া দাশগুপ্ত, অঙ্কিতা হালদাররা।

নৃত্য মালঞ্চ

তিন দিনের জমজমাট অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে শিলিগুড়ির ‘নৃত্য মালঞ্চ’। সংস্থার অন্যতম কর্ণধার সঙ্গীতা চাকির উদ্যোগে আগামী ২৯ মে থেকে ৩১ মে পর্যন্ত ধারাবাহিক অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন স্থানীয় ও বহিরাগত শিল্পীরা। ১৯৮৪ সালের ৩০ অক্টোবর সংস্থাটি পথ চলা শুরু করে শিলিগুড়িতে। এখন শিলিগুড়ি সহ গোটা উত্তরবঙ্গে তো বটেই, রাজ্যেও সঙ্গীতাদেবী ও তাঁর ছাত্রছাত্রীরা প্রতিষ্ঠিত। আগামী ৩০ মে-এর অনুষ্ঠানে কত্থক নৃত্য পরিবেশ করবেন পন্ডিত বিরজু মহারাজের কন্যা শ্রীমতী মমতা মহারাজ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

cultural news library drama poem
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE