Advertisement
০৮ মে ২০২৪

ডেঙ্গি রুখতে পথে বাসিন্দারা

ডেঙ্গি প্রতিরোধে পথে নামলেন বালুরঘাটের বাসিন্দারাই। পুরসভা ও স্বাস্থ্য দফতরের উদ্যোগে আগে এই এলাকায় ডেঙ্গি রোখা গিয়েছিল। এ বার সেই পুরসভা ও স্বাস্থ্য দফতরের বিরুদ্ধেই অভিযোগ উঠেছে, তাঁরা পরিস্থিতি সামলাতে ব্যর্থ। তিন জন ডেঙ্গি আক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহেই।

বালুরঘাট হাসপাতালের আউটডোরে উপচে পড়ছে ভিড়। ছবি: অমিত মোহান্ত।

বালুরঘাট হাসপাতালের আউটডোরে উপচে পড়ছে ভিড়। ছবি: অমিত মোহান্ত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বালুরঘাট শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০১৬ ০২:৩২
Share: Save:

ডেঙ্গি প্রতিরোধে পথে নামলেন বালুরঘাটের বাসিন্দারাই।

পুরসভা ও স্বাস্থ্য দফতরের উদ্যোগে আগে এই এলাকায় ডেঙ্গি রোখা গিয়েছিল। এ বার সেই পুরসভা ও স্বাস্থ্য দফতরের বিরুদ্ধেই অভিযোগ উঠেছে, তাঁরা পরিস্থিতি সামলাতে ব্যর্থ। তিন জন ডেঙ্গি আক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহেই।

তাই উদ্বিগ্ন স্থানীয় বাসিন্দারাই এলাকায় সাফাই অভিযানে নেমেছেন। বালুরঘাট শহরে নিয়মিত জঞ্জাল সাফাই হচ্ছে না বলে বিরোধীরা অভিযোগ তুলেছে। বৃহস্পতিবার বালুরঘাট পুরসভার চেয়ারম্যন রাজেন শীল দাবি করেন, শহরের প্রতিটি ওয়ার্ডে মশা মারতে ধোঁয়া ছড়ানো হচ্ছে। তেলও ছড়ানো হবে। পতিরাম পঞ্চায়েতের প্রধান নন্দ সরকারের দাবি, এলাকার ডাকবাংলো পাড়ায় ডেঙ্গিতে এক ছাত্রীর মৃত্যুর পর তারা রোগ প্রতিরোধে অভিযান চালাচ্ছেন। তা সত্ত্বেও ওই এলাকার রোজ জ্বর নিয়ে রোগীরা হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। সে কারণেই উদ্বিগ্ন এলাকার মানুষ।

দক্ষিণ দিনাজপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুকুমার দে-ও বলেন, ধোঁয়াতে তাৎক্ষণিক ভাবে বড় মশা মরে। কিন্তু নর্দমা এবং জমা জলে লার্ভা ধ্বংস করতে মশা মারার তেল কিংবা কেরোসিন তেল ছড়ানো জরুরি। তাতে জলের অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ হয়ে মশার লার্ভা মরে যায়। তিনি বলেন, ‘‘আমরা প্রতিটি পঞ্চায়েত প্রধানকে চিঠি দিয়ে রোগ প্রতিরোধ ও সচেতনার প্রচার অভিযানে নামতে অনুরোধ করেছি।’’ তবে এক-দু’টি পঞ্চায়েত ছাড়া বাকি পঞ্চায়েতগুলি এ বিষয়ে কোনও আগ্রহ দেখায়নি বলে অভিযোগ। নতুন করে এলাকাগুলিতে ডেঙ্গির প্রকোপে বাসিন্দাদের মৃত্যু এবং আক্রান্তের পরেও পঞ্চায়েত এবং পুরসভা থেকে কোনও হেলদোল নেই বলেও স্বাস্থ্য দফতর থেকে অভিযোগ করা হয়েছে।

বালুরঘাট হাসপাতালে অনেক রোগী শয্যায় স্থান না পাননি। তাঁদের মেঝেতে রাখা হয়েছে। সেই রোগীদের জন্য গঙ্গারামপুর মহকুমা হাসপাতাল থেকে ৫০টি শয্যা আনা হয়েছে। ইতিমধ্যে ঘটনার গুরুত্ব বুঝে এদিন জেলা স্বাস্থ্য দফতর থেকে চিকিৎসকদের ছুটি বাতিল করে আজ, শুক্রবারের মধ্যে হাসপাতালের কাজে যোগ দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি হাসপাতালের বহির্বিভাগে চালু করা হয়েছে ফিভার-ক্লিনিক। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুকুমারবাবু বলেন, সাধারণ জ্বরের রোগীদের ভর্তির প্রবণতা কমাতে ফিভার ক্লিনিক কার্যকরী ভূমিকা নেবে। এখন থেকে রবিবার সহ ছুটির দিনে জ্বরে আক্রান্ত রোগীর রক্ত পরীক্ষা করা হবে। গত শনিবার বালুরঘাটের চকভৃগু একাদশ শ্রেণীর পড়ুয়া উৎপল মহান্ত জ্বর নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলেও তার রক্ত পরীক্ষার রিপোর্টে সোমবারের আগে মেলেনি। তার মধ্যে বিকেলে উৎপল মারা গিয়েছিল। ফলে রক্তের রিপোর্টের অপেক্ষায় থাকা উৎপলের কোনও চিকিৎসাই হয়নি বলে আত্মীয়েরা চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলেছিলেন।

জ্বর নিয়ে উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুর হাসপাতালে ভর্তি হযেছেন বেশ কয়েকজন. তার মধ্যে বেশিরভাগই ডেঙ্গি সন্দেহে হাসপাতালে ভর্তি. হাসপাতাল সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে এমন ডেঙ্গি রোগীর সংখ্যা প্রায় ৭ জন.রোগীরা ইসলামপুর মহকুমার গোয়ালপোখরের পাঞ্জিপাড়া, নন্দঝাড়, চোপড়া এলাকার বলে জানতে পারা গিয়েছে. তাদের রক্ত নমুনা ম্যাক এলাইজা পরীক্ষার জন্য মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dengue Hospital
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE