খাদ্যমন্ত্রী ও দফতরের কমিশনারের হস্তক্ষেপে অবশেষে জট কাটার আশা। আজ, বুধবার থেকে দক্ষিণ দিনাজপুরে খাদ্য সুরক্ষা আইন প্রকল্পে উপভোক্তাদের জন্য চাল ও আটার সরবরাহ হবে বলে প্রশাসনের দাবি।। বালুরঘাট পুর এলাকা সহ কয়েকটি ব্লকের রেশন দোকান থেকে তাঁরা এই সরবরাহ পাবেন বলে জানিয়েছেন রেশন ডিলার সমিতিও।
তবে আটার বরাদ্দ নিয়ে জেলাস্তরে সিদ্ধান্ত নিতে নিতে বিকেল গড়িয়ে যায়। ফলে এদিন থেকেই চালের সঙ্গে উপভোক্তারা আটাও পাবেন কিনা, তা নিশ্চিত করে বলতে পারেনি খাদ্য দফতরও। দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাশাসক তাপস চৌধুরী বলেন, ‘‘জেলার ৬টি ব্লক এবং ১টি পুরসভা এলাকায় গড়ে প্রায় ৬১ শতাংশ ডিজিটাল রেশন কার্ড বিলি হয়েছে। রেশন ডিলারদের খাদ্যসামগ্রীর বরাদ্দ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে বুধবার থেকে ডিজিটাল কার্ড প্রাপকদের মধ্যে খাদ্যশস্য বিলি করতে সমস্যা হওয়ার কথা নয়।’’ প্রশাসন সূত্রের খবর, বুধবার পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বালুরঘাটে আসবেন খাদ্য অধিকর্তা অরবিন্দনাথ ঘোষ।
জেলার আটটি ব্লক এবং দুটি পুরসভার মধ্যে হিলিতে ৬৯ শতাংশ, কুমারগঞ্জে ৫৩ শতাংশ, তপনে ৬৩ শতাংশ, বংশীহারিতে ৫০ শতাংশ, হরিরামপুরে ৫০ শতাংশ এবং কুশমন্ডি ব্লকে ৭২ শতাংশ উপভোক্তার মধ্যে ডিজিটাল কার্ড বিলি সম্পূর্ণ হয়েছে বলে প্রশাসনের দাবি। এছাড়া বালুরঘাট পুরসভা এলাকায় এখনও পর্যন্ত কার্ড বিলি হয়েছে ৫০ শতাংশ।
জেলা খাদ্য নিয়ামক অমরেন্দ্র রায় বলেন, গত তিন সপ্তাহের বরাদ্দ চাল ও আটা গ্রাহকেরা রেশন দোকান থেকে একসঙ্গে পাবেন। গমের বদলে এই জেলায় রেশনে আটার সরবরাহ চালু থাকায় খাদ্য সুরক্ষা আইনে সেটাই রাখা হয়েছে। তাঁর বক্তব্য, একমাত্র ডিজিটাল কার্ডধারী উপভোক্তারা এখন খাদ্যসামগ্রীর সরবরাহ পাবেন। রাজ্যের খাদ্য দফতর থেকে আগামী ৮ সপ্তাহ অর্থাৎ দু’মাস পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে যারা ডিজিটাল কার্ড পেয়ে যাবেন, তারা সমস্ত বকেয়া চাল আটা একসঙ্গে রেশন দোকান থেকে পাবেন বলে খাদ্য নিয়ামক জানিয়েছেন।
তবে দক্ষিণ দিনাজপুর রেশন ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের জেলা সম্পাদক ভূপেশ ঘোষ বলেন, একসঙ্গে তিন সপ্তাহের খাদ্যসামগ্রী মজুতের মতো পরিকাঠামো রেশন ডিলারদের নেই। এ বিষয়ে খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘প্রয়োজনে ডিস্ট্রিবিউটরের ঘরে মাল রেখে ডিলারেরা সরবরাহ করবেন। এতে সমস্যা হবে না।’’
গত সোমবার, রেশন সপ্তাহ থেকে জেলায় খাদ্য সুরক্ষা আইন চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও খাদ্যসামগ্রী বরাদ্দ ও রেশনে বিলিবন্টন নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়। শেষপর্যন্ত খাদ্যমন্ত্রীর নির্দেশে এদিন রাজ্যের খাদ্য দফতর থেকে বালুরঘাটে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ওই প্রকল্পে বকেয়া তিন সপ্তাহের জন্য ৩,৪৬৫ মেট্রিক টন চাল এবং ২,৩১০ মেট্রিক টন আটা বরাদ্দের নির্দেশ দিয়ে প্রকল্পটি চালু করতে বলা হয়। খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়বাবু বলেন, ‘‘গঙ্গারামপুরে পুরভোটের কারণে নির্বাচনী আচরণ বিধির জন্য সেখানে ডিজিটাল কার্ড বিলি করা যায়নি। পুণে থেকে সমস্ত কার্ড এসে না পৌঁছনোয় বালুরঘাট ব্লকেও কার্ড বিলি শুরু করা যায়নি। তবে এদিন খাদ্যশস্যের বরাদ্দ হয়েছে। ইতিমধ্যে ডিজিটাল কার্ড প্রাপকদের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী বিলি করতে বলা হয়েছে।’’
ওই প্রকল্পে চাল বরাদ্দের পর আটার বরাদ্দ নিয়ে সকাল থেকে জেলা খাদ্য দফতরে বিস্তর টানাপড়েনের সৃষ্টি হয় পুরনো দাম নিয়ে। সরবরাহকৃত আটার প্যাকেটে পুরনো হারে ৫ টাকা দাম লেখা রয়েছে। অথচ খাদ্য সুরক্ষা আইনে গ্রাহকদের ২ টাকা কেজি দরে আটা সরবরাহ করতে হবে। শেষে বিকেল ৪টে নাগাদ কলকাতা থেকে খাদ্য কমিশনারের নির্দেশে ৫টাকা দাম লেখা ৫০০ গ্রামের ওই আটার প্যাকেট সরবরাহ করা যাবে বলে জানানো হলে খাদ্য নিয়ামক অমরেন্দ্রবাবু ডিলারদের ত বরাদ্দ করেন। কিন্তু শেষবেলায় বরাদ্দ ওই আটা জেলার প্রায় ৩০০ রেশন দোকানে বুধবার সকালের মধ্যে পৌঁছনো সম্ভব নয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy