Advertisement
E-Paper

রেকর্ড ফলনের আশা মালদহের আমে

চৈত্রের বৃষ্টি স্বস্তি দিয়েছে মালদহ জেলার আম চাষিদের। মরশুমে বৃষ্টি হওয়ায় আমের গুণগত মান বাড়বে বলেও দাবি জেলার উদ্যান পালন দফতরের কর্তাদের। একই সঙ্গে তাঁদের দাবি, শোষক পোকার আক্রমণ কমবে। ফলে চলতি বছর আমের উৎপাদন বিগত দিনের সমস্ত রের্কডকে ছাপিয়ে নজির গড়বে বলেও দাবি করছেন দফতরের অনেক কর্তা। বাগানে বাগানে আম দেখে আশায় বুক বেঁধেছেন চাষিরাও।

অভিজিৎ সাহা

শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:০২

চৈত্রের বৃষ্টি স্বস্তি দিয়েছে মালদহ জেলার আম চাষিদের। মরশুমে বৃষ্টি হওয়ায় আমের গুণগত মান বাড়বে বলেও দাবি জেলার উদ্যান পালন দফতরের কর্তাদের। একই সঙ্গে তাঁদের দাবি, শোষক পোকার আক্রমণ কমবে। ফলে চলতি বছর আমের উৎপাদন বিগত দিনের সমস্ত রের্কডকে ছাপিয়ে নজির গড়বে বলেও দাবি করছেন দফতরের অনেক কর্তা। বাগানে বাগানে আম দেখে আশায় বুক বেঁধেছেন চাষিরাও।

জেলার আম চাষি রঞ্জিত মণ্ডল, পরিতোষ মণ্ডলরা বলেন, ‘‘গত বছর আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনার জন্য আমের উৎপাদন মার খেয়ে ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছিল। এ বার শুরু থেকে আবহাওয়া ভাল রয়েছে। আমের মুকুলও ভাল এসেছিল। সময় মতো বৃষ্টি হওয়ায় আম দ্রুত বৃদ্ধি পাবে। প্রচণ্ড দাবদাহে ঝড়ে পড়ার সম্ভাবনা কম থাকবে। তবে শিলাবৃষ্টি ও ঝড় হলেই ক্ষতি হয়ে যাবে।’’

চাষিদের পাশাপাশি আমের ফলন নিয়ে আশায় রয়েছেন উদ্যান পালন দফতরের কর্তারাও। উদ্যান পালন দফতরের জেলার সহ-অধিকর্তা রাহুল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এই সময় বৃষ্টি আমের পক্ষে সহায়ক। বৃষ্টি হলে আমের বোঁটা শক্ত হবে। পরে তীব্র দাবদাহে ঝড়ে পড়ার সম্ভাবনা কম থাকবে। এ ছাড়া বৃষ্টি না হলে চাষিদেরকে ১৫ থেকে ২০ দিন অন্তর সেচ দিতে হতো। সেটা দেওয়ার আর প্রয়োজন নেই। আমের এমন সময়ে বড় শত্রু হল শোষক পোকা। এই সময়ে শোষক পোকা পাতার উপরে মধু ত্যাগ করে। মধু কিছুদিন থাকার পরে ছত্রাকে পরিণত হয়ে গিয়ে পাতার ক্ষতি করে। বৃষ্টি হওয়ায় তা ধুয়ে যাবে এবং পোকারও উপদ্রবও কমবে। সবকিছু ঠিক থাকলে এ বার বিগতদিনের যা রের্কড রয়েছে এই জেলায় তা ছাপিয়ে যাবে।’’ উদ্যান পালন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, শীত এ বার জেলা থেকে সময়ের মধ্যে বিদায় নিয়েছিল। কুয়াশাও তেমন ছিল না। ফলে জেলায় ৯০ শতাংশ মুকুল হয়েছিল। শুরুর দিকে বৃষ্টিও তেমন হয়নি। ফলে মুকুল গাছ থেকে তেমন ঝরেনি। এ বার প্রায় ৭৫ শতাংশ আম গাছে রয়েছে। যা গত বছর গুলিতে কখনও দেখা যায়নি।

উদ্যান পালন দফতর সূত্রেই জানা গিয়েছে, ২০১৩ সালে জেলায় আমের উৎপাদন ব্যাপক হয়েছিল। সেই বছর মুকুল তেমন না আসলেও প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হওয়ায় মুকুলের তেমন ক্ষতি হয়নি। ফলে আমের উৎপাদন হয়েছিল ৩ লক্ষ ৪৫হাজার মেট্রিক টন। যা জেলায় সর্বকালীন আমের উৎপাদন। গত বছর জেলায় আমের উৎপাদন হয়েছিল ১ লক্ষ ৮৫ হাজার মেট্রিক টন। ওই বছর ঠান্ডা জেলাতে দীর্ঘস্থায়ী হওয়ায় গাছে গাছে মুকুল আসতে দেরি হয়েছিল। কুয়াশার দাপট থাকায় বহু গাছেই মুকুল আসেনি। গত বছর জেলাতে ৬০ শতাংশ মুকুল হয়েছিল। ২০১৩ সালের আমের উৎপাদন জেলার সর্বকালীন ফলনের রের্কড।

তবে উদ্যান পালন দফতরের কর্তাদের দাবি, এ বার সেই রের্কডকে ছাপিয়ে গিয়ে নয়া নজির গড়বে আম উৎপাদনে মালদহ জেলা। তাঁরা জানান, চলতি বছর জেলায় আম চাষের এলাকাও বেড়েছে। গত বছর মালদহ জেলায় ২৯ হাজার হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছিল। এ বার তা দাঁড়িয়েছে ৩০ হাজার হেক্টরে। ইংরেজবাজারে ৯ হাজার, মানিকচকে ৫ হাজার, রতুয়া ১ ও ২ ব্লকে তিন হাজার হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়। জেলার মধ্যে এই ব্লক গুলিতেই সবচেয়ে বেশি আম চাষ হয়। তবে গাজল, বামনগোলা, চাঁচল প্রভৃতি এলাকায় আমচাষের জমির পরিমাণ বেড়েছে। সময়মতো বৃষ্টি হওয়ায় আমের গুণগত মান বাড়বে। মান বাড়লেই দাম পাবেন চাষিরা। তাই এ বার গত বছরের লোকসানের ঘাটতি মিটিয়ে বাড়তি লাভের আশায় দিন গুনছেন তাঁরা।

malda farmers malda mangoes mango production record mango production
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy