Advertisement
১৯ মে ২০২৪

সম্প্রীতির মেলায় মেতেছে হাটখোলা

এলাকায় হিন্দুদের পাশাপাশি মুসলিম ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের বাসিন্দারাও বসবাস করেন। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও একতা বজায় রাখতে প্রায় দুই দশক আগে এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ লক্ষ্মীমেলা শুরু করেছিলেন।

হাটখোলায় লক্ষ্মীপুজোর মেলায় ভিড়। —নিজস্ব চিত্র।

হাটখোলায় লক্ষ্মীপুজোর মেলায় ভিড়। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০১৬ ০১:২৭
Share: Save:

এলাকায় হিন্দুদের পাশাপাশি মুসলিম ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের বাসিন্দারাও বসবাস করেন। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও একতা বজায় রাখতে প্রায় দুই দশক আগে এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ লক্ষ্মীমেলা শুরু করেছিলেন। জাতি ধর্ম নির্বিশেষে প্রথা মেনে এ বছরও সেই মেলায় মেতে উঠলেন এলাকার সকল ধর্মের বাসিন্দারা। বুধবার বিকাল ৫টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত রায়গঞ্জ ব্লকের বাহিন গ্রাম পঞ্চায়েতের বারোদুয়ারি হাটখোলা মাঠে ওই মেলার আয়োজন করা হয়। সম্প্রীতি বজায় রাখা যে অসম্ভব নয়, তা এ দিনের মেলায় দৃশ্যতই প্রমাণিত বলে দাবি উদ্যোক্তাদের।

মেলা কমিটির সম্পাদক নিখিলচন্দ্র দাস ও কোষাধ্যক্ষ নিখিল কুণ্ডুর দাবি, বাহিন পঞ্চায়েতের বিভিন্ন গ্রামে বহু ধর্মের বাসিন্দাদের বসবাস। এলাকায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও একতা বজায় রাখতে প্রতিবছর লক্ষ্মীমেলার আয়োজন করা হয়।

কমিটির সভাপতি নিতু চক্রবর্তী ও কার্যকরী কমিটির প্রধান রাজকুমার জোয়ারদারের দাবি, ১৯৯৮ সাল থেকে এলাকায় লক্ষ্মীমেলার আয়োজন করা হচ্ছে। প্রতি বছরই ওই মেলায় দর্শক ও দোকানপাট বাড়ছে। তিনি বলেন, ‘‘আমরা সবাই মানুষ। মানুষ হিসেবে সবাইকে এক হয়ে চলার বার্তা দিতেই প্রতি বছর ঘটা করে মেলার আয়োজন করা হয়।’’

কমিটির সদস্যরা জানিয়েছেন, শুরু থেকেই এলাকার সব ধর্মের বাসিন্দারা নিজেরা চাঁদা দিয়ে লক্ষ্মীমেলার আয়োজন করে আসছেন। দশমীর পরদিন কমিটির তরফে মাইকযোগে বারোদুয়ারি সহ ওই পঞ্চায়েতের নারায়নপুর, মধুপুর, একর, বিপ্রডাঙ্গি, ভট্টদিঘি, সোহারই, মনিপাড়া ও নেতাজিপল্লি এলাকায় সব ধর্মের বাসিন্দাদের মেলায় অংশ নেওয়ার ও মেলায় আসার অনুরোধ করা হয়। এদিন মেলায় গিয়ে দেখা গেল, ৩৫ জন বাসিন্দা তাঁদের বাড়ির ছোট বড় বিভিন্ন আকৃতির লক্ষ্মীপ্রতিমা মাথায় নিয়ে মেলায় হাজির হয়েছেন। প্রতিমাগুলি পাশাপাশি স্টলে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। গোটা মেলা চত্বর উজ্বল আলোয় মুড়ে ফেলা হয়েছে। প্রতিমাগুলি দেখার জন্য ভিড় জমিয়েছেন এলাকার হিন্দু, মুসলিম, খ্রিস্টান সহ বিভিন্ন ধর্মের কয়েক হাজার বাসিন্দা। রীতি অনুযায়ী কমিটির সদস্যরা প্রতিমার মালিকদের পান ও সুপারি খাইয়ে বরণ করে তাঁদের পুষ্পপত্র, কলসি, কুলা সহ পুজোর নানা সামগ্রী উপহার দিয়েছেন। কমিটির তরফে মেলার হাজির সকল ধর্মের বাসিন্দাদের মধ্যে জিলিপি ও মিষ্টি বিলি করা হয়েছে। খাবার, খেলনা, মনোহারী ও তেলেভাজার কয়েকশো দোকানে উপচে পড়া ভিড়ে জমজমাট মেলাচত্বর।

বারোদুয়ারি এলাকার বাসিন্দা মহম্মদ আলম, সৈয়দ আনসারি, বিন্দোল রোড এলাকার বাসিন্দা টিনু মর্মু ও বীরু মুন্ডা বলেন, ‘‘এলাকার সব ধর্মের বাসিন্দারা সারা বছর ধরে লক্ষ্মীমেলার অপেক্ষা করেন। বাসিন্দারা ধর্মীয় বিশ্বাসের চোখে মেলাকে দেখেন না। সম্প্রীতি ও একতা ধরে রাখতে সকল ধর্মের বাসিন্দারা মিলনমেলা হিসেবেই এই মেলাকে গুরুত্ব দেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

communal harmony
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE