Advertisement
E-Paper

আবার মৃত্যু জ্বরে, ক্ষোভে ফুঁসছে পাড়া

জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার পর স্থানীয় চিকিৎসকের পরামর্শে দু’দিন প্যারাসিটামল ট্যাবলেট খেয়েছিলেন সন্তুবাবু। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় সোমবার ভোররাতে কাওয়াখালি এলাকার একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয় তাঁকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:৫৫
শোকার্ত: সন্তুবাবুর মৃত্যুর পরে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন তাঁর পরিজনেরা।  বুধবার শিলিগুড়িতে। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

শোকার্ত: সন্তুবাবুর মৃত্যুর পরে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন তাঁর পরিজনেরা।  বুধবার শিলিগুড়িতে। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ফের এক জনের মৃত্যু হল শিলিগুড়িতে। বুধবার সকালে খালপাড়ার একটি নার্সিংহোমে মারা যান মাটিগাড়ার নিউ পালপাড়ার বাসিন্দা সন্তু পাল (৩২)। চিকিৎসক মৃত্যুর শংসাপত্রে কারণ লিখেছেন ‘মাল্টি অর্গান ডিসফাংশন সিনড্রম’, ‘ভাইরাল হেমারিজিক ফিভার’। ডেঙ্গি নির্ণয়ে তাঁর রক্তের নমুনার ম্যাক অ্যালাইজা পরীক্ষা করা হয়েছে কি না স্বাস্থ্য দফতরের কাছে সে ব্যাপারে কোনও তথ্য মেলেনি।

জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার পর স্থানীয় চিকিৎসকের পরামর্শে দু’দিন প্যারাসিটামল ট্যাবলেট খেয়েছিলেন সন্তুবাবু। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় সোমবার ভোররাতে কাওয়াখালি এলাকার একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয় তাঁকে। মঙ্গলবার তাঁরা জানিয়ে দেন, রোগীর প্লেটলেট ১৪ হাজারে নেমে গিয়েছে। কিডনি, যকৃত কাজ করছে না। জানানো হয়, চিকিৎসা চালাতে প্রতিদিন ৫০ হাজার টাকা লাগবে। তবু রোগী কতটা সুস্থ হবে তা নিশ্চিত নয়। এর পরেই পরিবারের পরিচিত চিকিৎসকের কথা মতো মঙ্গলবার রাতে খালপাড়ার একটি নার্সিংহোমে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়। এ দিন বেলা পৌনে ন’টা নাগাদ তিনি মারা যান। ওই নার্সিংহোমে চিকিৎসক সৈকত দত্তের অধীনে ভর্তি করা হয়েছিল সন্তুবাবুকে। তাঁর কথায়, ‘‘রাতে নার্সিংহোমে আনার পর পরের দিন সকালেই তিনি মারা যাওয়ায় পরীক্ষার সময় মেলেনি।’’

মৃতের স্ত্রী বিউটি পাল বলেন, ‘‘ডেঙ্গি বলেই কাওয়াখালির নার্সিংহোম থেকে জানানো হয়েছিল। সেখানে ৬ ইউনিট প্লেটলেট এবং দুই ইউনিট প্লাজমা দেওয়া হয়েছিল। পরে যে নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয় সেখানেও ৩ ইউনিট প্লেটলেট এবং ১ ইউনিট প্লাজমা দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার রাত ১২টার পর ভেন্টিলেটরে দেওয়া হয়।’’ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রলয় আচার্য জানিয়েছেন, ওই ব্যক্তির রক্তের নমুনা ম্যাক এলাইজা পরীক্ষার জন্য নেওয়া হয়েছিল কি না তা দেখা হচ্ছে। সন্তুবাবুর মৃত্যুর পর শিলিগুড়ি পুর এলাকা এবং মহকুমা মিলিয়ে জ্বর, ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১৩ জন।

সন্তুবাবুর পাড়া, নিউ পালপাড়ায় জ্বর, ডেঙ্গিতে আক্রান্ত অনেকেই। গত তিন মাস ধরে সেখানে ঘরে ঘরে জ্বর, ডেঙ্গির উপসর্গও রয়েছে। মৃত সন্তুবাবুর চার বছরের ছেলে অঙ্কুশও জ্বরে আক্রান্ত। অথচ এলাকায় স্বাস্থ্য দফতর, মহকুমা পরিষদ বা প্রশাসনের তরফে এলাকার মশা মারতে ধোঁয়া দেওয়া, তেল স্প্রে করা, ব্লিচিং ছড়ানোর কোনও উদ্যোগ দেখা যায়নি বলে বাসিন্দারা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। সন্তুবাবুর বাড়ি লাগোয়া পাড়ার বিভিন্ন বাড়িতে মাটির পাত্র তৈরি হয়। সন্তুবাবুর বাড়ির উঠোনে নানা পাত্রে জল জমে থাকতে দেখা গিয়েছে। অথচ স্বাস্থ্য কর্মীরা একবারও এলাকায় সচেতনতা প্রচার যাননি বলে অভিযোগ।

সুশান্ত পাল, গোবিন্দ পাল, বিপ্লব পালরা বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীকে জানাতে হবে যে পালপাড়া বলে একটা জায়গা রয়েছে।’’ মহকুমা পরিষদের সভাধিপতি তাপস সরকার জানান, কেন এলাকায় ডেঙ্গি প্রতিরোধে স্বাস্থ্যকর্মীরা যাননি খোঁজ নিচ্ছি।

Dead Fever
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy