Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪

ডার্বি ভোলাল রাজনীতির রং

উইলিস প্লাজা-র পা থেকে বলটা তির বেগে ছুটে যেতেই মুষ্ঠিবদ্ধ করলেন মন্ত্রী। আশেপাশের আসনে থাকা কয়েকজন দর্শক চেয়ার ছেড়ে উত্তেজনায় উঠে দাঁড়িয়েছেন।

ম্যাচ দেখলেন রাজনীতিকেরাও। মন্ত্রী গৌতম দেব, কংগ্রেসের বিধায়ক শঙ্কর মালাকার এবং সিপিএমের সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়।

ম্যাচ দেখলেন রাজনীতিকেরাও। মন্ত্রী গৌতম দেব, কংগ্রেসের বিধায়ক শঙ্কর মালাকার এবং সিপিএমের সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়।

অনির্বাণ রায়
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০২:৪৮
Share: Save:

উইলিস প্লাজা-র পা থেকে বলটা তির বেগে ছুটে যেতেই মুষ্ঠিবদ্ধ করলেন মন্ত্রী। আশেপাশের আসনে থাকা কয়েকজন দর্শক চেয়ার ছেড়ে উত্তেজনায় উঠে দাঁড়িয়েছেন। হাত মুঠো করে বা পায়ের ওপর ডান পা তুলে দিয়ে কোনভাবে উত্তেজনা সামলে নিলেন মন্ত্রী। কাতসুমি বল নিয়ে লাল-হলুদের পেনাল্টিবক্সে ঢুকে পড়েছে দেখে তো শিশুর মতো দু-হাত মাথার ওপরে তুলে ফেলেছিলেন সাংসদ। বেশ কয়েকবার তো গোল-গোল বলে চেঁচিয়েই উঠলেন বিধায়ক। এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত কালো মাথায় ঢাকা কাঞ্চনজঙ্গা স্টেডিয়াম থেকে রবিবার বিকেলে শব্দস্রোত তরঙ্গে ছড়িয়ে দিচ্ছিল শিলিগুড়ি শহরে। হাজার হাজার ফুটবল সমর্থকদের চিৎকার, ভুভুজেলা বাঁশি-ড্রাম পেটানোর শব্দ, ছন্দ মিলিয়ে হাততালিতে উত্তেজনা ছিল তুঙ্গে। সেই উত্তেজনায় কখনও গা ভাসিয়ে দিলেন কখনও বা আশেপাশে দেখে নিজেকে সামলে নিলেন ভিভিআইপিরা।

ম্যাচ শুরুর আধঘণ্টারও বেশি আগে কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে চলে এসেছিলেন রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব। ছোটবেলা থেকেই ইস্টবেঙ্গল সমর্থক তিনি। কাঞ্চনজঙ্গা স্টেডিয়াম ইস্টবেঙ্গলের ‘ঘরের মাঠ’। নিজের শহরে নিজের ক্লাবের খেলা দেখার সুযোগ ছাড়তে রাজি নন। তাই গত শনিবারই শিলিগুড়িতে ফেরেন তিনি। ম্যাচের কিক-অফ থেকে দেখতে চেয়েছিলেন বলে শুরুর আগেই হাজির হয়েছিল। মন্ত্রী স্টেডিয়ামে থাকায় তাঁকে দিয়েই ম্যাচের সূচনা করানো হয়। দু’দলের খেলোয়াড়দের সঙ্গে পরিচিত হয়ে আসার পরে স্টেডিয়ামের ভিআইপি বক্সে এসে বসেন। তারপর কখনও উত্তেজনা সামলাতে কখনও দাঁত দিয়ে নখ কেটেছেন কখনও হাত মুঠো করে চেয়ারের হাতলে কিল মেরেছেন। মেহেতাব হোসেনকে বল পায়ে নিয়ে দৌড়তে দেখে উত্তেজনায় হাতে থাকা বাদামও ফেলে দিয়েছেন। হাফ টাইমে মন্ত্রীর মুখ থমথমে-গম্ভীর। পরিচিতরা কথা বলতে এগিয়ে এলে একটু হেসেও বারবার গম্ভীর হয়ে যাচ্ছিলেন। তার কারণ নিজেই খোলসা করলেন, বললেন, ‘‘খেলাটা জমছে না। আরও আক্রমনাত্মক হওয়া উচিত। এ ভাবে হবে না।’’ নিজের দলের খেলা পছন্দ না হওয়ায় উদ্বেগ লুকোতে পারছিলেন না।

ভিআইপি বক্সে তিন ছেলে-মেয়েকে নিয়ে ছিলেন ভাইচুং ভূটিয়াও। প্রাক্তন ভারতীয় দলের অধিনায়ক ভাইচুং এখনও ইস্টবেঙ্গলের ঘরের ছেলে। লালহলুদের আক্রমণ দেখে ভাইচুং স্টেডিয়ামের গর্জনের সঙ্গে গলা মিলিয়েছেন। ভাইচুঙের ছোট্ট ছেলে জল খাবে বলে বাইরে যাওয়ার বায়না করেছিল। সে সময় মেহেতাব সবুজ-মেরুনের গোলের প্রায় কাছাকাছি। উত্তজেনা চেপে রাখতে না পেরে ভাইচুং ছেলেকে বলেছেন, ‘‘পিপাসা একটু চেপে রাখ, প্লিজ।’’ শুধুমাত্র খেলা দেখার জন্যই শিলিগুড়িতে এসেছিলেন সিপিএমের রাজ্য সভার সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি অবশ্য মোহনবাগান সমর্থক। গালে সবুজ-মেরুন রং আঁকা কাউকে দেখলেই হাত নেড়েছেন ঋতব্রত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

political Issues Derby Match
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE