Advertisement
E-Paper

পাহাড়ে মমতার সরাসরি টক্কর গুরুঙ্গকে

পাহাড় সফরের হাফ সেঞ্চুরি পার করেছেন অনেকদিন আগেই। পাহাড়ে এসে উকি দিয়েছেন তাবড় নেতাদের অন্দরমহলে। শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর দলের যে প্রার্থী তালিকা পড়ে শুনিয়েছেন, তাতে পাহাড়ের তিন আসনের প্রার্থী বাছাই বুঝিয়ে দিয়েছে, পাহাড়ি রাজনীতিতে তিনি কাঁটা দিয়ে কাঁটা তুলতে চাইছেন।

কিশোর সাহা

শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০১৬ ০২:২৪

পাহাড় সফরের হাফ সেঞ্চুরি পার করেছেন অনেকদিন আগেই। পাহাড়ে এসে উকি দিয়েছেন তাবড় নেতাদের অন্দরমহলে। শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর দলের যে প্রার্থী তালিকা পড়ে শুনিয়েছেন, তাতে পাহাড়ের তিন আসনের প্রার্থী বাছাই বুঝিয়ে দিয়েছে, পাহাড়ি রাজনীতিতে তিনি কাঁটা দিয়ে কাঁটা তুলতে চাইছেন।

পাহাড়ের তিন প্রার্থীর মধ্যে দু’জন জিএনএলএফের প্রাক্তন নেত্রী। একজন মোর্চার টিকিটে জেতা বিধায়ক। কার্শিয়াঙে তৃণমূলের প্রার্থী শান্তা ছেত্রী জিএনএলএফের পাঁচ বারের বিধায়ক ছিলেন। দার্জিলিঙের প্রার্থী সারদা সুব্বা একসময়ে জিএনএলএফ সুপ্রিমো সুবাস ঘিসিঙ্গের ঘনিষ্ঠ বৃত্তে ছিলেন। পরে তিনি মোর্চায় যোগ দেন বর্তমানে তৃণমূলের মহিলা সংগঠনের নেত্রী। কালিম্পঙের বিধায়ক হরকাবাহাদুর ছেত্রী বরাবরই মোর্চা প্রধান বিমল গুরুঙ্গের মাথাব্যথার কারণ। সম্প্রতি তিনি মোর্চা ছেড়ে জন আন্দোলন পার্টি গঠন করেছিলেন। যদিও মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে তৃণমূলের প্রার্থী করে সরাসরি মোর্চার বিরুদ্ধে লড়িয়ে দিয়েছেন। পাহাড়ের তিন আসনেই জোড়াফুলের প্রতীকে একসময়ের জিএনএলএফ-মোর্চা নেতাদের প্রার্থী করে সরাসরি গুরুঙ্গকেই চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

দু’হাজার এগারো সালের পর থেকে মোর্চার সঙ্গে তৃণমূলের সম্পর্ক বরাবরই ‘নরমে-গরমে’ থেকেছে। মোর্চার সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকার সময়েও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার পাহাড় সফরে গিয়েছেন। কখনও কালিম্পঙের বিধায়ক হরকা বাহাদুর ছেত্রীর বাড়িতে গিয়ে চা খেয়েছেন, কখনও বা পাহাড়ের একের পর এক সম্প্রদায়ের জন্য পৃথক উন্নয়ন বোর্ড গঠনের ঘোষণা করে কাছে টানার চেষ্টা করেছেন। একসময়ে জিএনএলএফ নেতাদের হাতেই দ্বায়িত্ব দিয়ে সংগঠন সাজিয়েছিলেন গুরুঙ্গ। সেই জিএনএলএফেরই দুই নেত্রীকে ভোটে দাঁড় করিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মোর্চা ত্যাগী নেতাদের নিয়ে জন আন্দোলন পার্টি গঠন করেছিলেন হরকা বাহাদুর ছেত্রী। তৃণমূল সহ পাহাড়ের অন্য মোর্চা-বিরোধী দলের সমর্থন নিয়ে পাহাড়ের তিন আসনেই প্রার্থী দেবেন বলে হরকা ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু গুরুঙ্গের বিরুদ্ধে সরসারি তৃণমূলের প্রতীকেই প্রার্থী দিতে চেয়েছিলেন তৃণমূলনেত্রী।

হরকা এ দিন জানান, তিনি তাঁর দলেরই প্রার্থী হয়ে দাঁড়াচ্ছেন। তৃণমূল তাঁকে সমর্থেন করবেন। তাঁর সংক্ষিপ্ত মন্তব্য, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর প্রার্থী তালিকা ঘোষণার সময়ে কালিম্পঙের প্রার্থীর নাম ঘোষণা নিয়ে একটু ভুলবোঝাবুঝি হয়েছিল। ইতিমধ্যে মুখ্যমন্ত্রী নিজেই তা ব্যাখ্যা করেছেন।’’

পঞ্চান্ন বছরের শান্তা ছেত্রী ১৯৯৬ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত কার্শিয়াঙের বিধায়ক ছিলেন। দু’হাজার এগারো সালের পরে জিএনএলএফ-এর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করলেও মোর্চার ঘরে পা দেননি। উল্টে কয়েকবারের বিধায়কের পরিচিতির সুবাদে মোর্চা কর্মী-সমর্থদের ক্ষোভের মুখে তাঁকে পাহাড় চাড়তে হয়েছিল বলে অভিযোগ। রাজনৈতিক সূত্রের খবর, মোর্চা নেতাদের একাংশ শান্তা ছেত্রীর পরিচিতিকে ভয় পাচ্ছেন বলেই তৃণমূল তাঁকেই কার্শিয়াঙের প্রার্থী বেছেছেন। সারদা সুব্বা একসময়ে দাপুটে ছাত্রনেত্রী ছিলেন। মোর্চার সংগঠনের খুঁটিনাটি অনেককিছুর সঙ্গে পরিচিত এই নেত্রীকে প্রার্থী করাও কৌশলের অঙ্গ বলে পাহাড়ের রাজনৈতিক দলগুলি মনে করছে।

তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পরে মোর্চা নেতারা যে রাজনৈতিক আক্রমণ শুরু করবেন তা স্বাভাবিক। এ দিন মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরির কথায়, ‘‘ হরকাবাবু যে এতদিন তৃণমূলের মুখপাত্র হিসেবেই কাজ করেছেন তা স্পষ্টই বোঝা গিয়েছে।’’

bimal gurung mamata TMC election
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy