Advertisement
E-Paper

ট্রেনের পথ বদলে ভয়ে বনকর্তারা

সাঁইত্রিশটি ট্রেনের পথ বদলানোর খবর পেয়ে ভয়ে কাঁটা বনকর্মীরা। এমনিতে জঙ্গল চিরে ৩০টি ট্রেনের যাতায়াত। তাতেই তটস্থ থাকতে হয় বনকর্মীদের। এ বার তার সঙ্গে জুড়ছে আরও ৩৭টি ট্রেন।

অনির্বাণ রায়

শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০১৮ ০৩:০৭
কাজ: রেলের ডবল লাইনের কাজ হচ্ছে। নিজস্ব চিত্র

কাজ: রেলের ডবল লাইনের কাজ হচ্ছে। নিজস্ব চিত্র

সাঁইত্রিশটি ট্রেনের পথ বদলানোর খবর পেয়ে ভয়ে কাঁটা বনকর্মীরা। এমনিতে জঙ্গল চিরে ৩০টি ট্রেনের যাতায়াত। তাতেই তটস্থ থাকতে হয় বনকর্মীদের। এ বার তার সঙ্গে জুড়ছে আরও ৩৭টি ট্রেন। তাও যে কোনও ট্রেন নয়, দেশের অন্যতম দ্রতগামী রাজধানী এক্সপ্রেসও রয়েছে নতুন তালিকায়।

আগামী ২৫ থেকে ২৮ মার্চ, এই চার দিন উত্তরপূর্ব ভারতে যাতায়াত করা সব ট্রেন চালানো হবে শিলিগুড়ি জংশন-নিউ মাল জংশন-নাগরাকাটা-হাসিমারা-আলিপুরদুয়ার লাইনে। এই পথের প্রায় ১৫০ কিলোমিটার জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে। সব মিলিয়ে দিনে ৬৭টি ট্রেন চলবে জঙ্গল পথে। বনকর্মীদের শঙ্কার কারণ সেটাই।

এখনও পর্যন্ত ৬১টি বুনো হাতি মারা গিয়েছে ট্রেনের ধাক্কায়। বাইসন সহ অন্য বন্যপ্রাণীর মৃত্যু তালিকা আরও লম্বা। জঙ্গল চিরে যাওয়া এই পথে বেশি ট্রেন না চালানোর অনুরোধ করে একাধিকবার রেলকে জানিয়েছিল বন দফতর। যদিও রেল জানিয়েছে, ডবল লাইনের কাজ হওয়ায় একটি পথ বন্ধ। বিকল্প এই পথে নেহাতই বাধ্য হয়ে ট্রেন চালাতে হচ্ছে। নয়ত এতগুলি ট্রেন বাতিল হয়ে যেত। তবে চার দিন গভীর জঙ্গলের ‘বাসিন্দা’দের মোটেই শান্তি থাকবে না বলে নিশ্চিত পরিবেশপ্রেমীরা। তাঁদের দাবি, ঘনঘন ট্রেনের শব্দে হয়ত লাইনের পাশে গাছে বাসা বেঁধে থাকা পাখিরাও জিরোতে পারবে না চার দিন। উড়ে যেতে হবে অন্য কোথাও।

উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক প্রণবজ্যতি শর্মা বলেন, ‘‘লাইন যখন রয়েছে তখন ট্রেন চলাচতলে বাধা নেই। তবে জঙ্গল পথে চলার গতিবেগ নির্ধারণ করা আছে। তা মাথায় রেখেই ট্রেন চালানো হবে।’’ রেলের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্নও রয়েছে বন দফতরের। রাজ্যের বনমন্ত্রী বিনয় বর্মন বলেন, ‘‘রেল এত বড় সিদ্ধান্ত নিল কিন্তু আমাদের কিছু জানাল না। বিষয়টি দেখছি। চার দিন এতগুলো ট্রেন চললে আশঙ্কার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। সবটা খতিয়ে দেখি তারপরে কিছু বলতে পারব।’’

এত দিন উত্তরপূর্ব ভারতগামী বেশিরভাগ ট্রেন চলত নিউ আলিপুরদুয়ার-জলপাইগুড়ি রোড-এনজেপি পথ ধরে। এই পথে ডবল লাইের কাজ হবে চার দিন। সেই ক’দিন বিকল্প জঙ্গল পথ অর্থাৎ আলিপুরদুয়ার জংশন-মালবাজার-শিলিগুড়ি জংশন হয়ে এনজেপি পথে চলবে। এই ট্রেন পথে জঙ্গল রয়েছে সেবক-গুলমা, চালসা-নাগরাকাটা, মাদারিহাট-হাসিমারা এবং হাসিমারা-কালজানি সেকশনে। ট্রেনের ধাক্কায় একের পর এক বন্যপ্রাণীর মৃত্যুর ঘটনার পরে এই পথে চলাতল কমিয়ে দেওয়া হয়। গতিবেগ কমিয়ে আনা হয় ৫০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায়।

জঙ্গলপথে মাঝে মধ্যে রেল লাইনের উপরে দাঁড়িয়ে থাকে বুনোরা নয়ত আশেপাশে ঘোরাফেরা করে। বেশি ট্রেন না চলায় কোথাও বুনোর দল থাকলে ইঞ্জিন দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয়। এই চার দিন সে সুযোগও কম থাকবে বলে মনে করছেন বনকর্তারা। একের পর এক ট্রেন থাকায় কোনওটিকেই বেশি ক্ষণ দাঁড় করিয়ে রাখা যাবে না তা খোলাখুলি জানিয়েই দিচ্ছেন রেলকর্মীরা। সব মিলিয়ে সেই চার দিন সামলানো যাবে কী ভাবে তাই আপাতত চিন্তা বনকর্মীদের।

Train Route Forest Department Forest Officials
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy