Advertisement
০৮ মে ২০২৪

ফের জ্বরে মৃত্যু, ডেঙ্গি নিয়ে উদ্বিগ্ন বিধায়ক

ফের জ্বরে আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু হল বালুরঘাট হাসপাতালে। শনিবার রাতে মৃত্যু হয় বালুরঘাটের গোপালবাটি এলাকার বাসিন্দা সুনীল মার্ডির(৪৩)। প্রচন্ড জ্বর নিয়ে সুনীলবাবু গত বৃহস্পতিবার ভর্তি হয়েছিলেন। এই নিয়ে গত আট দিনে বালুরঘাটে ডেঙ্গি ও জ্বরে মোট ৯ জনের মৃত্যু হল।

বাসিন্দাদের ব্লিচিং পাউডার দেওয়া হচ্ছে। — নিজস্ব চিত্র

বাসিন্দাদের ব্লিচিং পাউডার দেওয়া হচ্ছে। — নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বালুরঘাট শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০১৬ ০২:০৫
Share: Save:

ফের জ্বরে আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু হল বালুরঘাট হাসপাতালে। শনিবার রাতে মৃত্যু হয় বালুরঘাটের গোপালবাটি এলাকার বাসিন্দা সুনীল মার্ডির(৪৩)। প্রচন্ড জ্বর নিয়ে সুনীলবাবু গত বৃহস্পতিবার ভর্তি হয়েছিলেন। এই নিয়ে গত আট দিনে বালুরঘাটে ডেঙ্গি ও জ্বরে মোট ৯ জনের মৃত্যু হল।

এই ঘটনায় উদ্বিগ্ন বালুরঘাটের বিধায়ক বিশ্বনাথ চৌধুরী ডেঙ্গি প্রতিরোধে সর্বদল বৈঠকের দাবি করেছেন। রবিবার দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাশাসক সঞ্জয় বসুকে টেলিফোন করে বালুরঘাট ও হিলি এলাকায় ডেঙ্গি প্রতিরোধে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য উদ্যোগ নিতে বলেন। পাশাপাশি সমস্ত রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিকে নিয়ে সর্বদল বৈঠক ডাকারও দাবি করেন। বিশ্বনাথবাবু অভিযোগ করেন, ‘‘ডেঙ্গি ও অজানা জ্বরে রোজ রোগী মৃত্যু হলেও প্রশাসনিক ও পঞ্চায়েত স্তরে রোগ প্রতিরোধে উদ্যোগ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। সেকারণে জেলাশাসককে সর্বদল বৈঠক ডাকতে বলেছি।’’

এ দিন অবশ্য মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে পথে নামেন জেলাশাসক সঞ্জয় বসু এবং পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়। চকভৃগু এলাকায় রাস্তায় নেমে মশা মারার তেল ছড়িয়েছেন তাঁরা। জেলাশাসকের দাবি রোগ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সব জায়গায় প্রচার অভিযান বাড়াতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বাম বিধায়ক বিশ্বনাথবাবু বলেন, ‘‘হাসপাতালের সঙ্গে যৌথভাবে মালদহের একটি বেসরকারি রোগনির্ণয় সংস্থা কাজ করছে। পিপিপি মডেলে ডেঙ্গির রক্ত পরীক্ষা থেকে সঠিক সময়ে প্লেটলেট দেওয়ার বন্দোবস্ত করে রোগীদের সহায়তার কাজে যুক্ত থাকার কথা তাদের। অথচ গ্রাম থেকে আসা ডেঙ্গিতে আক্রান্ত রোগীর আত্মীয়রা তাদের কাছ থেকে সঠিক কোনও তথ্য এবং সাহায্য পাচ্ছেন না।’’ পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন বিশ্বনাথবাবু এ দিন দুপুরে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুকুমার দের সঙ্গে কথা বলে হাসপাতালের বহির্বিভাগ এবং অন্তর্বিভাগে চিকিৎসা করাতে আসা জ্বরের রোগী ও আত্মীয়দের সঠিক তথ্য দিয়ে সহায়তার দাবি জানিয়েছেন।

বাম বিধায়কের অভিযোগ, হাসপাতালে এক শ্রেণীর দালাল চক্রের সক্রিয়তায় সাধারণ রোগীরা চিকিৎসা পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। অনেকক্ষেত্রে আবার সচেতনতার অভাবে জ্বর হলেও প্রথমে গুরুত্ব না দিয়ে বাড়াবাড়ি হওয়ার পর তারা হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। তখন আর কিছুই করার থাকছে না। গ্রামীণ এলাকাগুলিতেই সচেতনতার অভাবে অজানা জ্বরে পর পর রোগী মারা যাচ্ছেন। সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতগুলিকে এ বিষয়ে কোনও ভূমিকা নিতে দেখা যাচ্ছেনা বলে স্বাস্থ্য দফতর থেকেও অভিযোগ তোলা হয়েছে।

জেলাশাসক সঞ্জয় বসু উদ্ভুত পরিস্থিতি নিয়ে বলেন, ‘‘হাসপাতালে ফিভার ক্লিনিক চালু করে রোগ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা হয়েছে। শহরে আরও একটি ফিভার ক্লিনিক চালুর বিষয় নিয়ে মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিকের সঙ্গে কথা হয়েছে। পঞ্চায়েতগুলি যাতে রোগ প্রতিরোধে অভিযান চালায় তার জন্য বিডিওদের বলা হয়েছে। এ দিন বালুরঘাট হাসাপাতালে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে রোগী ভর্তির হার কিছুটা কমলেও ডেঙ্গি পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। ডেঙ্গির প্রাথমিক সংক্রমণ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ৫০ জনের বেশি। ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৮ জন। জ্বরে মৃত্যুও অব্যাহত। রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট ও সঠিক চিকিৎসার অভাবে জ্বরে আক্রান্তদের মৃত্যু ঠেকানো যাচ্ছেনা বলে অভিযোগ উঠেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dengue fever
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE