জলের জন্য এমনই লাইন দিতে হয় ৮ নম্বর ওয়ার্ডে। —নিজস্ব চিত্র।
গরমে জলস্তর নেমে যাওয়ার পাশাপাশি একাধিক পাম্প বিকল হয়ে যাওয়ায় কোচবিহার শহরের পানীয় জলের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। ক্ষুব্ধ বাসিন্দাদের অভিযোগ, শহরের বিস্তীর্ণ এলাকায় ঠিকভাবে মিলছে না পানীয় জল।
যেসব এলাকায় জল আসছে সেখানেও চাপ কম। ফলে এক বালতি জল ভর্তি করতেই প্রায় আধ ঘণ্টা সময় লাগছে। এই পরিস্থিতিতে বাধ্য হয়েই পানীয় জল কিনে খেতে বাধ্য হচ্ছেন বাসিন্দারা। পুরসভার তরফে সমস্যা মেটানোর ব্যাপারে তেমন গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছেনা। কোচবিহার পুরসভার চেয়ারপার্সন রেবা কুণ্ডু বলেন, “গরমে জলস্তর নেমে যাওয়াতেই মূলত পানীয় জল সরবরাহে কিছু এলাকায় সমস্যা তৈরি হয়েছে। পরিস্থিতি সামলাতে জলের ট্যাঙ্ক পাঠিয়ে ওই সব এলাকায় পানীয় জল সরবরাহ করা হচ্ছে। বিকল্প পাম্প হাউস মেরামত করা ছাড়াও পরিকাঠামো উন্নয়নেও পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ২০১৬ সালের মধ্যে তোর্সার জল উত্তোলন ও শোধন করে সরবরাহ প্রকল্প সম্পূর্ণ করার কাজও এগোচ্ছে। প্রকল্পটি চালু হয়ে গেলে শহরে এমন সমস্যা থাকবে না।”
পুরসভা সূত্রেই জানা গিয়েছে, কোচবিহার পুরসভার ২০টি ওয়ার্ডে লক্ষাধিক বাসিন্দার জন্য পানীয় জল সরবরাহে ২০টি পাম্পহাউস রয়েছে। জলাধার আছে ৪টি। পুরসভার ১৫০ টি স্ট্যান্ডপোস্ট ছাড়াও প্রায় ১১ হাজার বাসিন্দার বাড়ির সংযোগে ওই পরিকাঠামোকে ব্যবহার করে পানীয় জল সরবরাহ করা হয়। দৈনিক গড়ে ২০ হাজার গ্যালন জল বাসিন্দাদের চাহিদা মেটাতে দরকার হয়। এবার গরমের মরসুম পড়তেই জলস্তর নীচে নামায় সমস্যার সূত্রপাত হয়। বেশকিছু পাম্পে নির্দিষ্ট ৪৫০-৫০০ ফুট গভীরতায় লাগানো পাইপের মাধ্যমেও জল উঠছেনা। তার ওপর গত একমাসে একাধিক পাম্প বিকল হয়ে পড়ায় সমস্যা বেড়েছে।
পুরসভার এক আধিকারিক জানান, ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কলাবাগান এলাকার পাম্পের মোটর বিকল হয়ে রয়েছে। সেটি মেরামতের চেষ্টা হচ্ছে। ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের রাসমেলা মাঠ লাগোয়া এলাকায় কিছুদিন বিকল থাকা পাম্পটি অবশ্য ইতিমধ্যে মেরামত করা হয়েছে। ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে অকেজো হয়ে পড়া গভীর নলকূপটি মেরামতের জন্য ইতিমধ্যে দরপত্র ডাকা হয়েছে। কোচবিহার পুরসভার বিরোধী দলনেতা তথা সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদকমণ্ডলী সদস্য মহানন্দ সাহা বলেন, “জুলাইয়ের শুরু থেকে শহরের বিস্তীর্ণ এলাকায় পানীয় জল ঠিকভাবে সরবরাহ হচ্ছেনা। বাসিন্দারা অনেকেই জলের ড্রাম কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। সমস্যা মেটাতে জরুরী ভিত্তিতে পুরসভার উদ্যোগ দরকার।”
বাসিন্দারা জানান, শহরের ১, ২, ৩, ৮, ১০, ১১, ১২, ১৩, ও ১৪ নম্বর ওয়ার্ড লাগোয়া এলাকায় পানীয় জলের ওই সমস্যা সবচেয়ে মারাত্মক। সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলিতে সকাল থেকে স্ট্যান্ডপোস্টের সামনে জল ধরতে লম্বা লাইন হচ্ছে। কিন্তু জল সংগ্রহে অনেকেই সমস্যায় পড়ছেন। তাঁদের ক্ষোভ, ‘‘হাতেগোনা ট্যাঙ্কের মাধ্যমে জল বিলির লোক দেখানো দায় সারছে পুরসভা কর্তৃপক্ষ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy