কুয়াশায় ঢাকা পাহাড়। ছবি: সংগৃহীত
সকাল থেকে ঘন কুয়াশা আর ঝিরিঝিরি বৃষ্টি। ফগলাইট জ্বালিয়ে চলছে গাড়ি। মঙ্গলবার ভোর থেকে দার্জিলিঙের আবহাওয়ার এমন পরিস্থিতিতে তাপমাত্রাও নেমেছে অনেকটাই। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ঘোরাঘুরি করেছে ৬-৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে। কিন্তু ফেব্রুয়ারি শেষ হলেও পাহাড়ে বরফের দেখা মিলছে না। সেখানে লাগোয়া উত্তর এবং পূর্ব সিকিমের কিছু অংশে শিলাবৃষ্টি তো বটেই, তুষারপাতও হয়েছে বলে খবর। কিছু রাস্তা বন্ধও রয়েছে। ছাঙ্গু বা নাথুলার জন্য পারমিট পাননি পর্যটকেরা। আবহাওয়াবিদেরা জানিয়েছেন, ভূমধ্য সাগরের দিক থেকে আসা পশ্চিমী ঝঞ্ঝা এই এলাকায় পরপর ঢুকছে। এর প্রভাবে প্রবল নিম্নচাপে বৃষ্টি বা শিলাবৃষ্টি চলবে। সমতল শিলিগুড়িতে অবশ্য সোমবার গভীর রাতে ছিটেফোঁটা বৃষ্টি হয়েছে।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি তুষারপাত না হলেও দার্জিলিং, কালিম্পং জেলার বহু অংশ ঢেকে গিয়েছিল শিলাবৃষ্টির সাদা শিলায়। বরফের চাদরের মত মুড়ে যায় রাস্তাঘাট, টিনের চাল। আবহাওয়ার অবস্থা দেখে বরফের আশাও করেছিলেন পাহাড়বাসী। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের সিকিমের আধিকারিক গোপীনাথ রাহা অবশ্য জানান, জম্মু কাশ্মীরের দিক থেকে আসা পশ্চিম ঝঞ্ঝা এই অঞ্চলে এসে গিয়েছে। আরও কয়েকদিন অবধি পরিস্থিতি একই থাকবে। তার পরে ওই নিম্নচাপ অসমের দিকে চলে যাবে। তবে তুষারপাতের কিছু দেখা যায়নি।
২০০৭ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি বরফে মুড়েছিল পাহাড়। এর পরে ২০০৮ সালের ২৬ জানুয়ারি। দার্জিলিং শহর, ঘুম সাদা বরফে ঢেকে যায়। গত ২০১২ সাল টাইগারহিল ঢেকেছিল সাদা চাদরে। আবহাওয়াবিদেরা জানিয়েছেন, প্রতি বছরই পাহাড়ের উপরের দিকের অংশে বরফ পড়ে। সিকিমে তো বটেই দার্জিলিঙের সান্দাকফু, ফালুট ও মানেভঞ্জনে বরফ পড়ার খবর মেলে। কিন্তু ফেব্রুয়ারি শেষ হলেও টাইগার হিল বা উঁচু এলাকায় এবারও বরফ পড়েনি। এখনও আশায় আছেন পাহাড়বাসী। তাঁদের কয়েকজন জানান, দার্জিলিং, কালিম্পং লাগোয়া সিকিমের একাংশ এবারও বরফে মোড়া। শিলাবৃষ্টিও চলছে। এ অঞ্চলেও প্রভাব পড়তেও পারে।
চার দিন আগে উত্তর ও পূর্ব সিকিমের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা বন্ধ ছিল। গ্যাংটক থেকে ছাঙ্গু, বাবা মন্দির বা নাথুলার রাস্তায় ৮ মাইলের পর গাড়ি চলাচল করতে পারেনি। একই অবস্থা ছিল লাচেন ও লাচুং এলাকার। সিকিম পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিনও লাচুং থেকে ইয়ুমথাং এবং থাঙ্গু থেকে গুরুদ্মমার লেক অবধি রাস্তা বন্ধ ছিল। ছোট গাড়িও চলাচল করতে পারেনি। দুই পাহাড়ে অবশ্য এখনও আছেন কিছু দেশ-বিদেশের পর্যটক। পর্যটন সংগঠনের কর্তা রাজ বসু, সম্রাট সান্যালেরা বলেন, ‘‘সিকিম এই সময়টা এমন সাদা চাদরে মুড়েই থাকে। দার্জিলিঙে অবশ্য অনিয়মিত। বরফ পড়লে পর্যটকদের উৎসাহও বাড়ে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy