ভাঙছে তোর্সার চর। —নিজস্ব চিত্র।
নদীর গ্রাসে ঘরবাড়ি গিয়েছে। শেষ সম্বলটুকু নিয়ে এখন আশ্রয় নিয়েছেন বাঁধের উপর। এর পর যাবেন কোথায়? এই আশঙ্কা কুরে কুরে খাচ্ছে কোচবিহারের দু’শো পরিবারকে। গত কয়েক বছরে তোর্সা গতিপথ পরিবর্তন করাতেই তৈরি হয়েছে নতুন সঙ্কট। আর তার জেরেই এখন গৃহহীন নদীর চরে থাকা প্রায় ২০০ পরিবার।
কোচবিহার শহরের পাশ দিয়েই বয়ে গিয়েছে তোর্সা নদী। তোর্সার ভাঙনের থাবা গিয়ে পড়েছে শহরের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে। সেখানকার ফাঁসিরঘাট, গোলবাগান, মসজিদপাড়া, পাটাকুড়া এবং রানিবাগান এলাকার প্রায় ২০০টি পরিবার ইতিমধ্যেই ঠাঁই হারিয়েছেন। তাঁরা আশ্রয় নিয়েছেন বাঁধের উপর। দিন আনা দিন খাওয়া এই পরিবারগুলি সর্বস্ব হারিয়ে দিন গুণছে সাহায্যের আশায়। বাঁধে যাঁরা আশ্রয় নিয়েছেন তাঁদের মধ্যে সুনীল সরকার নামে এক জন বললেন, ‘‘নদী ক্রমশ বাড়িঘর গ্রাস করছে। আমরা এখন সব কিছু নিয়ে বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে। বৃষ্টিতে ভিজছে আসবাবপত্র। কোনও রকমে পরিবার নিয়ে ত্রিপলের ছাউনিতে মাথা গুঁজে আছি। এই পরিস্থিতিতে দু’বেলা দু’মুঠো খাবার জোটানোই সমস্যার। প্রশাসন আমাদের কথা ভাবুক। আমাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করুক।’’
গত দু’দিনে তোর্সা আরও খানিকটা এগিয়ে এসেছে বাঁধের কাছাকাছি। ফলে শঙ্কাও বা়ড়ছে। এই সঙ্কট নিয়ে কোচবিহার দক্ষিণের বিধায়ক নিখিলরঞ্জন দে বলেন, ‘‘অনেকে নদীবাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন। দ্রুত ভাঙন ঠেকানো না গেলে ভবিষ্যতে কোচবিহার শহর বিপদে পড়ে যাবে। বর্তমানে বাঁধ থেকে সামান্য দূরে রয়েছে নদী। তা ক্ষতিগ্রস্ত হলে কোচবিহার শহর প্লাবিত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে। আমি সেচ দফতরের সঙ্গে কথা বলেছি। প্রশাসনের কাছেও গৃহহীনদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করার কথা জানিয়েছি।’’ কোচবিহার সদরের মহকুমাশাসক শেখ রাকিবুল রহমান বলেন, ‘‘নদী ভাঙনের ফলে বেশ কয়েকটি পরিবার বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে। আমি এলাকা ঘুরে দেখেছি। কোচবিহার উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে ফ্লাড সেন্টার তৈরি করা হয়েছে। তাঁরা চাইলে সেখানেও থাকতে পারেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy