E-Paper

ফসলের লোভে জঙ্গলে ‘ঘাঁটি’ হাতির পালের

হাতির দল কোথায়, কখন যাচ্ছে তা নিয়মিত নজরদারি করছে বন দফতর। মঙ্গলবারের রিপোর্ট অনুযায়ী, নাথুয়াতে ১৫টি হাতির দল ছিল, চালসা রেঞ্চে গোটা দশেক হাতির দল ছিল, ডায়ানাতে ছিল আরও দশটি হাতির দল।

অনির্বাণ রায়

শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৭:৩৮
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

কেটে রাখা পাকা ধান, মাঠে বুনে দেওয়া আলু খেতে উত্তরবঙ্গের জঙ্গলে এসে ডেরা করেছে শখানেক হাতি। জলপাইগুড়ির বিভিন্ন বনাঞ্চলে ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে হাতির দল থিতু হয়েছে। বনকর্মীরা দাবি করছেন, ভিন‌্ জেলা বা রাজ্য থেকে আসা এই হাতির দলের নজর, ফসলের খেতের দিকে।

পুজোর পর থেকে ধান পাকতে শুরু করেছে। কোথাও কোথাও জলদি আলু চাষ হয়। সেখানে আলু ফলে গিয়েছে। এ ছাড়া, শীতের আনাজ ভরপুর ফলে রয়েছে মাঠে। সে সবের লোভেই হাতির দল এখন জলপাইগুড়ির বনাঞ্চল ছেড়ে নড়ছে না। বন দফতরের দাবি, সারা বছরই পরিয়ায়ী হাতির দল জলপাইগুড়ির বৈকুন্ঠপুর, চালসা, ডায়না, বিন্নাগুড়ির নানা জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে যাতায়াত করে। চলতে চলতে দিন কয়েক থামে, ফের চলে। বনকর্মীদের দাবি, সেই পুজোর পরে জলপাইগুড়ির জঙ্গলে এসে পড়া পরিযায়ী হাতির দলের আর নড়াচড়া নেই। মাঠে যতদিন ফসল থাকবে, হাতির দল সেখানেই থাকবে বলে দাবি বনকর্মীদের। এই হাতির দলকে লোকালয়ে ঢুকে পড়া আটকাতে বিশেষ বাহিনী গড়েছে বন দফতর। জলপাইগুড়ি বনবিভাগের ডায়না রেঞ্চে গড়া হয়েছে একটি দ্রুত সক্রিয় হতে পারে এমন দল। গত অক্টোবর মাসে দল গড়া হয়েছে। চার মাস দলটি কাজ করবে। দলে নেওয়া হয়েছে গ্রামবাসীদেরও।

হাতির দল কোথায়, কখন যাচ্ছে তা নিয়মিত নজরদারি করছে বন দফতর। মঙ্গলবারের রিপোর্ট অনুযায়ী, নাথুয়াতে ১৫টি হাতির দল ছিল, চালসা রেঞ্চে গোটা দশেক হাতির দল ছিল, ডায়ানাতে ছিল আরও দশটি হাতির দল। এ ভাবে লাটাগুড়ির, রামসাই, বৈকুন্ঠপুর মিলিয়ে শখানেক হাতির দল ঘুরে বেড়াচ্ছে পাকা ধান, আলুর লোভে। বনকর্মীরা জানিয়েছেন, সদ্য শুরু হওয়া শীতের জঙ্গলে খাবারের অভাব নেই, নানা রকমের ফল রয়েছে এখন। গাছের পাতাও রয়েছে। সে সব রোজকারের খাওয়ার ফেলে হাতির দলের নজর এখন পাকা ধানের খেতে। মাঠে ধান না পেয়ে হাতির দল লোকালয়ে ঢুকে বাড়িতে চালের ভাঁড়ার, আটা শেষ করে দিচ্ছে। বনকর্মীদের দাবি, হাতির দল হেঁটে হেঁটে ক্লান্ত হয়ে পড়লে কোনও জঙ্গলে এক-দু’দিন জিরিয়ে চলে যায়। কিন্তু এখন খেতে পাকা ধান দেখে, পরিযায়ী হাতির দল এখন দিন কয়েকের জন্য থিতু হয়েছে বলে দাবি।

জলপাইগুড়ির বনাধিকারিক বিকাশ বিজয় বলেন, “অন্তত শখানেক হাতি রয়েছে জলপাইগুড়ি বন বিভাগের এলাকায়। এরা সবই পরিযায়ী হাতি। লোকালয়ে বুনোদের ঢুকে পড়া আটকাতে একটি নতুন বাহিনীও তৈরি হয়েছে। যত দিন খেতে পাকা ফসল থাকবে, কড়া নজরদারি চলবে।”

কিছু দিন আগে, জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া তিস্তার চরে শাবক-সহ হাতির দল দাঁড়িয়ে ছিল। সে দলটিও ফসলের লোভেই জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া ধান খেতে ঢুকে পড়েছিল বলে বন দফতরের দাবি।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Jalpaiguri

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy