মালদহের ইংরেজবাজার পুরসভার সমস্ত ওয়ার্ডেই সাত মাস ধরে সরকারি ভাতা থেকে উপভোক্তারা বঞ্চিত রয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। শনিবার দুপুরে সাংবাদিক বৈঠক করে ইংরেজবাজার পুরসভার চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরীর বিরুদ্ধে পরিকল্পিত ভাবে উপভোক্তাদের ভাতা আটকে দেওয়ার অভিযোগ তুললেন এলাকারই বিধায়ক তথা কাউন্সিলর নীহাররঞ্জন ঘোষ। এমনকী, কৃষ্ণেন্দুবাবুর বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে চিঠি পাঠাবেন বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
নীহাররঞ্জনবাবু জানান, সাত মাস ধরে ইংরেজবাজার পুরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে বার্ধক্য ভাতা, বিধবা ভাতা এবং প্রতিবন্ধী ভাতা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন উপভোক্তারা। তবুও কোন হেলদোল নেই পুরসভার চেয়ারম্যানের। তিনি বলেন,‘‘বিধানসভা নির্বাচনে অধিকাংশ ওয়ার্ডেই ভরাডুবি হয়েছে। তাই সাধারণ মানুষের উপরে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য প্রাপ্য ভাতা বন্ধ করে দিয়েছেন তিনি। চেয়ারম্যান দ্রুত কোন পদক্ষেপ না নিলে আমি একজন বিধায়ক হিসেবে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিঠি পাঠাব।’’
যদিও নীহাররঞ্জন বাবুর অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ইংরেজবাজার পুরসভার চেয়ারম্যান তথা প্রাক্তন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী। তাঁর যুক্তি, নিয়মানুযায়ী প্রতি বছরই লাইভ সার্টিফিকেট জমা দিতে হয় পুরসভায়। আর সেই লাইভ সার্টিফিকেট দেখার পরই ভাতা দেওয়া হয় উপভোক্তাদের। এই সার্টিফিকেট দেখানোর পরই ভাতা পেয়ে যাচ্ছেন উপভোক্তারা। কৃষ্ণেন্দুবাবু বলেন, ‘‘নির্বাচনের সময় ভাতা দিয়ে ভোটারদের প্রভাবিত করা হচ্ছে বলে কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছিল বিরোধীরা। তাঁদের বাধাতেই উপভোক্তারা সরকারি ভাতা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। আর এখন ভোট বৈতরনী পার হয়ে গিয়ে আমাদের উপরে দায় চাপানো হচ্ছে।’’
ইংরেজবাজার পুরসভার অধীনে ২৯টি ওয়ার্ড রয়েছে। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় ২০ হাজার উপভোক্তা বিধবা, বার্ধক্য এবং প্রতিবন্ধী ভাতা পান। প্রতিটি ওয়ার্ডেই হাজার দেড়েক করে উপভোক্তা রয়েছেন। এখানে বয়স্কদের ৪০০, বিধবা এবং প্রতিবন্ধীদের ৬০০ টাকা করে দেওয়া হয়। এছাড়া ৮০ বছরের উর্দ্বে বয়স্কদের ১০০০ টাকা করে দেওয়া হয়। পুরসভা থেকে উপভোক্তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি টাকা দেওয়া হয়। গত ডিসেম্বর মাস থেকেই উপভোক্তারা সরকারি ভাতা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন।
ভাতা না পেয়ে পুরসভার বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দেন ইংরেজবাজারের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের হাসিনা বেওয়া, ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের গৌরী রায় প্রমূখ। তাঁরা বলেন, ‘‘এই বিধবা ভাতার উপরেই আমরা নির্ভর করি। প্রতি মাসের টাকা দিয়ে আমাদের চিকিৎসার খরচ চলে। এছাড়া বাড়ির লোকেদেরও সুবিধে হয়। দীর্ঘদিন ধরে আমরা ভাতা পাচ্ছি না। স্থানীয় কাউন্সিলরদের কাছে গেলে তাঁরা পুরসভার কাছে কিংবা ব্যাঙ্কে যেতে বলেন। তারপরেও আমরা ভাতা পাচ্ছি না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy