প্রতীকী চিত্র।
এই নিয়ে দ্বিতীয় বার আমি ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে চলেছি। কিন্তু ভোটের আগে আমার কয়েকটি কথা বিশেষ ভাবে মনে হয় বলা দরকার। যে হেতু নির্বাচনে আমরা গণতান্ত্রিক অধিকারে প্রার্থীদের নির্বাচন করি, তাই সেই অধিকার প্রয়োগের আগে আমাদের দেখে নেওয়া দরকার গণতন্ত্রের অন্যতম শর্তগুলো বজায় থাকছে কিনা। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় অধিকার বাকস্বাধীনতা।
কিন্তু পুলওয়ামা নিয়ে আমার সঙ্গে যা হয়েছে, তাতে আমি বলতে বাধ্য হচ্ছি যে, একটা অদ্ভুত সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি আমরা। কোনও নাগরিকের কোনও কথা কারও পছন্দ না হলেই তাকে দেশদ্রোহীর তকমা লাগিয়ে দিতে দু’মিনিট সময় নেওয়া হয় না। বিক্ষোভের জেরে আমাকে বাড়ি পর্যন্ত ছাড়তে হয়েছিল। এমন একটা গণতন্ত্রে আমরা বাস করছি, যেখানে সাধারণ মানুষ তাঁদের নিজের নিজের কথা বলতে ভয় পাচ্ছেন, পাছে তাঁকে আক্রমণের শিকার হতে হয়, নির্দ্বিধায় বিরোধী তকমা সেঁটে দেওয়া হয় তাঁর গায়ে। তার পরেও আক্রমণকারীরা কিন্তু প্রকাশ্যেই ঘুরে বেড়ায়। এ রকম ভয়ের আবহে বাস করে কোন গণতন্ত্রের কথা বলছি আমরা?
এ সবের জন্য আমি দৃঢ় ভাবে বিশ্বাস করি, মানুষের বুনিয়াদি শিক্ষা থেকে উচ্চশিক্ষার অধিকার, সব ক্ষেত্রেই আরও বেশি করে বরাদ্দ রাখা উচিত। যাঁরা এই দিকটায় নজর দিচ্ছেন, তাঁদেরই আনা উচিত ক্ষমতায়। আমার মনে হয়, নিজের এবং অন্যের অধিকার সম্বন্ধে সচেতন থাকার জন্য মানুষের শিক্ষিত হওয়া প্রয়োজন।
কোনও শিক্ষিত দেশে এ রকম বাড়িতে গিয়ে আক্রমণ করা হয় না। সেখানে কারও বিরুদ্ধে কিছু করতে হলে আগে পেশিশক্তি প্রয়োগ না করে আইনি পথে হাঁটার রাস্তা নেন প্রতিবাদীরা। আমাদের দেশেও এই অভ্যাস গড়ে তোলার একমাত্রা রাস্তা হল শিক্ষা। তাই আরও বেশি করে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি হওয়া প্রয়োজন। সব বেকারকে চাকরি দেওয়ার ক্ষমতা সরকারের নাও থাকতে পারে। কিন্তু যথাযথ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে মানুষ যাতে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে, সেই সুযোগটুকু করে দেওয়ার দায়িত্ব অবশ্যই সরকারের।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
শিক্ষা আর স্বাস্থ্য এই দু’টি বিষয় নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো ভোটের আগে ইস্তাহারে যা যা বলে, ক্ষমতায় আসার পরে তার কতটা পূর্ণ হয়, তা আমাদের যাচাই করে নিতে হবে। অনেক বিদেশি বন্ধুদের সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় কথা হয়। তাঁরা যখন শোনেন, আমাদের এখানে স্বাস্থ্য পরিষেবা নিতে স্বচ্ছলরা বেসরকারি হাসপাতালকে অগ্রাধিকার দেন, তাঁরা আশ্চর্য হয়ে যান। আমাদের রাজ্যে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যে উন্নতি হচ্ছে। কিন্তু তা প্রয়োজনের তুলনায় কম। বুনিয়াদি পরিষেবার অভাব না মিটলে আমরা জনসংখ্যা, বেকারত্বের সঙ্গে লড়ে কূল পাব না।
(লেখক: দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়
অনুলিখন: শান্তশ্রী মজুমদার)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy