দুই দেশের প্রশাসনিক পর্যায়ে পরিকাঠামো তৈরির কাজকর্ম এখন জোরকদমে চলছে। প্রস্তুতি সম্পূর্ণ হলে আগামী মে মাসের মধ্যেই শিলিগুড়ির উপকণ্ঠে ফুলবাড়ির বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে সার্ক গোষ্ঠী ভুক্ত দেশের নাগরিকরা পরীক্ষামূলক ভাবে যাতায়াত করতে পারবেন।
সোমবার এ জন্যই ইমিগ্রেশন চেক পোস্ট তৈরির কাজকর্ম খতিয়ে দেখতে উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল সীমান্ত পরিদর্শন করেন। সেখানে ভারত-নেপালের প্রতিনিধিরা বৈঠকও করেন। নেপালের কনসাল জেনারেল চন্দ্র কুমার ঘিমিরে, উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ির বিভাগীয় কমিশনার বরুণ রায়, শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা, সংশ্লিষ্ট জেলাশাসক, শিলিগুড়ির এসিপি (ইস্ট) পিনাকী মজুমদার সহ অনেকেই। শুল্ক দফতর, বিএসএফের আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন। মূলত সীমান্ত এলাকায় পরিকাঠামো নির্মাণ সংস্কান্ত সিদ্ধান্তের জন্য বৈঠক হওয়ায় এসজেডিএ-র আধিকারিকদেরও বৈঠকে রাখা হয়।
জলপাইগুড়ির বিভাগীয় কমিশনার বরুণ রায় বলেন, “রাজ্য এবং কেন্দ্র দুই সরকারই চাইছে ফুলবাড়ি সীমান্ত দিয়ে পণ্য যাওয়া আসার সঙ্গে অভিবাসনও চালু হোক। আগামী দু’মাসের মাথায় সীমান্তে প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো তৈরি করা সম্ভব হবে। তখন থেকেই অভিবাসন শুরু হবে। এ জন্য কী পরিকাঠামো প্রয়োজন তা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।” প্রশাসনিক সূত্রের খবর, ভিসা যাচাই কেন্দ্র, তল্লাশি চালানোর বিশেষ কেন্দ্রও দ্রুত গড়া হবে।
শিলিগুড়ি পুলিশের তরফে সীমান্তে একটি থানার কাজ চালানোর মতো ভবন তৈরির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ফুলবাড়ি সীমান্ত দিয়ে বাণিজ্য এবং অভিবাসন দুই চলতে থাকলে চোরাচালানের আশঙ্কাও তৈরি হবে। সে কারণেই নিরাপত্তা বাড়াতে এলাকায় পুরোদস্তুর একটি থানা তৈরির পরিকল্পনাও রয়েছে পুলিশের। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা বলেন, “ফুলবাড়ি সীমান্তে আমাদের কী ধরনের পরিকাঠামো প্রয়োজন তা বৈঠকে জানিয়েছে। সেখানে একটি থানা তৈরির ভাবনাচিন্তাও রয়েছে।”
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, ২০১১ সালে কেন্দ্রের ইউপিএ সরকারের আমলে ফুলবাড়ি সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে যাতায়াতের জন্য ইমিগ্রেশন চেক পোস্ট তৈরির পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়। বর্তমানে ওই পথে নেপালের গাড়ি বাছাই কিছু পণ্য নিয়ে যাতায়াত করতে পারে। কিন্তু, ইমিগ্রেশন চেক পোস্ট হলে নাগরিকরাও পাসপোর্ট-ভিসা যাতায়াত করতে পারবেন। সেই কারণে দুই দেশের সরকারের মধ্যে আলোচনা সাপেক্ষে আইসিপি গড়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়। গত ৪ বছরে সেই কাজ খুব বেশি এগোয়নি। তাই রাজ্যের দুটি এলাকা অর্থাৎ চ্যাংড়াবান্ধা, পেট্রাপোলের মতো বাণিজ্যিক কেন্দ্র হওয়ার স্বপ্ন অধরাই রয়ে যায় ফুলবাড়ি ও লাগোয়া শিলিগুড়ির।
সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাংলাদেশ সফরের পরে বিষয়টি ফের গতি পেয়েছে। বাংলাদেশের তরফে ফুলবাড়ির অন্য প্রান্তের বাংলাবান্ধায় আইসিপি গড়ার কাজ জোরকদমে শুরু হয়েছে। ভারতের দিকেও সেই কাজে গতি আনতে আসরে নেমেছে প্রশাসন। প্রথম পর্যায়ে সার্ক ভুক্ত দেশের নাগরিকরা যাতায়াতের সুবিধা পাবেন বলেই সূত্রের খবর। সে ক্ষেত্রে বর্তমানে শিলিগুড়ি থেকে গাড়ি নিয়ে শর্তসাপেক্ষে যেমন সরাসরি নেপাল, ভুটানে যাতায়াত করা যায়, তেমনই বাংলাদেশেও যাতায়াত করা যাবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন প্রশাসনের অনেকেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy