সেবক রোডে পুড়ে যাওয়া হোটেলের সামনে বাসিন্দাদের ভিড়। — বিশ্বরূপ বসাক
সন্ধ্যা নামলেই আড্ডা জমে ওঠে। দিনে যে গুলি রাস্তার ধারের ছোটখাট ভাতের হোটেল, বিকেলের পর তার ভোল বদলে যায়। খদ্দের আসতেই আড়ালে রাখা মদের বোতল বের করে দেওয়া হয় টেবিলে। কোথায় পর্দা দিয়ে আড়াল করে দেওয়া হয়। এক দিকে চলে মাছ ভাতের হোটেল, আর ভিতরে পর্দার আড়ালে মদের ব্যবসা।
রাত বাড়তেই পর্দা সরে যায়। গোটা হোটেলেই মদের ঠেক জমে ওঠে। সেবক রোড জুড়েই রাস্তার ধারে থাকা গুমটি হোটেলগুলির সর্বত্রই একই ছবি। পুলিশ প্রশাসনে কর্মী আধিকারিকদেরও তা অজানা নয়। কিন্তু জেনে বুঝেও তারা হাত গুটিয়ে কেন সেই প্রশ্ন উঠেছে। পুলিশের তরফে অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুলিশের লোকজনও অনেক সময়ই আসেন মদের ঠেকে। তাদের অনেকে হোটেলগুলি থেকে মাসহারাও তোলেন। পুলিশেই যেখানে মদত দেয় সেখানে এমন কারবার তো চলবেই। সেবক রোডের ধারে থাকা শতাধিক গুমটি হোটেল, চায়ের দোকানে এ ধরনের কারবার চলে বলে অভিযোগ। এমনকী ভক্তিনগর থানার আশোপাশে এমন গুমটি হোটেলগুলিতেও এ ধরনের কারবার নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আবগারি দফতরের শিলিগুড়ির দায়িত্বে থাকা ওসি নীলোৎপল হালদার বলেন, ‘‘ বিস্তারিত খোঁজ নিয়ে পুলিশকে বিষয়টি জানানো হবে। প্রয়োজনে অভিযান চালানো হবে।’’
রবিবার রাতে সেবক রোড়ের বন্ধ একটি গুমটি হোটেলের ভিতরে আগুনে পুড়ে দুই শিশুর মৃত্যুর পর এই মদের কারবার চলার বিষয়টি সামনে এসেছে। খাবারের ওই হোটেলে মদের ঢালাও কারবার চলত বলে অভিযোগ। হোটেলের কাজে রাখা ওই দুই নাবালক কর্মীকে দিয়ে মদের ব্যবসাও চালানো হত বলে অভিযোগ। বস্তুত, সেবক রোড জুড়েই গুমটি দোকানগুলিতে মদের কারবার নিয়ে সরব হয়েছেন সিপিএম, তৃণমূল কাউন্সিলররাও। ৪২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা পুরসভার চেয়ারম্যান দিলীপ সিংহের অভিযোগ, গুমটি হোটেলগুলিতে এ ধরনের অবৈধ মদের ব্যবসা নিয়ে তাঁর কাঁছেও নানা অভিযোগ রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘‘পুলিশের চোখের সামনে হোটেলগুলিতে মদের রমরমা কারবার চলছে। অবিলম্বে এ সব বন্ধ করতে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’’ ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর রবি রায় জানিয়েছেন, তাঁদের তরফেও পুলিশকে অভিযোগ জানানো হবে। হোটেলগুলিতে মদের কারবার বন্ধ করতে পুলিশকেই সক্রিয় হতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy