—ফাইল চিত্র
দার্জিলিং ও কালিম্পং পাহাড়ে জিটিএ এলাকার বাসিন্দাদের বিনামূল্যে করোনা টিকা দেওয়ার ঘোষণা করলেন জিটিএ চেয়ারম্যান অনীত থাপা। সোমবার সকালে পাহাড়বাসীর জন্য নতুন বছরের উপহার বলে দার্জিলিং থেকে ঘোষণা করেছেন অনীত। জিটিএ-র তরফে জানানো হয়েছে, রাজ্যে টিকা আসতেই তা পাহাড়েও পৌঁছবে। তখন ধাপে ধাপে চলবে টিকাকরণ। দুই পাহাড়ি জেলার মানুষের সবার জন্য টিকার বন্দোবস্ত থাকবে। বিরোধীরা অবশ্য বলছেন, একদিকে বিমল গুরুং, অন্যদিকে আসন্ন বিধানসভা ভোটকে মাথায় রেখেই এক ঢিলে দুই পাখি মারার কাজ করতে চাইছেন অনীত।
জিটিএ চেয়ারম্যান অবশ্য বলেছেন, ‘‘পাহাড়ের মানুষ সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করে চলেছেন। এই অঞ্চলে পাহাড়ের এক বাসিন্দা উত্তরবঙ্গে প্রথম করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেও তা ব্যাপকহারে ছড়ানো থেকে রোখা গিয়েছে। এর কৃতিত্ব পাহাড়বাসীর। বিনামূল্যে টিকাকরণ পাহাড়বাসীর জন্য নতুন বছরের উপহার।’’
সরকারি সূত্রের খবর, দার্জিলিং এবং কালিম্পং জেলার জিটিএ এলাকার জনসংখ্যা ৮ লক্ষ ৭৮ হাজার। সেখানে ৯ লক্ষ সংখ্যাকে মাত্রা ধরেই রাজ্যের সঙ্গে কথাবার্তা চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে। আপাতত দুটো ডোজের জন্য ৪০০ টাকা করে টিকার খরচ ধরলে পাহাড়ের জন্য বরাদ্দ প্রয়োজন প্রায় ৩৬ কোটি টাকা। জিটিএ স্বাস্থ্য এবং করোনা মোকাবিলার তহবিল থেকেই টাকার অঙ্ক তৈরি রাখা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকার বিনামূল্যে দিলে ভাল। টাকার প্রয়োজন হলে রাজ্যের মাধ্যমে জিটিএ টিকা কিনবে বলেও ঠিক রয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও রবিবার বিনামূল্যে টিকার কথা বলায় বিজেপি সরব হয়েছে। দলের দাবি, প্রধানমন্ত্রী তো বিনামূল্যে টিকা দেবেন। সেখানে রাজ্য কেন্দ্রের থেকে তা নিয়ে নিজের নামে তা চালাতে চাইছে। একই ঘটনা পাহাড়ে ঘটার আশঙ্কা রয়েছে বলে বিজেপির দাবি। যদিও মোর্চা-বিরোধী, সিপিআরএম, গোর্খা লিগ, জাপের মতো দলগুলি ভিতরে ভিতরে নানা কথা বললেও প্রকাশ্যে কিছু বলেনি। দলের নেতারা জানান, টিকা নিয়ে মানুষ অত্যন্ত সংবেদনশীল। অনীতের বিনামূল্যে টিকার ঘোষণাকে পাহাড়ের বড় অংশ স্বাগত জানাচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই বার্তা ছড়িয়ে পড়েছে। তাই করোনা নিয়ে আপাতত রাজনীতি নয়।
যদিও নেতাদের বড় অংশ মনে করেন, অক্টোবর থেকে বিমল গুরুংয়ের সঙ্গে বিনয় তামাং, অনীত থাপাদের শক্তি প্রদর্শনের লড়াই শুরু হয়ে গিয়েছে। একে অপরকে প্রতি পদে টক্কর দেওয়ার জন্য এক পা পিছিয়ে যাচ্ছে না। এদিন দার্জিলিং চকবাজার মোটর স্ট্যান্ডে পাহাড়ের প্রাথমিক এবং হাইস্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা বিরাট জনসভা করে বিনয়, অনীতকে সমর্থন করেন।
সেখানে অনীত জানান, শিক্ষিত সমাজ পাহাড়ে নতুন চিন্তার পক্ষে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য শিক্ষা আরও শক্তিশালী করা হচ্ছে। সেখানে আলাদা রাজ্যের প্রসঙ্গে দূরে। কোনও দল বা রাজনৈতিক নেতা তা দিতে পারবে না। শিক্ষিত, বুদ্ধিজীবীদেরই একজোট হয়ে পথ তৈরি করতে হবে। এপ্রসঙ্গে সিকিম কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন এক উপাচার্যের নামও নেন অনীত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy