হাতে নথি নিয়ে সরকারি বৃত্তির টাকা তুলতে বিডিও অফিসে এসেছিল দুই তরুণ। তাদের ভাবভঙ্গি দেখে সন্দেহ হয় বিডিও অফিসের কর্মীদের কয়েকজনের। জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করতেই ব্যাগ ফেলে দুই তরুণ পালিয়ে যায় বলে দাবি। ব্যাগ থেকে উদ্ধার হয় বৃত্তির ১৫৭টি ভুয়ো আবেদন পত্র। সব ক’টিতেই নকশালবাড়ি কলেজের অধ্যক্ষের ভুয়ো সই রয়েছে। আবেদন পত্রের সঙ্গে জোড়া হয়েছে ভুয়ো ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টও। বৃহস্পতিবার দুপুরে নকশালবাড়ি বিডিও অফিসের ঘটনা। তফশিলি জাতি এবং উপজাতি পড়ুয়াদের রাজ্য সরকারের অনগ্রসর কল্যাণ দফতর থেকে ন্যূনতম ২২৫০ টাকা করে দেওয়া হয়। এ দিন যে ভুয়ো আবেদন পত্রগুলি উদ্ধার হয়েছে, সেগুলি এই প্রকল্পেরই বলে পুলিশ জানিয়েছে। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের দাবি, লক্ষ লক্ষ টাকার জালিয়াতি চক্রের হদিশ মিলতে পারে। যে কায়দায় ভুয়ো নথি তৈরি হয়েছে তাতে বড় কোনও মাথা জড়িত রয়েছে বলে তদন্তকারীদের দাবি। প্রভাবশালী কেউ জড়িত থাকার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছে না পুলিশ। দার্জিলিঙের জেলা পুলিশ সুপার অমিত জাভালগি জানিয়েছে, তদন্ত শুরু হয়েছে। যারা জড়িত তাদের খোঁজ চলছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, অনগ্রসর দফতর থেকে দেওয়া বৃত্তি পাওয়ার জন্য অন-লাইনেও আবেদন করা যায়। বৃত্তির নানা ভাগ রয়েছে। ন্যূনতম ২২৫০ টাকা থেকে পাঁচ হাজারেও বেশি টাকা বৃত্তি পাওয়া যায়। অনলাইনে আবেদন করার পরে পড়ুয়ার উচ্চ মাধ্যমিক সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পরীক্ষার ফলের প্রতিলিপি, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের বিবরণ, পরিবারের আয় সহ নানা তথ্য জমা দিতে হয়। বিডিও অফিসে যাবতীয় নথি জমা দিলে বৃত্তির টাকা পড়ুয়াদের হাতে দেওয়া হয়।
এ দিন বিডিও দফতরে আসা দুই তরুণ ভুয়ো নথির সঙ্গে নাম ভাড়িয়ে আবেদনকারীদেরও নিয়ে এসেছিল বলে পুলিশের সন্দেহ। নকশালবাড়ির বিডিও কিংশুক মাইতি বলেন, ‘‘একশো সাতান্নটি আবেদন পত্র পাওয়া গিয়েছে। যাচাই করে দেখা গিয়েছে আবেদন পত্রে যত নথি ছিল সবই ভুয়ো। আগেও এমন ভুয়ো নথি জমা পড়েছে কিনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ নকশালবাড়ি কলেজের তরফে এ দিনই থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। আবেদনকারীরা সকলেই নকশালবাড়ি কলেজের পড়ুয়া বলে উল্লেখ করা হয়েছে। যদিও, আবেদনপত্রে যাদের নাম রয়েছে সেই নামে কোনও পড়ুয়া নেই বলে কলেজের দাবি। কলেজের অধ্যক্ষ সমীরেন্দ্র সরকার বলেন, ‘‘যাদের নামে ভুয়ো আবেদন পত্র তৈরি হয়েছে তারা কেউ কলেজের নয়। তবে যে ভাবে নথি তৈরি হয়েছে তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। পুলিশকে দ্রুত বিষয়টি খতিয়ে দেখতে অনুরোধ করা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy