একসঙ্গে: মঞ্চে মমতার সঙ্গে নেতারা। বুধবার। নিজস্ব চিত্র
এক বছর আগে লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের রাজবংশী ভোটব্যাঙ্কে ভাঙনের ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল। সেই ভোট শাসকদলের দিকে ফিরেছে, এমন কোনও আভাস সে ভাবে নেই। তাই কোচবিহার রাসমেলা ময়দানের সভায় দাঁড়িয়ে এই সম্প্রদায়কেই বার্তা দিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সঙ্গে গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের নেতা বংশীবদন বর্মণও এ দিন ছিলেন মমতার প্রশংসায় পঞ্চমুখ। মঙ্গলবার জলপাইগুড়ির মঞ্চে হাজির হয়ে অতুল রায়ও তৃণমূলের পাশে থাকারই ইঙ্গিত দিয়েছেন।
এই প্রচারের প্রভাব রাজবংশীদের মধ্যে কতটা পড়বে, তা অবশ্য এখনও স্পষ্ট নয়।
মমতার বক্তব্যের অনেকটা অংশ জুড়েই এ দিন ছিল রাজবংশী প্রসঙ্গ। তিনি রাজবংশী মানুষের উন্নয়নের স্বার্থে কী কী কাজ করেছেন, তার তালিকা তুলে ধরেন। মমতা বলেন, “আমি রাজবংশী ভাষা বুঝি। রাজবংশী ভাষায় কবিতাও লিখেছি। অ্যাকাডেমিতেও দিয়েছি। রাজবংশী ভাষা সহজ সরল।” তিনি জানান, পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস তৈরি হচ্ছে খলিসামারিতে। ১৭ একর জমি দিয়েছে রাজ্য। পঞ্চানন নগর নাম দেওয়া হয়েছে ক্যাম্পাসের। পঞ্চানন বর্মার বাড়ি সংস্কার করে একটা সংগ্রহশালা চালু করা হয়েছে। পঞ্চানন ঠাকুরের জন্মদিন রাজ্যে ছুটির দিন হিসেবেও ঘোষণা করেছে সরকার। রাজবংশী ভাষার ওপর সার্টিফিকেট কোর্স চালু হয়েছে। রাজবংশী আবাস যোজনায় ১১০০ বাড়ি তৈরি করা হয়েছে। ৫০০ জন রাজবংশী শিল্পীকে বাদ্যযন্ত্র দেওয়া হয়েছে। রাজবংশী ভাষা অ্যাকাডেমির হেড কোয়ার্টার কোচবিহার। আলিপুরদুয়ারে ৭০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে রাজবংশী কালচারাল অ্যাকাডেমি গঠন করা হয়েছে। রাজবংশী ডেভেলপমেন্ট বোর্ডকে ২৫ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে।
মমতা আরও দাবি করেন, ‘‘দীর্ঘদিন আপনাদের দাবি ছিল নারায়ণী সেনা ব্যাটালিয়ন। কেন্দ্রীয় সরকার কথা দিয়ে কথা রাখেনি। আমরা রাজ্য পুলিশে ওই ব্যাটালিয়ন করে দিয়েছি। তার হেড কোয়ার্টার হচ্ছে মেখলিগঞ্জে। আপনাদের যা যা দাবি ছিল রাজবংশী মানুষের, করে দিয়েছি।’’ এ দিনের সভায় নস্যশেখদের জন্য উন্নয়ন বোর্ড গড়ে তোলার আশ্বাসও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সঙ্গে বিজেপির বিরুদ্ধে ভোট ভাগাভাগির রাজনীতির অভিযোগেও সরব হন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ভোট করার জন্য বাঙালি-রাজবংশী ভাগাভাগি করি না। তফসিলি-আদিবাসী ভাগাভাগি করি না।”
বংশীবদন বর্মণ মঞ্চে বলেন, “রাজবংশীদের কথা একমাত্র ভেবেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। তিনি রাজবংশী মানুষের সবার্থে উন্নয়ন করেছেন। তাঁর সঙ্গেই আমাদের থাকা উচিত।” এ সবের প্রেক্ষিতে বিজেপির কোচবিহার জেলা সভানেত্রী মালতী রাভা বলেন, “রাজবংশী সম্পদায়ের মানুষের উপর নানা অত্যাচার হচ্ছে। খুন, ধর্ষণের ঘটনাও ঘটেছে। তাই ওই সব বক্তব্য রেখে লাভ হবে না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy