Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

অস্থায়ী কর্মীদের মতান্তর তৃণমূল নেতাদের

জেলা পরিষদের ছাঁটাই কর্মীদের পাশে দাঁড়িয়ে আন্দোলনের ডাক দিলেন ‘বহিষ্কৃত’ তৃণমূল নেতা শুভাশিস ওরফে সোনা পাল। সোমবার তৃণমূল পরিচালিত দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলা পরিষদের সভাধিপতি ললিতা টিগ্গা অস্থায়ী কর্মীদের ছাঁটাইয়ের নোটিস ঝোলাতেই কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বালুরঘাট শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০১৫ ০২:৩৫
Share: Save:

জেলা পরিষদের ছাঁটাই কর্মীদের পাশে দাঁড়িয়ে আন্দোলনের ডাক দিলেন ‘বহিষ্কৃত’ তৃণমূল নেতা শুভাশিস ওরফে সোনা পাল। সোমবার তৃণমূল পরিচালিত দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলা পরিষদের সভাধিপতি ললিতা টিগ্গা অস্থায়ী কর্মীদের ছাঁটাইয়ের নোটিস ঝোলাতেই কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। এদিন সকাল ১১টা নাগাদ বালুরঘাটে জেলাপরিষদ কার্যালয়ের নোটিস বোর্ডে সভাধিপতি ললিতা টিগ্গার স্বাক্ষরিত গত শুক্রবারের(৩ জুলাই)সাধারণ সভার সিদ্ধান্তের কথা উল্লেখ করে নোটিসে জানানো হয়েছে, জেলাপরিষদের জব ওয়ার্কারদের (অস্থায়ী কর্মী) জন্য নিজস্ব তহবিল থেকে প্রতি মাসে প্রচুর টাকা খরচ হচ্ছে। বর্তমানে জেলাপরিষদ তা বহন করতে অপারগ। তা ছাড়া তাদের নিয়োগ পদ্ধতির সঠিক প্রমাণ নেই। তাই সাধারণ সভার সিদ্ধান্ত মতো ৪ জুলাই থেকে তাদের অব্যাহতি দেওয়া হল এবং তাদের বাতিল বলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হল।

সভাধিপতির ওই নোটিস জারিকে অবৈধ বলে দাবি করেন একাধারে তৃণমূল এবং জেলাপরিষদের পূর্তকর্মাধ্যক্ষ থেকে বহিষ্কৃত নেতা সোনা পাল। এদিন তিনি হরিরামপুর থেকে বালুরঘাটে এসে ছাঁটাই হওয়া কর্মীদের পাশে দাঁড়িয়ে অভিযোগ করেন, জেলাপরিষদের ৫০ জন অস্থায়ী কর্মীকে ছাঁটাইয়ের বিষয়ে গত শুক্রবারের সাধারণ সভায় কোনও এজেন্ডা ছিল না। দীর্ঘদিন ধরে কাজ করা ওই সমস্ত কর্মীদের বাতিলের মতো গুরুতর সিদ্ধান্ত এজেন্ডা ছাড়া হতে পারে না। ওই দিনের সভায় তিনি আপত্তি জানালেও কেউ তা শোনেননি বলে সোনা পাল দাবি করেন। পাশাপাশি ওই কর্মীদের ছাঁটাইয়ের কারণ হিসাবে আর্থিক অভাবের বিষয়টি তিনি মানেননি। সোনাবাবুর অভিযোগ, ‘‘গত ২০১৩ সালের ৯ সেপ্টেম্বর দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে সভাধিপতির গাড়ির তেল সহ অন্য রাহা খরচ বাবদ কত লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে তার হিসাব দিতে হবে। জেলা পরিষদে দাদার (বিপ্লব মিত্র) বসার ঘরের জন্য কত লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে, তা প্রকাশ্যে জানানো হোক।’’

বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা সোনা পালের ওই অভিযোগকে কোনও গুরুত্ব দিতে চাননি তৃণমূলের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্র। তিনি পাল্টা দাবি করে বলেন, ‘‘গত শুক্রবারের সাধারণ সভায় তো ওর (সোনা পাল) উপস্থিতিতে ছাঁটাইয়ের আলোচনা হয়। সে সময় তো ও (সোনা) অস্থায়ী কর্মী ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্তের কোনও বিরোধিতা করেনি। এখন কর্মীদের কাছে সাধু সাজার চেষ্টা করছে।’’

বিপ্লববাবু অভিযোগ করেন, ‘‘বাম আমলে নিযুক্ত ওই সমস্ত ক্যাজুয়াল কর্মীদের নিয়োগের কোনও রেজুলেশন (সভার সিদ্ধান্ত) কিংবা নিয়োগপত্র নেই। ৬০ থেকে ৭০ বছর বয়সী এমন কিছু কর্মীর কোনও কাজ নেই।’’ সভাধিপতি ললিতা টিগ্গা বলেন, ‘‘জেলাপরিষদের ট্রাক টার্মিনাস থেকে যে পরিমাণ টাকা আদায় হওয়া উচিত, তা হয় না।’’ ওই সমস্ত কর্মীদের বেতন দেওয়ার মতো ওনফান্ডে (নিজস্ব তহবিল) কোনও টাকা নেই বলে দাবি করে তিনি অভিযোগ করেন, ‘‘বাম আমলে ওই কর্মীদের দেখিয়ে ওন ফান্ড থেকে টাকা নয়ছয় হত। সেটা ধরে অপ্রয়োজনীয় অস্থায়ী কর্মীদের ছাঁটাই করায় আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তোলা হচ্ছে।’’

এদিন অস্থায়ী কর্মীদের পক্ষে প্রতিনিধি পুলক মজুমদার দাবি করেন, আজ, মঙ্গলবার থেকে তারা ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে কর্মীরা আন্দোলনে নামবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE