অনুপস্থিতির জন্য ১৩ জন হাউস স্টাফের বেতন কেটে নেওয়াকে কেন্দ্র করে উত্তরবঙ্গ ডেন্টাল কলেজে চিকিৎসকদের একটা বড় অংশের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ সামনে এসে পড়েছে। বুধবার ক্ষুব্ধ হাউস স্টাফরাই অভিযোগ তোলেন সিনিয়র চিকিৎসকরা অনেকেই মাসের বেশিরভাগ দিন কলেজে আসেন না। অনেকে কলকাতায় চলে যান। হাউস স্টাফদেরকেই হাসপাতালের সিংহভাগ কাজ সামলাতে হয়। তাঁদের বেতন কাটা হলে চিকিৎসক, সিনিয়র চিকিৎসকদের বেতন অনুপস্থিতির জন্য কেন কাটা হবে না সেই প্রশ্ন তুলেছেন হাউস স্টাফরা।
অভিযোগ, অধ্যক্ষই বেলা দেড়টার পর কলেজে থাকেন না। তিনি চেম্বারে রোগী দেখতে চলে যান। এ দিন কলেজ ক্যাম্পাসে হাউস স্টাফরা বিক্ষোভ দেখান। তাদের দাবি, যাদের বেতন কাটা হয়েছে ওই হাউস স্টাফরা ছুটির আবেদনও জমা করেছিলেন। সেই মতো বেতন কাটার কথা নয়। প্রাপ্য ওই টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে দাবি তুলে চিকিৎসকদের কলেজ থেকে বার হতে বাধা দেন। কলেজের গেটে জড়ো হয়ে চিকিৎসকদের আটকে দেন। পরে সন্ধে সাতটা নাগাদ ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বাদল সরকার তাদের মুচলেকা দেন, বেতন কাটার বিষয়ে যে ভুল হয়েছে তা শুধরে দিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর পর শিক্ষক-চিকিৎসকদের ছাড়া হয়।
আন্দোলনের জেরে বহিবির্ভাগে চিকিৎসা পরিষেবা কিছুটা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। অনেক রোগী চিৎকার চেঁচামেচি শুনে ঘাবড়ে যান। বহিবির্ভাগে দুই তিন জন হাউস স্টাফ রোগী দেখছিলেন। বাকিরা দাবিদাওয়া নিয়ে হইচই করতে থাকেন। অধ্যক্ষ সৌমেন চক্রবর্তী ছুটিতে থাকায় দায়িত্বে রয়েছেন বাদল সরকার। হাউস স্টাফরা তাকে ঘিরে ক্ষোভ দেখাতে থাকেন। বাদলবাবু বলেন, ‘’১৩ জন হাউস স্টাফের বেতনের একাংশ টাকা নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে হাউস স্টাফদের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা হয়। পরে তাঁদের লিখে দেওয়া হয়েছে অধ্যক্ষ এসে তাদের সমস্যার বিষয়টি সমাধানে উদ্যোগী হবেন।’’ চিকিৎসকদের একাংশের অনিয়মের অভিযোগের বিষয়টিও অধ্যক্ষকে বাদলবাবু এ দিন ফোনে জানিয়ে দিয়েছেন বলে জানান। সৌমেনবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ছুটিতে রয়েছেন। কাজে যোগ দিয়ে বিষয়টি দেখবেন।
কলেজেরই কর্মী, আধিকারিকদের একাংশের অভিযোগ, জুনিয়র এবং সিনিযর চিকিৎসকদের মধ্যে যোগসাজশ রয়েছে। দুই পক্ষই নিয়মিত ডেন্টাল কলেজ হাসপাতালে আসেন না। অথচ পরে তারা হাজিরা খাতায় বিষয়টি ঠিক করে নেন বা তাদের হয়ে প্রক্সি হাজিরা দিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। এদিন কয়েকজন হাউস স্টাফের বেতন কেটে নেওয়ার ঘটনায় চাপ বাড়াতেই চিকিৎসকদের অনিয়ম নিয়ে হাউস স্টাফরা সরব হয়েছেন। উত্তরবঙ্গ ডেন্টাল কলেজের প্রগ্রেসিভ জুনিয়র ডক্টর অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শেখ গোলাম মুরশিদ বলেন, ‘‘ছুটির আবেদন করার পরও হাউস স্টাফদের অনেকের বেতন কেন কাটা হল বুঝতে পারছি না। তা ছাড়া মাসের ১৫ তারিখে বেতন মিলছে। তাতেও অনেকের বেতন কাটা হয়েছে। অথচ চিকিৎসকরা দেদার ফাঁকি দিচ্ছেন। এটা চলতে পারে না। সে কারণে সমস্যা মেটানোর দাবি তুলে ক্যাম্পাসের গেট আটকে রাখা হয়েছিল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy