Advertisement
E-Paper

ধামসা মাদলের বোলে উমা আসে তোতাপাড়ায়

দিন কাটে হাড়ভাঙা খাটুনিতে। আর রাত কাটে বুনোদের হামলার আশঙ্কায়। এটাই রোজনামচা বনবস্তির বাসিন্দাদের। তবুও শরতের আকাশে সাদা মেঘ হানা দেয়। শাল, সেগুন, মেহগনির পাতায় ভর করে আসে পুজোর গন্ধ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০২:১৪

দিন কাটে হাড়ভাঙা খাটুনিতে। আর রাত কাটে বুনোদের হামলার আশঙ্কায়। এটাই রোজনামচা বনবস্তির বাসিন্দাদের। তবুও শরতের আকাশে সাদা মেঘ হানা দেয়। শাল, সেগুন, মেহগনির পাতায় ভর করে আসে পুজোর গন্ধ। আর তখনই সব না পাওয়াকে সরিয়ে রেখে শহরের রোশনাই থেকে অনেক দূরে জঙ্গলে ঘেরা মরাঘাট রেঞ্জের তোতাপাড়াও সামিল হয় শারদোৎসবে।

ডুয়ার্সের গয়েরকাটা থেকে নাথুয়াহাটের রাস্তায় খট্টিমারি বিট অফিস। সেখান থেকে ডান দিকে ঘন জঙ্গল চিরে যাওয়া কাচা রাস্তা দিয়ে যেতে হয় প্রায় আট কিলোমিটার দূরের তোতাপাড়া বিট অফিসে। এর কিছুটা দূরেই দুর্গা মন্দির। মণ্ডপের চাকচিক্য নেই। নেই আলোর রোশনাইও। সব পরিবারে যে নতুন জামাকাপড় আসে এমনটাও নয়। তবে পুজোটা হয় বন বস্তির বাসিন্দাদের আন্তরিকতায় সমৃদ্ধ হয়ে।

রিতা রাভা, সুমিতা ওড়াঁওরা কচি-কাঁচাদের নিয়ে ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই জড়ো হন মন্দিরে। তাঁদের কথায়,‘‘পুজো করতে কত খরচ হবে, আমন্ত্রণ জানাতে হবে কোন বনাধিকারিক ও মন্ত্রীদের তা আগে থেকেই আমরা ঠিক করে নিই। নাচ-গানের জন্য ধামসা-মাদল মন্ডপে মজুত করি ষষ্ঠীর দিন থেকেই। এর আগে বনাধিকারিক ও মন্ত্রীরা এসে এই পুজোয় ধামসা- মাদলের তালে নেচে গিয়েছেন। এবারও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।’’

এ বার এই পুজো ৯ বছরে পড়ল। বন্য প্রাণ কমিটির সান্মানিক সদস্যা সীমা চৌধুরী বলেন, “শহরের পুজো থাকলেও আমি বন বস্তির পুজোয় ঠিক চলে যাই। বাসিন্দাদের যে আন্তরিকতা ও সারল্য মিশে থাকে তা তো শহরের সব পুজোয় পাই না। তোতাপাড়া বন বস্তির পুজো মণ্ডপে গেলে মনে হয় ছোটবেলায় ফিরে গিয়েছি।’’

শুধু তোতাপাড়া নয়, জঙ্গলের রাভা বস্তি, খুংলুং বস্তির বাসিন্দাও পুজোর ক’দিন এখানেই পড়ে থাকেন। চলে নাচ-গান। দু’বেলাই চলে খাওয়াদাওয়া। মন্দিরের পাশেই বসে ছোট মেলা। মরাঘাট জঙ্গলের রেঞ্জার অজয় ঘোষ বলেন, “জঙ্গলে ঘেরা বন বস্তির মানুষরা সারা বছর অপেক্ষা করে থাকেন দুর্গাপুজোর জন্য। শহর থেকে অনেক দূরে বন বস্তির বাসিন্দাদের সঙ্গে আমরা বনকর্মিরাও আনন্দে মেতে উঠি।’’

Durgapuja Slum
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy