Advertisement
E-Paper

আশা নিয়ে দীর্ঘ লাইন

আফরাজুল গিয়েছিলেন রাজস্থানে। আবার আলিপুরদুয়ারের মধু সরকার কাজ করতেন গুজরাতে। মালদহ থেকে এমনই শয়ে শয়ে মানুষ কেরল, অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশা-সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কাজে যান। কেউ টাওয়ারের কাজ করেন।

অভিজিৎ সাহা

শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:১২
অপেক্ষা: লাইনে রাজ্যে ফিরে আসা শ্রমিকেরা। —নিজস্ব চিত্র।

অপেক্ষা: লাইনে রাজ্যে ফিরে আসা শ্রমিকেরা। —নিজস্ব চিত্র।

আফরাজুল খানের হত্যাকাণ্ডের পরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছিল মালদহের বিভিন্ন এলাকায়। তার পরেই মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ্য সমাবেশ থেকে ডাক দিয়েছিলেন ভিন রাজ্যে কাজ করা এ রাজ্যের শ্রমিকদের প্রতি, আপনারা ফিরে আসুন। রাজ্য আপনাদের কাজ দেবে। এর পরে আরও দু’একটি রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনা আতঙ্ক আরও বাড়িয়ে দেয়। এরই প্রতিফলন এখন রোজ দেখা যাচ্ছে জেলা প্রশাসনের দফতরে। কাজ ও অনুদান চেয়ে প্রতিদিনই কয়েক শো মানুষ আবেদনপত্র জমা দিচ্ছেন। সমর্থন প্রকল্পের আওতায় না থাকা এই জেলায় কী ভাবে এত লোকের কাজের বন্দোবস্ত করা হবে, তা নিয়ে চিন্তা বাড়ছে প্রশাসনের কর্তাদের।

আফরাজুল গিয়েছিলেন রাজস্থানে। আবার আলিপুরদুয়ারের মধু সরকার কাজ করতেন গুজরাতে। মালদহ থেকে এমনই শয়ে শয়ে মানুষ কেরল, অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশা-সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কাজে যান। কেউ টাওয়ারের কাজ করেন। কেউ আবার শ্রমিকের। প্রশাসনের কর্তারাই বলেন, যে কোনও দিন মালদহ টাউন স্টেশনে গিয়ে দাঁড়ালেই দেখা যায়, কত লোক বাইরে কাজে যান! এই শ্রমিকরাই এ বার ঘরে ফিরতে চাইছেন। কাজ চাইছেন। এমন আবেদনপত্র শুধু বৃহস্পতিবারই জমা পড়েছে হাজার দেড়েক। শুক্রবারও জেলা প্রশাসনের দফতরে গিয়ে দেখা গেল লম্বা লাইন।

কিন্তু কেন ফিরতে চাইছেন ওঁরা? গাজলের বৈরগাছি গ্রামের বাসিন্দা সাদেক আলি বলেন, “টাওয়ারের কাজে বছরে দু’বার করে কেরল যাই। সেখানে নানা সমস্যায় পড়তে হয়েছে। স্থানীয় শ্রমিকেরা আমাদের টাকাপয়সা কেড়ে নেয়। প্রতিবাদ করলেই মার।” হবিবপুরের বাসিন্দা করিবল সরকার, প্রফুল্ল চৌধুরীরা বলেন, ‘‘দেড়-দু’মাসের জন্য আমারা ভিন রাজ্যে কাজে যাই। তার মাঝে অসুস্থ হলেও কাজ করতে হয়। কাজ না করলে মজুরি অর্ধেক কেটে নেওয়ার হুমকি দেয় ঠিকাদারেরা।’’

তার পরেও কেন বাইরে যান? গাজলের ভালুপুকুর গ্রামের বাসিন্দা অজয় মুন্ডা বলেন, “একসঙ্গে মোটা টাকা পাওয়া যায়।” অন্যদেরও একই কথা। সাত দিন আগেই অন্ধ্র থেকে বাড়ি ফিরেছেন বামনগোলার বাসিন্দা আরিফ হোসেন। তিনি বলেন, “আফরাজুলের খুনের ঘটনা টিভিতে দেখেছি। ভয়ের চোটে তাই বাড়ি ফিরে এসেছি।” ওড়িশা থেকে ফিরে এসেছেন ইকবাল শেখ। তিনি বলেন, “বাড়ি থেকে ফোনে বলা হচ্ছে, বাইরে থাকতে হবে না। জেলায় বসে বরং রোজগার কর। তাই এ দিন কাজের দাবিতে জেলা প্রশাসনের দারস্থ হয়েছি।”

কী চাইছেন ওঁরা? তাঁদের আবেদন, এককালীন ৫০ হাজার টাকা এবং দু’শো দিনের কাজ। পঞ্চায়েত এবং গ্রামোন্নয়ন দফতরের এক কর্তা বলেন, “ভিন রাজ্যে আমাদের জেলা থেকে কত শ্রমিক যান, সেই তথ্য আমাদের কাছে নেই। এই আবেদনপত্রের মাধ্যমে কিছুটা তথ্য সংগ্রহ করাও হবে।” তাঁর আরও বক্তব্য, “এককালীন ৫০ হাজার টাকার বিষয়টি নিয়ে রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলা হবে।” জেলাশাসক কৌশিক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘একশো দিনের প্রকল্পে ওঁদের জন্য কাজের ব্যবস্থা করা যায় কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

আফরাজুল খান Afrazul Khan মালদহ
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy