Advertisement
০৮ মে ২০২৪
SSC recruitment scam

এসএসসির পরীক্ষায় কারও সাদা খাতা জমা পড়েছে, কেউ অনুত্তীর্ণ,তবুও স্কুলে শিক্ষকতা!

দেখা যায়, কারও সাদা খাতা। কেউ আবার হাতেগোনা কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। অথচ সে সমস্ত শিক্ষকই রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলে চাকরি করছেন।

এসএসসি-র শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় অভিযোগ উঠল জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়ি এবং ময়নাগুড়িতে ৩ শিক্ষক-শিক্ষিকার বিরুদ্ধে।

এসএসসি-র শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় অভিযোগ উঠল জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়ি এবং ময়নাগুড়িতে ৩ শিক্ষক-শিক্ষিকার বিরুদ্ধে। প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০২২ ২২:৪৮
Share: Save:

কেউ উত্তরপত্রে কিছুই না লিখেই তা জমা দিয়েছেন। অথচ স্কুলে ভূগোল পড়াচ্ছেন। কেউ বা আবার পরীক্ষার বাধাই টপকাতে পারেননি। তবুও তিনি স্কুলপড়ুয়াদের পড়াচ্ছেন। স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)-র শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় এ হেন জারিজারি করার অভিযোগ উঠল জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়ি এবং ময়নাগুড়িতে ৩ শিক্ষক-শিক্ষিকার বিরুদ্ধে।

রাজ্যে প্রাথমিক থেকে শুরু করে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। তা নিয়ে একাধিক মামলাও চলছে। কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে বৃহস্পতিবার ৯৫২ জনের নাম-সহ উত্তরপত্র (ওএমআর শিট) প্রকাশ করে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। দেখা যায়, কারও সাদা খাতা। কেউ আবার হাতেগোনা কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। অথচ সে সমস্ত শিক্ষকই রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলে চাকরি করছেন। এই তালিকায় ময়নাগুড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের দু’জন শিক্ষক এবং ধূপগুড়ির এক শিক্ষিকার নাম রয়েছে। ওই তালিকা প্রকাশ হতেই তাঁদের উত্তরপত্রের ছবি ভাইরাল হয়েছে।

ময়নাগুড়ি হাই স্কুলের ওই দুই অভিযুক্ত ভূগোল শিক্ষকের নাম রশিদুল হোসেন এবং লিটন বর্মণ। তাঁরা কোচবিহারের বাসিন্দা। যদিও রশিদুল হোসেনের দাবি, ‘‘এ বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই। এটা সম্পূর্ণ আদালত ও পর্ষদের বিষয়। আমি সাদা খাতা জমা দিইনি। এর বেশি আমি কিছু বলব না।’’ যদিও আর এক অভিযুক্ত শিক্ষক লিটনকে শুক্রবার স্কুল চত্বরেই খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এই বিষয়ে জলপাইগুড়ি জেলার পরিদর্শক (সেকেন্ডারি) বালিকা গোল আনন্দবাজার অনলাইনের কাছে বলেন, ‘‘বিষয়টি আপনাদের কাছ থেকে জানলাম। তবে আমার কাছে এ রকম কোনও তালিকা আসেনি।’’

ওএমআর শিট প্রকাশিত হতেই বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত বিদ্যাশ্রম দিব্যজ্যোতি বিদ্যানিকেতন হাই স্কুলের অভিযুক্ত শিক্ষিকা রমা বর্মণ। জলপাইগুড়ি জেলার ধূপগুড়ি ব্লকের কদমতলা বিদ্যাশ্রম দিব্যজ্যোতি বিদ্যানিকেতনের ইতিহাস পড়ান তিনি। ওই শিক্ষিকার ছবি-সহ ওএমআর শিটও সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। বিদ্যালয় সূত্রে খবর, ‘মিউচ্যুয়াল ট্রান্সফার’ নিয়ে ২০২০ সালে বিদ্যালয়ে যোগদান করেন তিনি। তবে শুক্রবার সকালে ধূপগুড়ির এই স্কুলের সেই শিক্ষিকা অনুপস্থিত। স্কুলেরই সহ-শিক্ষক অশোকতরু বসু বলেন, ‘‘শিক্ষিকা হিসাবে তিনি (রমা বর্মণ) ভালই। আমাদের সঙ্গেও বেশ ভাল ভাবেই মেশেন।’’ হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষিক সুদীপ মল্লিক বলেন, ‘‘২০২০ সালের তিনি মিউচুয়াল ট্রান্সফারের মধ্য দিয়ে আমাদের স্কুলে এসেছিলেন রমা। তিনি ভাল শিক্ষিকা হিসেবেই আমাদের স্কুলে রয়েছেন। এ ধরনের কোনও ঘটনা ঘটে যাবে, এটা আমরা ভাবতেই পাইনি। এটা খুবই দুঃখজনক। একটা বিচার ব্যবস্থার মধ্যে দিয়ে এই নির্দেশিকা এসেছে। এটা আমাদের স্কুলের সুনাম বা দুর্নামের কোনও বিষয় নয়।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘গতকালকেই (বৃহস্পতিবার) তিনি আমাদের জানিয়েছিলেন যে তাঁর ছেলের অপারেশন হয়েছে বলে কিছু দিন স্কুল আসবেন না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

SSC recruitment scam SSC Exam Fraud Jalpaiguri
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE