বামেদের হাতে থাকা মহকুমা পরিষদ এবং গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি দখল করা নিয়ে ফের সুর চড়ালেন পর্যটন মন্ত্রী তথা দার্জিলিং জেলা তৃণমূলের সভাপতি গৌতম দেব। পঞ্চায়েত আইন অনুযায়ী বোর্ড গঠনের আড়াই বছরের মধ্যে অনাস্থা আনা যায় না। ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে শিলিগুড়ি মহকুমায় ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ভোট হয়েছে। সেই সময়সীমা হিসেব করে শুক্রবার গৌতমবাবু বলেন, ‘‘শিলিগুড়ি বাম শূন্য হওয়ার পথে এগোচ্ছে। এতদিন পঞ্চায়েত আইনের বিধি নিষেধের কারণে অনাস্থা আনা যায়নি। আর ৬ মাস বাদে সেই নিষেধাজ্ঞা থাকবে না। মহকুমা পরিষদ, গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি বামেদের হাতছাড়া হবে।’’
শুক্রবার হিলকার্ট রোডের তৃণমূলের পার্টি অফিসে এসে ফাঁসিদেওয়ার জালাস নিজামতারা গ্রাম পঞ্চায়েতের ৬ বাম সদস্য দল বদলের কথা ঘোষণা করেন। বাম সদস্যরা তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় ২২ জন পঞ্চায়েত সদস্যের মধ্যে ১৯ জনই এখন তৃণমূলের। বাকি ৩ জন কংগ্রেসের। বামেদের আর কোনও সদস্য গ্রাম পঞ্চায়েতে থাকল না। তরিফুদ্দিন আহমেদ, ভবেশ রাজবংশী, সন্ধ্যা সিংহের মতো পঞ্চায়েত সদস্যরা দাবি করেছেন, তাঁরাই তৃণমূলে যোগ দেওয়ার আবেদন করেছেন। তৃণমূলে যোগ দিলে তাঁদের এলাকার বাসিন্দাদের জন্য রাজ্যে থেকে বেশি করে উন্নয়নের প্রকল্প আদায় করা যাবে।
মন্ত্রীর দাবিকে অগণতান্ত্রিক বলে দাবি করেছেন বামেরা। দার্জিলিং জেলা সিপিএমের সম্পাদক জীবেশ সরকার কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘শিলিগুড়িবাসী ভোট দিয়ে বামেদের জিতিয়েছে। সেই বোর্ড ভেঙে দেওয়া, ক্ষমতা দখল করার কথা বিপজ্জনক, যারা বলেন তাঁরা গণতন্ত্রে বিপদ ডেকে আনছেন।’’
গৌতমবাবুই বাম পঞ্চায়েত সদস্যদের হাতে দলের পতাকা তুলে দেন। জালাসে অবশ্য আগে থেকেই তৃণমূলের বোর্ড ছিল। দু’বছর আগের ভোটে মহকুমা পরিষদের ৯ আসনের মধ্যে ৬টি বামেদের দখলে যায়। তিনটি নিয়ে তৃণমূলের বোর্ড গঠন সম্ভব নয়। এ দিন গৌতমবাবু বলেন, ‘‘তৃণমূলের সদস্য সংখ্যা ৫ হলেই বোর্ড হাতে আসবে। রাজ্যের উন্নয়নে সামিল হতে অনেকেই তৃণমূলে আসতে চাইছেন।’’
তৃণমূল বিরোধী সব দলের নীচু তলার কর্মীদের জোট গড়ার ডাক দিয়ে ‘শিলিগুড়ি মডেলে’ মহকুমা পরিষদ বামেরা দখল করে। তার পর থেকেই মাঝেমধ্যে বোর্ড দখল নিয়ে হুমকি দিয়েছে গৌতমবাবু সহ তৃণমূলের নেতারা। গত বছর পুজোর আগে বামেদের বিসর্জনের বাজনা বাজানোর কথাও বলেছিলেন মন্ত্রী। যদিও বোর্ডে বামেরাই থেকে যায়। পাশের জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের ক্ষমতা দখল হলেও শিলিগুড়িতে তা হয়নি। পঞ্চায়েত আইনের কারণেই দলবদল আটকে গিয়েছিল বলে তৃণমূলের দাবি। বামেরা অবশ্য পাল্টা দাবি করেছেন, মহকুমা পরিষদের রাশ তাদের হাতেই থাকবে। মহকুমা পরিষদের সভাধিপতি তাপস সরকারের দাবি, ‘‘আগেও নানা কথা শুনেছিলাম। ভবিষ্যতেও হয়ত শুনতে হবে। মানুষ বামেদের পক্ষে রায় দিয়েছেন। সেটা কখনও কেড়ে নেওয়া যাবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy