Advertisement
E-Paper

ঘরে পুজো করে রুপোর পদক পেলেন সঙ্কীত

কোনও শব্দ পৌঁছায় না তার কাছে। সে নিজেও ভাষাহীন। বাইরের সঙ্গে তার যোগাযোগ শুধু দৃষ্টিতে। আর সেই দেখার অনুভূতি থেকেই নিছক খেয়ালের বশে দশভূজার প্রতিমা গড়েছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০১৬ ০১:১৭
পুরস্কার নিচ্ছে সঙ্কীত। —নিজস্ব চিত্র।

পুরস্কার নিচ্ছে সঙ্কীত। —নিজস্ব চিত্র।

কোনও শব্দ পৌঁছায় না তার কাছে। সে নিজেও ভাষাহীন। বাইরের সঙ্গে তার যোগাযোগ শুধু দৃষ্টিতে। আর সেই দেখার অনুভূতি থেকেই নিছক খেয়ালের বশে দশভূজার প্রতিমা গড়েছিল। পুজোও করেছিল। তার হাতে গড়া ওই প্রতিমাই রুপোর পদক এনে দিয়েছে তাকে। এনে দিয়েছে আর্থিক পুরস্কারও। দেবী প্রতিমার পাশাপাশি মালদহের চাঁচলের বগচরার বছর তেরোর মূক ও বধির ওই কিশোরের করা মণ্ডপ ও আলোকসজ্জাও নজর কেড়েছে দর্শনার্থীদের। পুজো পরিক্রমায় বেরিয়ে চাঁচলের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা প্রতিবন্ধী ওই কিশোরের দেবী প্রতিমা দেখে মুগ্ধ হয়ে তাকে পুরস্কৃত করে।

জন্ম থেকেই মূক সংকীত দাস। পরে চিকিত্সা করাতে গিয়ে ধরা পড়ে সে বধিরও। কানের দু’টি গুরুত্বপূর্ণ স্নায়ু শুকিয়ে যাওয়ায় আর কোনওদিন সে কানে শুনতে পাবে না বলেও চিকিত্সকরা জানিয়ে দিয়েছেন। দেরি করে পড়াশুনা শুরু করায় এখন হরিশ্চন্দ্রপুরের পিপলা মূক ও বধির স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে সংকীত। তাঁর বাবা যোগেন দাস পেশায় দিনমজুর। মা সঙ্গীতাদেবী একটি বিউটি পার্লারে কাজ করে সামান্য আয় করেন। দুই ছেলের মধ্যে বড় সংকীত। অভাবের সংসার, তাই বাপের বাড়িতেই বেশীরভাগ সময় থাকেন সঙ্গীতাদেবী। সেখানেই ওই প্রতিমা গড়ে পুজো করেছে সংকীত। সঙ্গীতাদেবী বলেন, ‘‘তেমন বন্ধুবান্ধব নেই ওর। প্রায় একা একাই নিজের মতো করে সময় কাটায়। একটু বড় হতেই মাটি যোগাড় করে দেবদেবীর প্রতিমা গড়ত। এ বার প্রতিমা তৈরির পর জানায় পুজোও করবে। প্রথমে আপত্তি করেছিলাম। কিন্তু কষ্ট পাবে ভেবে সাধ্যমতো যোগাড় করে দিই।’’ প্রতিমা তৈরির পর নিজের মতো করে আলো ও কাপড় দিয়ে ঘর সাজিয়েছিল সংকীত। অনাড়ম্বর ভাবে পুজোও হয়।

ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তরফে প্রতি বছরই চাঁচলের পুজো উদ্যোক্তাদের পুরস্কৃত করা হয়। এবার পরিক্রমায় বেরিয়ে সঙ্কীতের গড়া প্রতিমার কথা জানতে পেরে সেখানে হাজির হয়ে মুগ্ধ হয়ে যান তাঁরা। সেখানেই তার গলায় রুপোর পদক ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। তুলে দেওয়া হয় নগদ অর্থ, পদক, স্কুল ব্যাগ সহ নানা সামগ্রী। সে সব পেয়ে যে সংকীত ভীষণ খুশি তা আকারইঙ্গিতে বুঝিয়ে দেয় সে। আর স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্তা কমলকৃষ্ণ দাস বলেন, ‘‘এবার পুজো পরিক্রমায় বেরিয়ে এক বিরল অভি়জ্ঞতা হল। ওর কাজ দেখে আমরা অভিভূত।’’

Deaf and dumb student Award
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy