Advertisement
E-Paper

আক্রান্তদেরও মশারি নেই হাসপাতালে

মালদহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত রোগীদের আর পাঁচটা সাধারণ রোগীদের সঙ্গে একই ওয়ার্ডে রাখা হচ্ছে। একই বেডে দু’জন করে রোগী রাখা হচ্ছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০১৬ ০২:২৭

মালদহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত রোগীদের আর পাঁচটা সাধারণ রোগীদের সঙ্গে একই ওয়ার্ডে রাখা হচ্ছে। একই বেডে দু’জন করে রোগী রাখা হচ্ছে। এর মধ্যে একজন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত তো অপর জন পেটে ব্যথার রোগী। উপরন্তু, ডেঙ্গিতে আক্রান্ত রোগীদের মশারির মধ্যে রেখে চিকিৎসার কথা থাকলেও মেল বা ফিমেল মেডিকেলের কোনও ওয়ার্ডেই মশারি টাঙানোর কোনও বালাই নেই। ফলে, ডেঙ্গির সংক্রমণ অন্য রোগীদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই ডেঙ্গিতে আক্রান্ত নয়, এমন চিকিৎসাধীন রোগী ও তাদের পরিবার-পরিজনদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়েছে। অভিযোগ, হাসপাতালে একাধিক ফাঁকা ঘর তালাবন্দি হয়ে পড়ে থাকলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সেখানে ডেঙ্গির জন্য আলাদা ওয়ার্ড চালু করছে না। বৃহস্পতিবার হাসপাতালে পরিদর্শনে গিয়ে একাধিক ঘর ফাঁকা ও অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে থাকায় প্রশ্নও তোলেন মালদহের অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) আর বিমলা। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, আগে ঘরের অপ্রতুলতার কথা বললেও, এখন জিডিএ ও সাফাই কর্মীর সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় কম থাকার দোহাই দিচ্ছে।

মালদহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রায় প্রতিদিনই ৩০-৩৫ জন রোগী জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হচ্ছেন। মালদহ জেলার পাশাপাশি পাশের দুই দিনাজপুর জেলার রোগীরাও ভরতি হচ্ছে। এদের মধ্যে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত রোগীরাও রয়েছে. ফলে জ্বরে আক্রান্ত রোগী ও অন্য রোগীদের ভিড়ে এই হাসপাতালের মেড ও ফিমেল মেডিকেল ওয়ার্ডে এখন ঠাঁই নেই অবস্থা। বেডগুলিতে কমপক্ষে দুজন করে তো রয়েছেনই, উপরন্তু মেঝেতেও বেড পেতে রোগী রাখা হচ্ছে। পরিস্থিতি এমন যে, মেঝেতে পাতা বেডেও দু’জন করে রোগী রয়েছে। এ ছাড়া ওয়ার্ডের বাইরের প্যাসেজেও রোগী রেখে চিকিৎসা চলছে। এদিকে হাসপাতাল সূত্রেই জানা গিয়েছে, শুক্রবার মেল ও ফিমেল মেডিকেল ওয়ার্ডে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত মোট ২৫ জন রোগী রয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাতে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুরের এক বাসিন্দা জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারাও গিয়েছেন। তিনি ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন বলে এলাকাবাসীর দাবি। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ওই রোগীর রক্তের ম্যাকএলাইজা পরীক্ষাই করা হয়নি। ফলে তাঁর যে ডেঙ্গি ছিল তার কোনও প্রমাণ নেই।

এ দিকে এই হাসপাতালে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত রোগীদের সঙ্গে অন্য রোগে আক্রান্ত রোগীদের রাখা নিয়ে ক্ষোভ ছড়িয়েছে। এদিন জালালপুরের বাসিন্দা আনোয়ারা বিবি অভিযোগ করেন, ‘‘আমার স্বামী পেটের ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তিনি যে বেডে রয়েছেন, সেই বেডেই এক ডেঙ্গিতে আক্রান্ত রোগী চিকিৎসাধীন। আমরা সংক্রমণের আশঙ্কায় আতঙ্কিত। মশারি থাকলেও এক বেডে দু’জন রোগী থাকায় ও স্যালাইন চলায় তা টাঙানোও যাচ্ছে না। একই অভিযোগ অনেক রোগীর পরিজনদেরও। তাদের দাবি, ডেঙ্গিতে আক্রান্ত রোগীদের জন্য আলাদা ওয়ার্ড খোলা হোক। জানা গিয়েছে, হাসপাতালে আগে যে ঘরগুলিতে এক্সরে, আল্ট্রা সোনোগ্রাফি হত এবং প্যাথলজি চলত সেগুলি পুরো ফাঁকা। সেখানেই ডেঙ্গির জন্য ওয়ার্ড খোলাই যায়। কিন্তু কর্তৃপক্ষ উদাসীন বলে অভিযোগ। হাসপাতালের সুপার অমিত দাঁ অবশ্য বলেন, হাসপাতালে এই মুহূর্তে চিকিৎসক ও নার্সের সংখ্যা ঠিকঠিক থাকলেও জিডিএ ১১৫ জন ও সাফাই কর্মী ৭২ জন প্রয়োজনের তুলনায় কম রয়েছে। ফলে নতুন করে কোনও ওয়ার্ড চালু করতে গেলে সেখানে পরিষেবা দেওয়াই মুশকিল হয়ে পড়বে। হাসপাতালের রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান জেলাশাসক শরদ দ্বিবেদী বলেন, বিষয়টি নিয়ে ৭ তারিখ রোগীকল্যাণ সমিতির বৈঠকে আলোচনা হবে।

Dengue
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy