Advertisement
০৯ মে ২০২৪
ই-লেনদেনে অভ্যস্ত হচ্ছে দুই শহর

লজেন্স, পুজোর সরঞ্জামের দামও মোবাইলে

লাল সুতো দিয়ে বাঁধা বিল্বমূলের দাম মাত্র ৭ টাকা। প্লাস্টিকের প্যাকেটে ভরা মূল হাতে নিয়ে ক্রেতা জানালেন খুচরো নেই মোবাইলে টাকা পাঠাবেন। দোকানিও একবাক্যে রাজি। শনিবারই দোকানে পেটিএম মোবাইল অ্যাপ চালু করেছেন।

দশকর্মা ভাণ্ডারেও দাম দেওয়া যাচ্ছে মোবাইল ওয়ালেট থেকে। জলপাইগুড়িতে সন্দীপ পালের তোলা ছবি।

দশকর্মা ভাণ্ডারেও দাম দেওয়া যাচ্ছে মোবাইল ওয়ালেট থেকে। জলপাইগুড়িতে সন্দীপ পালের তোলা ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০১৬ ০১:৪৪
Share: Save:

লাল সুতো দিয়ে বাঁধা বিল্বমূলের দাম মাত্র ৭ টাকা। প্লাস্টিকের প্যাকেটে ভরা মূল হাতে নিয়ে ক্রেতা জানালেন খুচরো নেই মোবাইলে টাকা পাঠাবেন। দোকানিও একবাক্যে রাজি। শনিবারই দোকানে পেটিএম মোবাইল অ্যাপ চালু করেছেন। মোবাইল থেকে মোবাইলে চলে গেল বিল্ব মূলের টাকা। জলপাইগুড়ির যোগোমায়া কালীবাড়ির পাশে দশকর্মা ভাণ্ডারের সামনে ঝকঝক করছে নতুন বোর্ড। লেখা এখানে পেটিএম নেওয়া হয়। গীতা থেকে পিতলের গোপাল জলপাইগুড়িতে সবই এখন কেচাবেচা হচ্ছে ই-লেনদেনে।

দশকর্মা ভান্ডারের বিক্রি হওয়া অনেক জিনিসের দামই খুব একটা বেশি নয়। ধূপকাঠি, প্রদীপের সলতে মিলিয়ে ৩০ টাকার জিনিস কিনেও অনেকে নতুন ২ হাজার টাকার নোট বাড়িয়ে দিয়েছেন এমন অভিজ্ঞতাও হয়েছে অনুপ সাহার। পঞ্চাশ বছররে বেশি সময় ধরে কালীবাড়ির পাশে দোকানটি রয়েছে। নোট বাতিল এবং নগদ সঙ্কটের জেরে তাঁদের ব্যবসায় খুব একটা বেশি ভাটা আসেনি বলে দাবি। অনুপবাবুর কথায়, ‘‘আমার তো সব পুজোর উপকরণের কারবার। গেরস্তালির অনান্য খরচ কমালেও সংস্কারবশতই কেউ পুজোর সরঞ্জাম কেনা বন্ধ করেনি। সমস্যা হয়েছে খুচরো নিয়ে।’’ বাধ্য হয়ে মোবাইলে অ্যাপ ডাউনলোড করেছেন তিনি। বসানোর হাতেনাতে ফল পেয়েছেন। শনিবার সন্ধ্যে পর্যন্ত পেটিএমে জমা পড়েছে প্রায় সাড়ে চারশো টাকা। এ দিন সন্ধ্যায় দশকর্মার দোকানে গিয়েছিলেন বেসরকারি সংস্থার কর্মী জয়দীপ মুখোপাধ্যায়। স্ত্রীর ফরমায়েশে পেতলের গোপাল ঠাকুর কিনতে। পেটিএমেই টাকা মেটালেন তিনি। বললেন, ‘‘আমিও কয়েকদিন আগে মোবাইলে অ্যাপলিকেশন ডাউনলোড করেছি। এ দিনই প্রথম ব্যবহার করলাম। ভালই হল। নগদ টাকা তো পকেটেই থাকল।’’

পুরোনো পাঁচশো-হাজারের নোট বাতিলের জেরে পাশের শহর শিলিগুড়ির বাজারেও মন্দার ধাক্কা লাগে। বিভিন্ন বণিকসভার দাবি এক ঝটকায় লেনদেন অর্ধেকেরও বেশি কমে যায়। এখন শহরের ছোট ব্যবসায়ীরাও পেটিএমে টাকা নিচ্ছেন। যেমন বর্ধমান রোড লাগোয়া পান ব্যবসায়ী রামভজন শাহ। নোট বাতিলের পরে তার লেনদেনও কমে গিয়েছিল। ছেলের কথা শুনে পেটিএম ভরেছেন মোবাইল ফোনে। এ দিন তিনি বললেন, ‘‘এই তো কিছু আগেই একজন চকোলেট কিনল। পাঁচ টাকা খুচরো দিতে পারছিল না। পেটিএমে দাম নিলাম।’’ মহানন্দা সেতু লাগোয়া দেশবন্ধু হিন্দি স্কুলের গা ঘেঁষেই বই-খাতা-পেনের ছোট্ট দোকান। সেই দোকানেও বসেছে পেটিএম। ব্যবসায়ী রঞ্জিত বর্মা বলেন, ‘‘কেউ খুচরো দিতে না পারলে আমি নিজেই তাঁর মোবাইলে পেটিএম ভরে দিচ্ছি।’’

নগদ সঙ্কটের সমস্যা এড়াতে ক্রমশ ই-লেনদেনে অভ্যস্ত হচ্ছে দুই শহরই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

PayTM digital
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE