অজয় এডওযার্ড (বাঁ দিকে), রাহুল গান্ধী (ডান দিকে) —ফাইল চিত্র।
মন ঘিসিংয়ের জিএনএলএফের সঙ্গী কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপি, অনীত থাপার প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার সঙ্গী রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল। এ বার পাহাড়ে তৃতীয় শক্তি হিসাবে সামনে আসার চেষ্টা শুরু করল অজয় এডওয়ার্ডের হামরো পার্টি। অজয় আপাতত সঙ্গী হয়েছেন কংগ্রেসের। দলীয় সূত্রের খবর, পাহাড়ের রাজনীতি, প্রশাসনের ক্ষেত্রে কংগ্রেসের ইতিহাস, কাজকে সামনে রেখেই জাতীয় রাজনীতিতে দিল্লি অবধি যোগসূত্র বজায় রাখার কাজে নেমেছেন অজয়। আপাতত রাহুলের সঙ্গী হয়ে নাগাল্যান্ডে ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’য় রয়েছেন তিনি।
রাহুলকে ‘দেশের ভবিষ্যৎ’ বলেছেন অজয়। ‘ভারত জোড়ো’র সভা মঞ্চ থেকে অজয় বিজেপিকে একহাত নিয়ে গোর্খাদের লড়াইয়ে শামিল হওয়ার কথা বলেছেন। যা শুনে পাহাড়ের বহু নেতাই বলছেন, দার্জিলিং পাহাড়ের শাসক বা বিরোধীরা দলগুলি বরাবর আঞ্চলিক দল হিসাবে নিজেদের দাবি করলেও, সকলেই রাজ্য বা কেন্দ্রের দলের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলতে চায়। বিশেষ করে, দিল্লির রাজনীতির সঙ্গে জুড়ে থাকাটা সুবাস ঘিসিং পাহাড়কে শিখিয়ে গিয়েছেন। সে ঐতিহ্যই পাহাড়ে চলছে বলে নেতাদের বক্তব্য।
অজয় কংগ্রেসে যোগ দেবেন এবং কংগ্রেসকে লোকসভায় সমর্থন করা হয়েছে বলে দার্জিলিং ও কালিম্পঙে চাউরও হয়। অজয়কে তাই বলতে হয়েছে, তিনি কংগ্রেসে যোগ দেননি। হামরো পার্টির সভাপতি বলেন, ‘‘ভারত জোড়ো যাত্রায় মানুষের দাবি তোলা হচ্ছে। আমরাও গোর্খাদের ন্যায়ের কথা বলে শামিল হয়েছি। এর সঙ্গে ভোট রাজনীতির সম্পর্ক নেই।’’
গত কয়েক বছর ধরে পাহাড়ের রাজনীতিতে জিএনএলএফের সংগঠন ‘দুর্বল’ হলেও তারা বিজেপির হাত ধরে রেখেছে। ভোট-লড়াই থেকে শুরু করে দলীয় কর্মসূচিতে দল বিজেপির সব বিষয়ে সমর্থন, সাহায্য পেয়েছে। দলের সেক্রেটারি জেনারেল নীরজ জিম্বা বিজেপির প্রতীকে জিতে বিধায়ক হয়েছেন। দিল্লিতেও দলের যোগাযোগ বেড়েছে। জিএনএলএফ তাই বিজেপির সঙ্গেই এগোতে চাইছে।
তেমনই অনীত থাপা বিমল গুরুংয়ের হাত ছেড়ে ২০১৭ সালে তৃণমূলের হাত ধরেন। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের অভিমত, আপাতত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাহাড়কে অনেকটাই অনীতের ‘চোখ’ দিয়ে দেখছেন। দ্বিস্তরীয় পঞ্চায়েত, পুরসভা এবং জিটিএ-র ক্ষমতায় বসে শুধু নয়, নবান্ন থেকে রাজ্য পুলিশের অন্দরে দলের যোগাযোগ তৈরি হয়ে গিয়েছে। সেখানে পাহাড়ের উল্লেখযোগ্য শক্তি হলেও হামরো পার্টি আপাতত কোনও দিকেই ছিল না। শেষে, অজয়ের নেতৃত্বে আপাতত তারা কংগ্রেস শিবিরে ঝুঁকেছে। কংগ্রেস কেন্দ্রে ক্ষমতায় এলে তো কথাই নেই। বিরোধী আসনেও হামরো পার্টির দিল্লি-যোগ পোক্তই থাকবে।
পাহাড়ের পার্বত্য পরিষদ থেকে ‘গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ (জিটিএ) কেন্দ্রে কংগ্রেসের সরকার থাকাকালীন তৈরি। নেপালি ভাষার স্বীকৃতি কংগ্রেসের সরকার দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী ‘পাহাড়ের অভিভাবক’ ছিলেন। রাহুল সে জায়গায় বসবেন, বলে তাঁদের মত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy