সাড়ে চার বছর পুরসভার মেয়র হিসাবে কাজ করতে গিয়ে তৃণমূলের অপমান, হেনস্থার অভিযোগ তিনি বারবার করেছেন। এ বার সেই ‘অভিজ্ঞতা’র কথা বিধানসভা ভোটে প্রচারে গিয়ে মানুষের সামনে তুলে ধরবেন বলে জানালেন শিলিগুড়ির প্রাক্তন মেয়র তথা কংগ্রেস নেত্রী গঙ্গোত্রী দত্ত। বৃহস্পতিবার দুপুরে কংগ্রেস-সিপিএমের জেলা নেতৃত্ব ভোট প্রচারের নানা যৌথ কর্মসূচির কথা ঘোষণা করেন। সেখানেই গঙ্গোত্রী বলেন, ‘‘ওই সাড়ে চার বছরের তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা কোনও দিন ভুলতে পারব না। তৃণমূল প্রতি পদে আমাকে অপমান, হেনস্থা করেছে। অর্থনৈতিক ব্যারিকেড করা হয়েছিল। বর্তমানে অশোক ভট্টাচার্যও একই অভিজ্ঞতার কথা মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন। ভোটের প্রচারে গিয়ে মানুষকে এসব আমার মনে করিয়ে দিতে হবে।’’
প্রাক্তন মেয়র জানান, তাঁরা গোড়ায় বামপন্থীদের সাহায্যে বোর্ড চালালেও পরে এক দফায় তৃণমূলের সঙ্গে জোট করেও বোর্ড চালিয়েছিলেন। গঙ্গোত্রীদেবীর দাবি, ‘‘আসলে মেয়র-সহ ক্ষমতার বসতে না পেরে তৃণমূল অসহিষ্ণু হয়ে এ সব করেছিল। মানুষের সামনে ওঁদের আসল কাজকর্মগুলি আবার জানানোর সময় এসেছে। সেখানে বোর্ডের পরিস্থিতির ছাড়াও আমরা এসজেডিএ দুর্নীতির মামলাও থাকবে।’’ এ দিন গঙ্গোত্রীদেবী তৃণমূল প্রার্থীদের কটাক্ষ করে বলেছেন, ‘‘এ বার শিলিগুড়িতে তৃণমূলের একাংশ প্রচার করছেন, ভাইচুং ভুটিয়া না কি জিতলে ক্রীড়ামন্ত্রী হবে। একজন ক্রীড়ামন্ত্রী এখন জেলে আছেন। দিদির সাহায্যে তিনি এ বারও ভোটের ময়দানে। তাই শিলিগুড়ির মানুষ এই রকম ক্রীড়ামন্ত্রী চান বলে মনে হয় না।’’
দলের প্রাক্তন মেয়র সঙ্গে সুর মেলান সিপিএম নেতা তথা শহরের মেয়র অশোক ভট্টাচার্য ও জেলা কংগ্রেস সভাপতি শঙ্কর মালাকারও। অশোকবাবু জানান, পুরসভা পরিচালনার ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের একটা ভূমিকা থাকে। এখন ভূমিকা থাকছে, কিন্তু সেটা নেতিবাচক। বিরোধীদের দখলে থাকা পুরসভাগুলিতে বঞ্চিত করা, হেনস্থা করাটাই যেন নীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। শিলিগুড়ি, রায়গঞ্জ-সহ বিভিন্ন বিরোধী পুরপ্রধানদের একই অভিজ্ঞতা। তিনি বলেন, ‘‘আমরা সব প্রার্থীরা একযোগে ভোটারদের একটি আবেদনপত্র দেব, সেখানে রাজ্য সরকারের অসহযোগিতা, তৃণমূল নেতাদের অসহিষ্ণুতার কথা থাকবে।’’
অশোকবাবুর থেকে একধাপ এগিয়ে কংগ্রেসের জেলা সভাপতি শঙ্করবাবু জানান, ২০০৯, ২০১১ সালে তাঁরা তৃণমূলের সঙ্গে জোট করে ভোটে লড়েছেন। আমাদের থেকে পুরভোটে একটি আসন (কংগ্রেস ১৫, তৃণমূল ১৪) কম পেয়েও ওঁরা মেয়র হওয়ার দাবিতে অনড় থাকেন। পরে ক্ষমতার জন্য কংগ্রেসকে ছেড়ে পালায়। সেই সময় বামপন্থীরাই শিলিগুড়িতে বাঁচাতে এগিয়ে এসেছিলেন। শঙ্করবাবু বলেন, ‘‘পরে ওঁরা আমাদের সঙ্গে কিছু দিনের জন্য এলেও মেয়রকে কম হেনস্থা করেননি। ২০১১ সালে আবার এক সঙ্গে লড়ি। কিন্তু ক্ষমতায় এসেই কংগ্রেসকে শেষ করার রাজনীতি শুরু হয়। দল ভাঙা, মামলা, ভয় ভীতি কিছু বাকি ছিল না। তাই তৃণমূলের হাতে প্রতারিত, অত্যাচারিত মানুষ এবার একজোট হয়েছে। শিলিগুড়ির মানুষ সব জানেন। আবার আমরা সব
প্রচারে আনব।’’
বাম-কংগ্রেসের অভিযোগ, বক্তব্যকে উড়িয়ে দিয়েছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী তথা তৃণমূল প্রার্থী গৌতম দেব। তাঁর দাবি, ‘‘মানুষই এই সুবিধাবাদী জোটকে দেখছেন। এতদিন পিছনে পিছনে আড়ালে এক সঙ্গে ছিল। এ বার একযোগে নেমেছে। মানুষ এর উত্তরে দেবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy