Advertisement
০২ মে ২০২৪

উধাও রোদ্দুর, উত্তুরে হাওয়ায় জেলায় কাঁপুনি

রায়গঞ্জের মোহনবাটী হাইস্কুলের আবহাওয়া বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত ভুগোলের শিক্ষক বিশ্বজিৎ রায়ের বক্তব্য, মেঘলা আকাশ ও কুয়াশার জেরে গত বৃহস্পতিবার থেকে জেলায় রোদের দেখা নেই।

শীতার্ত: ঠান্ডা থেকে বাঁচতে চাদরে আশ্রয়, বালুরঘাটে। নিজস্ব চিত্র

শীতার্ত: ঠান্ডা থেকে বাঁচতে চাদরে আশ্রয়, বালুরঘাটে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৫:০৩
Share: Save:

দিনভর রোদের দেখা নেই। সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত কুয়াশায় ঢেকে চারদিক। সেই সঙ্গে কনকনে ঠান্ডা। মাঝেমধ্যে উত্তুরে হাওয়ায় ঠান্ডা বাড়ছে কয়েকগুণ। চার দিন ধরে এমনই আবহাওয়ায় বিপর্যস্ত উত্তর দিনাজপুরের জনজীবন।

রায়গঞ্জের মোহনবাটী হাইস্কুলের আবহাওয়া বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত ভুগোলের শিক্ষক বিশ্বজিৎ রায়ের বক্তব্য, মেঘলা আকাশ ও কুয়াশার জেরে গত বৃহস্পতিবার থেকে জেলায় রোদের দেখা নেই। দিনভর ১০-১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে তাপমাত্রা ঘোরাফেরা করছে। মাঝেমধ্যে উত্তুরে বাতাসে ঠান্ডা আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। তাঁর দাবি, আজ সোমবার থেকে জেলায় রোদের দেখা মিলতে পারে। সোমবার থেকে ধীরে ধীরে তাপমাত্রা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

ওই আবহওয়া বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ১৫ ডিগ্রি। গত শুক্রবার জেলায় এই মরসুমের শীতলতম দিন। ওই দিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

বাসিন্দারা জানিয়েছেন, গত বৃহস্পতিবার থেকে রায়গঞ্জ-সহ জেলার ন’টি ব্লকে দিনভর রোদের দেখা মিলছে না। সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত চারদিক ঘন কুয়াশায় ঢেকে থাকছে। দুর্ঘটনার আশঙ্কায় জেলার বিভিন্ন এলাকার জাতীয় ও রাজ্য সড়কে বাস, ট্রাক-সহ বিভিন্ন যানবাহন ধীর গতিতে চলছে। কনকনে ঠান্ডার জেরে দিনভর দরকার ছাড়া বাসিন্দারা বাড়ি থেকে বের হচ্ছেন না। যাঁরা নানা কাজে বাইরে বের হচ্ছেন, তাঁরা আপাদমস্তক শীতের পোশাকে ঢেকে নিচ্ছেন।

রায়গঞ্জের হাতিয়া ও কৈলাসচন্দ্র রাধারানি বিদ্যাপীঠ হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক গৌতম সিংহ ও উৎপল দত্তের বক্তব্য, গত চার দিন ধরে জেলা জুড়ে ঠাণ্ডার জেরে স্বাভাবিক জনজীবন ব্যাহত হচ্ছে। জেলার বিভিন্ন সরকারি স্কুল বন্ধ থাকলেও বেসরকারি স্কুল খোলা রয়েছে।

রায়গঞ্জের উকিলপাড়া এলাকার প্রবীণ চিকিৎসক শান্তনু দাস বলেন, ‘‘অতিরিক্ত ঠান্ডার জেরে জ্বর, সর্দিকাশি, চর্মরোগ, গলা ব্যথা-সহ শরীরের বিভিন্ন অংশ ফুলে যাওয়ার সমস্যা বাড়ছে।’’

সকাল থেকে কুয়াশায় ঘিরেছে দক্ষিণ দিনাজপুরও। তবে উত্তরের হাওয়া কিছুটা কম থাকায় সীমান্ত শহর বালুরঘাটে এ দিন দুপুর থেকে শীত কিছুটা কম অনুভূত হয়। মাঝিয়ান কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের আবহাওয়া বিভাগ সূত্রে খবর, বালুরঘাটে এ দিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১২.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

বড়দিনের আগে শেষ ছুটির দিন, তার উপরে শীতের আমেজ পেয়ে রবিবার জেলা জুড়ে বিভিন্ন পিকনিক-স্পটে ভিড় জমে। স্থানীয় সূত্রে খবর, দোগাছি, ডাঙা ফরেস্ট, তপনের পাহাড়পুর, গঙ্গারামপুরের কালদিঘি ফরেস্ট এলাকায় দলে দলে চড়ুইভাতির আসর বসে। দিনভর রোদের দেখা মেলেনি। বিকেল ৫টার পরে ফের পারদ নেমে শীত জাঁকিয়ে বসে। সন্ধ্যা থেকে পাড়া-মহল্লার মোড়ে মোড়ে আগুন জ্বালিয়ে তাপ নিতে দেখা যায় বাসিন্দাদের।

এ দিন দিনভর কুয়াশায় ঢেকেছিল মালদহও। সঙ্গে ঠান্ডা বাতাসে কাঁপুনি। মালদহ জেলা জুড়ে আরও কয়েক দিন শৈত্যপ্রবাহ চলবে বলে জানায় জেলার কৃষি দফতরের আবহাওয়া বিভাগ। এ দিকে কুয়াশার চাদরে মোড়া রাস্তাঘাটে দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। তা রুখতে কুয়াশায় দিনেও জাতীয় ও রাজ্য সড়কে আলো জ্বালিয়ে গাড়ি চালাতে প্রচার শুরু করেছে পুলিশ। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, এ দিন জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১০.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এতে খুশি শীতবস্ত্র ব্যবসায়ীরা। ইংরেজবাজার শহরের টাউন হল সংলগ্ন মাঠে শীতবস্ত্রের পসরা বসেছে। সেখানকার এক ব্যবসায়ী রতন সরকার বলেন, ‘‘গত বছর জেলায় সে ভাবে শীত না পড়ায় মন্দা ছিল। এ বার ব্যবসা ভাল হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Winter Malda West Bengal Weather
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE