Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ধোঁয়া দেখে ফের আতঙ্ক দিনবাজারে

ধ্বংস স্তুপ থেকে কুণ্ডুলি পাকানো ধোঁয়ার সঙ্গে আগুনের শিখা দেখা দিতে শনিবার ফের আতঙ্কে ছড়াল দিনবাজারে। ছুটে আসে দমকলের ইঞ্জিন। আসে পুলিশও। পথচারীদের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে চব্বিশ ঘণ্টা পরে আবার জল ছড়িয়ে আগুন নেভান হয়। যদিও দমকলের বক্তব্য, বড় আগুন নেভানোর পরে চাপা পরে থাকা অংশ থেকে ধোঁয়া দেখা দিতে পারে। দফতরের তরফে অগ্নিকাণ্ডের রিপোর্ট শুক্রবার রাতে জেলা প্রশাসনের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ১০ মে ২০১৫ ০১:২৯
Share: Save:

ধ্বংস স্তুপ থেকে কুণ্ডুলি পাকানো ধোঁয়ার সঙ্গে আগুনের শিখা দেখা দিতে শনিবার ফের আতঙ্কে ছড়াল দিনবাজারে। ছুটে আসে দমকলের ইঞ্জিন। আসে পুলিশও। পথচারীদের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে চব্বিশ ঘণ্টা পরে আবার জল ছড়িয়ে আগুন নেভান হয়। যদিও দমকলের বক্তব্য, বড় আগুন নেভানোর পরে চাপা পরে থাকা অংশ থেকে ধোঁয়া দেখা দিতে পারে। দফতরের তরফে অগ্নিকাণ্ডের রিপোর্ট শুক্রবার রাতে জেলা প্রশাসনের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১৮৭৮ সালে তৈরি দিনবাজার টিন শেড চত্বর পুড়ে ছাই হয়ে যায়। শুক্রবার বেলা ১১টা পর্যন্ত লড়াই করে বারোটি ইঞ্জিন আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। শনিবার সকালে ফের ধ্বংস স্তুপ থেকে প্রথমে গলগল করে কালো ধোঁয়া পরে আগুনের শিখা বার হতে দেখে হইচই শুরু হয়। আতঙ্কিত ব্যবসায়ীরা পড়িমরি দৌড়ে পালাতে থাকেন। খবর দেওয়া হয় দমকলে। একটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পোঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। দমকলের জলপাইগুড়ি বিভাগীয় আধিকারিক সনৎ মণ্ডল বলেন, “ভস্মীভূত টিন শেড এলাকায় চাপা পরে থাকা কোন কিছু থেকে ধোঁয়া দেখা দেওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। আতঙ্কিত মানুষজন সেটাকেই আগুন ভেবে দিশাহারা হচ্ছেন। ওখানে আগুন ছিল না।” বৃহস্পতিবার রাতের অগ্নিকাণ্ডে আতসবাজির শব্দে দিনবাজার কেঁপে উঠতেই এখানে বেআইনি বাজির কারবারের অভিযোগ ওঠে। ব্যবসায়ীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, টিন শেডে অন্তত সাতটি বাজির গুদাম ছিল। বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, বেআইনি ভাবে প্রচুর বাজি মজুত করা ছিল ওই সমস্ত গুদামে। তাই আগুন দ্রুত ভয়াবহ আকার নেয়। যদিও দমকল সূত্রে জানা গিয়েছে, এখানে বেআইনি বাজি কারবারের প্রমাণ মেলেনি। জেলা প্রশাসনের কাছে পেশ করা রিপোর্টে বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। দমকলের এক কর্তা জানান, বাজির ব্যবসায়ীদের প্রত্যেকের লাইসেন্স রয়েছে। কিন্তু কত আতসবাজি মজুত করা হয়েছিল তা তাঁরা জানাতে পারেননি।

শনিবার বিকেল নাগাদ জেলাশাসক পৃথা সরকার দিনবাজারে যান। সেখানকার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি জানান, সাহায্যের জন্য দুঃস্থ ব্যসায়ীদের নামের তালিকা চাওয়া হয়েছে। এদিন দিনবাজার কল্যাণ সমিতির কর্তারা টিন শেড এলাকার ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীদের নিয়ে আলোচনায় বসেন। ঠিক হয়েছে ভস্মীভূত এলাকায় নতুন পরিকাঠামো তৈরির কাজ দ্রুত শুরু করার জন্য প্রশাসনের কর্তাদের কাছে সোমবার আবেদন জানানো হবে। শুক্রবার সার্কিট হাউসে ব্যবসায়ী সমিতি এবং প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে আলোচনার পরে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব জানান, রাজ্য সরকারের তরফে বাজারের পরিকাঠামো তৈরির জন্য পুরসভাকে সাহায্য করা হবে। কিন্তু তার আগে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে ব্যবসায়ীদের ঠিক করতে হবে তাঁরা কী চান। ওই পরিপ্রেক্ষিতে এ দিন আলোচনার পরে দিনবাজার কল্যাণ সমিতির সম্পাদক দেবু চৌধুরী বলেন, “আমরা চাই দ্রুত পরিকাঠামো তৈরি করা হোক। তবে যে সমস্ত ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীদের সামর্থ নেই তাঁদের নিখরচায় স্টল বিলির আবেদন জানানো হবে।” ক্ষতিগ্রস্ত দুঃস্থ ব্যবসায়ীদের নিজেদের দোকানের একাংশ ছেড়ে দিয়ে কিছুদিনের জন্য ব্যবসার ব্যবস্থা করে দিতে উদ্যোগী হয়েছে সমিতি। পাশাপাশি তাঁদের আর্থিক সাহায্যের জন্য ১ লক্ষ ২৪ হাজার টাকা সংগ্রহ করেছে। দেবুবাবু বলেন, “৫০ জন দুঃস্থ ব্যবসায়ী আছে। তাঁদের তালিকা তৈরি করে প্রশাসনের হাতে তুলে দেওয়া হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

dinbazar smoke fire jalpaiguri fire brigade
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE