অগ্নিদগ্ধ শিশুর মৃত্যুকে ঘিরে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ উঠল মালদহ মেডিক্যালে। সোমবার ভোরে নন্দিনী চৌধুরী নামে তিন বছরের ওই শিশুকন্যার মৃত্যু হয়। তার বাবা, রতুয়ার দেবীপুরের বাসিন্দা অশোক চৌধুরীর অভিযোগ, শিশুটিকে চিকিৎসা না করে ফেলে রাখা হয় ঘণ্টার পর ঘণ্টা। এমনকী, শিশুটির স্যালাইন খুলে গেলেও কর্তব্যরত নার্সেরা তা লাগিয়ে না দিয়ে তার আত্মীয়দের সঙ্গে অভব্য আচরণ করেন বলেও অভিযোগ।
পেশায় আম ব্যবসায়ী অশোকবাবু কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তার ভিত্তিতে তদন্ত কমিটি গড়া হয়েছে বলে জানান হাসপাতালের সুপার অমিতকুমার দাঁ। তিনি বলেন, ‘‘অভিযোগের ভিত্তিতে ডেপুটি সুপারের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। রিপোর্টে গাফিলতি প্রমাণিত হলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার দুপুরে খেলতে গিয়ে বাড়ির উনুনে ডান পা ঢুকে যায় নন্দিনীর। তার পরই তাকে স্থানীয় গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে শিশুটির পায়ের ৩৬ শতাংশ পুড়ে যাওয়ায় ওই হাসপাতালের চিকিৎসকেরা স্থানান্তরিত করেন মালদহ মেডিক্যালে। সেখানে বার্ন ইউনিটে রেখেই শিশুটির চিকিৎসা চলছিল। কিন্তু বাচ্চাটি বিকেল পাঁচটা নাগাদ স্যালাইনের নলটি খুলে ফেলে। সেই সময় কর্তব্যরত নার্সদের বলা হলে এক জন গিয়ে তা লাগিয়েও দেন।
কিন্তু ঘণ্টাখানেক বাদে শিশুটি ফের স্যালাইনের নল খুলে ফেলে। এ বারে নার্সদের অনুরোধ করলে তাঁরা আর গা করেননি বলে অভিযোগ উল্টে তাঁরা ওআরএস খাওয়ানোর পরামর্শ দেন। তার পর থেকেই শিশুটির শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। রাত সাড়ে দশটা নাগাদ তাকে একটি ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়। তাতেও শেষ পর্যন্ত তাকে বাঁচানো যায়নি। ভোর চারটে নাগাদ তার মৃত্যু হয়।
এই ঘটনায় শোকাহত নন্দিনীর পরিবার নার্সদের নামে লিখিত অভিযোগ জানানোর সিদ্ধান্ত নেন। নন্দিনীর মা সোনালিদেবী বলেন, ‘‘আমি অভিযুক্ত ওই নার্সদের শাস্তি চাই। তাঁদের জন্যই আমার চোখের সামনে মারা গেল ছোট্ট মেয়েটা।’’
হাসপাতালের চিকিৎসকদের একাংশেরও বক্তব্য, দেহের পোড়া অংশ শুকনোর সময়ে শরীরে ফ্লুইড বা তরলের ঘাটতি হয়। স্যালাইন চালিয়ে যাওয়াটা তাই জরুরি।