কাঁচা চা-পাতার দাম নিয়ে এবার চা উন্নয়ন দপ্তরের কর্তার সামনে সরব হলেন জলপাইগুড়ির ক্ষুদ্র চা চাষীরা৷ তাদের অভিযোগ, সমস্যা সমাধানে চা-পর্ষদের অধীনে একাধিক আধিকারিক নিয়োগ করা হলেও ক্ষুদ্র চা চাষীদের ন্যায্য দাম পাইয়ে দিতে তারা চরম ব্যর্থ ৷ সমস্যার কথা মেনে নিলেও, তা সমাধানে বল কিন্তু ক্ষুদ্র চা-চাষীদের কোর্টেই ঠেলেছেন চা উন্নয়নের কর্তা ৷ আজ জলপাইগুড়িতে ক্ষুদ্র চা চাষী সমিতির বার্ষিক সভা অনুষ্ঠিত হয় ৷ যেখানে অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন শিলিগুড়ির চা উন্নয়ন দপ্তরের উপ-অধিকর্তা রমেশ কুজুর৷ চা উন্নয়ন দপ্তরের ওই অধিকর্তার সামনেই এদিন কাঁচা চা-পাতার দাম নিয়ে সরব হন ক্ষুদ্র চা চাষীরা ৷
যদিও জেলার ক্ষুদ্র চা চাষীদের এই সমস্যা নতুন নয়৷ দীর্ঘ দিন থেকেই কাঁচা চা পাতার ন্যায্য দাম পাওয়া নিয়ে তাদের সমস্যা চলছে৷ দাম না পেয়ে ক্ষুদ্র চা চাষীরা অনেকবার বিক্ষোভও দেখিয়েছেন৷ তাঁদের কথায়, এই পরিস্থিতিতে চা পর্ষদের অধীনে থাকা স্মল গ্রোয়ার্স ডেভেলপমেন্ট ডিরেক্টরেট বা এসজিডিডি-র অধীনে উন্নয়ন আধিকারিক ও ফ্যাক্টরি উপদেষ্টা আধিকারিক নিয়োগ করা হলেও সমস্যা মেটেনি ৷
এ দিনের সভায় রমেশবাবুর সামনেই জলপাইগুড়ি জেলা ক্ষুদ্র চা চাষী সমিতির সাধারণ সম্পাদক বিজয়গোপাল চক্রবর্তী অভিযোগ করে বলেন, “গত বছর জুলাই মাস থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত জেলার ক্ষুদ্র চা চাষীরা কাঁচা চা-পাতা বিক্রি করে উৎপাদনের খরচ পর্যন্ত তুলতে পারেননি ৷” কিন্তু সমস্যাটা কোথায়? সমিতির কর্তাদের অভিযোগ, বটলিফ চা-ফ্যাক্টরিগুলির স্বৈরতান্ত্রিক মনোভাব, উৎপাদন বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গেই পাতা দাম কমিয়ে দেওয়া ও পাতার গুনগত মান পরীক্ষায় কারচুপির ফলেই এই সমস্যা হচ্ছে ৷ অথচ যে আধিকারিকদের এ গুলি দেখার কথা তারা ব্যর্থ৷ এমনকি শিলিগুড়ির চা উন্নয়ন দফতর গত বছর কাঁচা চা-পাতার দাম কমে যাওয়ার পর তিনটি সভা ডেকে প্রচুর সিদ্ধান্ত নিলেও তার সব মান্যতা পায়নি বলে অভিযোগ তাদের ৷
সমস্যার কথা অবশ্য অস্বীকার করেননি শিলিগুড়ির চা উন্নয়ন দপ্তরের উপ অধিকর্তা রমেশ কুজুর৷ তাঁর কথায়, “অনেক আধিকারিক থাকা সত্ত্বেও প্রায় প্রতি বছরই চা-পাতা রাস্তায় ফেলে দেওয়ার ঘটনা ঘটে ৷ এটা খুবই দুঃখের৷ কিন্তু বিষয়টিতে যেমন চা পর্ষদের দায়িত্ব রয়েছে, তেমনি সবচেয়ে বেশি দায়িত্ব কিন্তু রয়েছে ক্ষুদ্র চা চাষীদেরই৷ কারণ যে সময়ে তারা কাঁচা চা-পাতা উৎপাদন করছেন সেই একই সময়ে বড় বড় বাগানেও তা উৎপাদন হচ্ছে৷ যার ফলে অনেক সময়ই চাহিদার থেকে জোগান বেড়ে যাওয়ায় এই সমস্যা ৷” এই পরিস্থিতিতে ক্ষুদ্র চা চাষীদের কাঁচা চা পাতার গুণগত মান যাতে ভাল হয় সেদিকটাতেই বেশি লক্ষ্য রাখতে পরামর্শ দিয়েছেন তিনি৷ তাঁর কথায়, “কাঁচা চা-পাতার গুণগত মান ভাল হলে ন্যায্য দাম না পাওয়ার সমস্যাও অনেকটাই মিটবে৷” এদিনের সভা থেকেই ক্ষুদ্র চা চাষিদের তিনটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য দশ লক্ষ টাকার ছাড়পত্র প্রদান করেন চা উন্নয়ন দপ্তরের এই কর্তা ৷
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy