Advertisement
২১ মে ২০২৪

স্বামীকে বেঁধে পুজো দেখতে ধূপগুড়িতে

গত ২৯ জুন জলপাইগুড়ির কদমতলার ভাড়া বাড়িতে উত্তমবাবুর মৃত্যু হয়৷ অভিযোগ ওঠে, উত্তমবাবুর স্ত্রী লিপিকা ও লিপিকার প্রেমিক অনির্বাণই তাকে খুন করে৷ ঘটনার পরদিন গ্রেফতার হয় লিপিকা৷

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৮:০০
Share: Save:

ঘরের স্বামীকে বেঁধে রেখে কালীপুজো দেখতে প্রেমিক অনির্বাণের সঙ্গে ধূপগুড়ি গিয়েছিল লিপিকা। এলআইসির ডেভলপমেন্ট অফিসার উত্তম মোহান্ত খুনের ঘটনার তদন্তে এমনই জানতে পারল পুলিশ৷ পুলিশের দাবি, জেরায় অনির্বাণই স্বীকার করেছে, উত্তম মোহান্তকে বেঁধে রেখে তারা ধূপগুড়িতে কালীপুজো দেখতে গিয়েছিল৷

গত ২৯ জুন জলপাইগুড়ির কদমতলার ভাড়া বাড়িতে উত্তমবাবুর মৃত্যু হয়৷ অভিযোগ ওঠে, উত্তমবাবুর স্ত্রী লিপিকা ও লিপিকার প্রেমিক অনির্বাণই তাকে খুন করে৷ ঘটনার পরদিন গ্রেফতার হয় লিপিকা৷ গত সপ্তাহে ধরা পড়ে অনির্বাণও৷ তাদের জেরা করেই লিপিকা ও অনির্বাণ উত্তমবাবুর ওপর কী পরিমাণ অত্যাচার চালাতো তা জানতে পারে পুলিশ। দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখার সঙ্গে তারা তাঁকে মারধরও করত। কিন্তু এ দিন অনির্বাণকে জেরা করে পুলিশ কর্তাদের চোখ কপালে ঠেকে যায়৷

পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন সন্ধ্যায় প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে অনির্বাণকে জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার আইসি বিশ্বাশ্রয় সরকারের ঘরে নিয়ে গিয়ে জেরা করা হয়৷ সেখানে আইসি ছাড়াও অন্য পুলিশ আধিকারিকরাও ছিলেন৷ পুলিশ সূত্রের খবর, ওই জেরাতেই অনির্বাণ পুলিশকে জানায়, গত বছর কালী পুজোর সময় উত্তমবাবুকে ঘরের মধ্যে বেঁধে রেখে তারা ধূপগুড়িতে পুজো দেখতে গিয়েছিলেন৷

পুলিশ জানিয়েছে, ২০১৫ সালে প্যান কার্ড বানাতে গিয়েই অনির্বাণের কাছাকাছি আসে লিপিকা। প্রথমে লিপিকা ও পরে শ্বেতার প্যানকার্ড বানিয়েছিল অনির্বাণ৷ লিপিকার ক্ষেত্রে প্যানকার্ড বানাতে ২৫০ টাকা ও শ্বেতার ক্ষেত্রে ২০০ টাকা নেয় সে৷ তার কিছুদিন পর থেকেই সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে তারা৷ অনির্বাণ পুলিশকে জানিয়েছে, উত্তমবাবুর পরিচিত এলআইসির এজেন্টরা দেখে ফেলতে পারেন ভেবে জলপাইগুড়ি শহরে কোথাও ঘুরতে যাওয়া কখনই পছন্দ ছিল না লিপিকার৷ তবে কখনও কখনও তারা তিস্তার চরে সময় কাটাতে গিয়েছেন৷ তবে ঘুরতে গেলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তারা জলপাইগুড়ির বাইরেই কোথাও গিয়েছেন৷ যার মধ্যে ছিল শিলিগুড়িও৷ তবে উত্তমবাবু সম্পর্কটা জেনে ফেলার পর তার আর প্রয়োজন হয়নি৷ তখন উত্তমবাবুর উপস্থিতিতেই অনির্বাণ তার বাড়িতে যেত৷

পুলিশ জানিয়েছে, মৃত্যুর আগে উত্তমবাবু বুঝতে পেরেছিলেন, অনির্বাণকে পছন্দ করলেও সম্পত্তির জন্যই লিপিকা তার সঙ্গে রয়েছে৷ তাই মাঝে মধ্যেই পরিচতদের সামনে তাকে বলতে শোনা গিয়েছিল– ‘‘টাকার জন্যই আমায় সবাই ভালবাসে৷’’ পুলিশও প্রথম থেকেই বলে আসছে সম্পত্তির জন্যই এই খুন৷ পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘দু’জনকে জেরা করেও তেমন ইঙ্গিতই মিলছে৷’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE