গণ্ডগোলের জেরে ভাঙচুর হওয়া দোকান। —নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে রক্ত ঝরল শিবমন্দিরের সাধন মোড় এলাকায়। শুক্রবার ওই ঘটনাকে ঘিরে দিনভর চাপা উত্তেজনা ছিল। ঘটনাস্থলে যায় মাটিগাড়া থানার পুলিশ। অশান্তি যাতে বাড়তে না পারে সেই কারণে দুপুর পর্যন্ত পুলিশি পাহারা ছিল। পরে পুলিশ চলে গেলেও রাত পর্যন্ত এলাকায় যেতে সাহস পাননি এক গোষ্ঠীর সদস্যরা বলে অভিযোগ। এই ঘটনার দায় একে অপরের উপরে চাপিয়েছেন তৃণমূলেরই মাটিগাড়া এলাকার দুই দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা তৃণমূলের মাটিগাড়া ব্লক সভাপতি বিশ্বজিত ঘোষ এবং আঠারোখাই অঞ্চল তৃণমূলের সভাপতি দুর্লভ চক্রবর্তী।
দুর্লভবাবু বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন ধরেই ওই এলাকার পরেশচন্দ্র সন্ন্যাসীর এবং তাঁর পরিবারের লোকের উপরে মিথ্যা ধর্ষণের মামলা দায়ের করে ওই পাড়ারই অমর দের পরিবার। পরেশবাবুর পক্ষে এমন কাজ করা সম্ভব নয় বলেই আমি মনে করি। বিশ্বজিতবাবু, অমরবাবুদের বাড়ি গিয়েছিলেন বলে শুনেছি। তবে কেন গিয়েছিলেন উনিই বলতে পারবেন।’’ তবে বিশ্বজিতবাবুর কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘ঘটনার পিছনে আমার কোনও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল না। দলের কর্মীর দোকান ভাঙচুর করার ঘটনা শুনে আমি তাঁর বাড়ি গিয়েছিলাম। যাঁরা কিছু পাওয়ার আশায় রাজনীতি করেন, তারাই এর সঙ্গে রাজনীতি জড়িয়ে দিচ্ছেন।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার সূত্রপাত এক মহিলার টাকার ব্যাগ হারানোকে কেন্দ্র করে। অমরবাবুর একটি মুদির দোকান রয়েছে। দু’দিন আগে তাঁর দোকানে এক মহিলা জিনিসপত্র কিনতে এসে দোকানের সামনে টাকার ব্যাগটি ফেলে যান। সেই সময় সামনে দাঁড়িয়ে থাকা কয়েক জন যুবক ওই টাকার ব্যাগটি কুড়িয়ে নিয়ে যান। পরে ওই মহিলা খোঁজ করতে গেলে অমরবাবু ওই যুবকদের কথা জানান। তাতেই যুবকেরা অমরবাবুর উপরে ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁর দোকান ভাঙচুর করেন বৃহস্পতিবার রাতে। ঘটনার অভিযোগ জানালে মাটিগাড়া থানা থেকে পুলিশ অমরবাবুর ছেলে মানসকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যায়। পরে অবশ্য তাঁকে ছেড়ে দেওয়াও হয়। এরপরে এদিন সকালে অমরবাবুর স্ত্রী বেবিদেবী গালিগালাজ করায় তাঁকে ও অমরবাবুকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। বেবিদেবী অভিযোগ করেন, ‘‘আমরা আগের দিন অভিযোগ দায়ের করার পরেও পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করেনি। আমরা বাড়ি ফিরতে সাহস পাচ্ছি না। আমাদের উপরে পরে হামলা হতে পারে।’’ যদিও তাঁরা কেউ মারধর করেননি বলে জানান পরেশবাবু। পরেশবাবুর মেয়ে ললিতাদেবী বলেন, ‘‘দে পরিবারের দূর্ব্যবহারের কারণেই পাড়ার মহিলারা তাঁদের মেরেছেন। তাঁদের বাড়ির কেউ জড়িত নয়।’’ বরং তাঁর স্ত্রী ও মহিলাকে ঢিল মেরে আহত করেন ওই পরিবারের সদস্যরা।’’ পরেশবাবুর অভিযোগ, ‘‘আমার বিরুদ্ধেও এর আগে মিথ্যা ধর্ষণের মামলা করে জেল খাটিয়েছেন। এর পিছনে রাজনৈতিক কারণ আছে, ব্লক সভাপতি বিশ্বজিতবাবুর মদতেই তাঁরা আমাদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করেন বলে জানতে পেরেছি।’’ তার কারণ হিসেবেও পরেশ বাবুর দাবি, ‘‘দুর্লভবাবুর অনুগামী হওয়াতেই তাঁদের রাগ।’’ যদিও বিশ্বজিতবাবু বিষয়টি রাজনৈতিক নয় বলে দাবি করেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy