Advertisement
২১ মে ২০২৪
ডেঙ্গি নিয়ে বাড়ছে আশঙ্কা

তৎপরতা কাজে আসবে তো

প্রতি বছরই উত্তরবঙ্গে ফিরে আসে ডেঙ্গি। প্রশাসনের সতর্কতা কতটা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। স্বাস্থ্য দফতর অবশ্য জানিয়েছে, ডেঙ্গি রুখতে যা যা করার, তার অনেকটাই করা হয়েছে। এক ঝলকে, উত্তরের বিভিন্ন জেলার অবস্থা কী, তার খোঁজ এই প্রতিবেদনে।শুক্রবার জ্বর ও ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে কেউ ভর্তি হননি। বৃহস্পতিবার ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হন সৌরভ অগ্রবাল নামে বছর কুড়ির এক যুবক।

জলপাইগুড়ি পুরসভাতে ডেঙ্গি নিয়ে বৈঠক। —নিজস্ব চিত্র।

জলপাইগুড়ি পুরসভাতে ডেঙ্গি নিয়ে বৈঠক। —নিজস্ব চিত্র।

শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০১৬ ০২:২৩
Share: Save:

রায়গঞ্জ

শুক্রবার জ্বর ও ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে কেউ ভর্তি হননি। বৃহস্পতিবার ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হন সৌরভ অগ্রবাল নামে বছর কুড়ির এক যুবক। তবে হাসপাতাল সুপার গৌতম মণ্ডলের দাবি, হাসপাতালের পরীক্ষায় তাঁর শরীরে ডেঙ্গির জীবাণু মেলেনি। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জগন্নাথ সরকার বলেন, উত্তর দিনাজপুরে এখনও পর্যন্ত সরকারি ভাবে কেউ ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হননি। সৌরভের বাবা জানিয়েছেন, কলকাতার লেকটাউনে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকেন, সেখানেই গত ২৮ জুলাই তিনি জ্বরে আক্রান্ত হন।

কোচবিহার

ডেঙ্গি উপসর্গ নিয়ে কোচবিহারের হাসপাতালগুলিতে এখনও কেউ ভর্তি হননি। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি জেলার এক বাসিন্দার রক্তে অবশ্য ডেঙ্গি জীবাণু পাওয়া গিয়েছে। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই ইতিমধ্যেই হাসপাতালগুলিকে নজরদারি বাড়াতে বলা হয়েছে। হাসপাতাল সুপাররাও বিষয়টি নিয়ে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করেছেন। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, চলতি সময়ে জ্বরের প্রকোপ বেড়েছে। কোচবিহার জেলা হাসপাতালের সুপার জয়দেব বর্মন জানান, ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগী এলে তাঁর ঠিকানা মতো প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে। বাড়ির পাশে যাতে জমা জল না থাকে, সে জন্য প্রচারও শুরু হয়েছে। কোচবিহারের সিএমওএইচ সুবীর গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “আমরা সতর্ক রয়েছি। ট্যাবলো বের করা হয়েছে। প্রচার করা হচ্ছে।”

মালবাজার

ডেঙ্গি ছড়াবার আশঙ্কা রয়েছে ডুয়ার্সের চা বলয়েও। ভারী বৃষ্টিতে চা শ্রমিক আবাস এলাকাগুলোতে জল দাঁড়িয়ে অস্বাস্থ্যকর অবস্থার সৃষ্টির পাশাপাশি অস্বাস্থ্যকর ভাবে শুয়োর প্রতিপালনও সমস্যা বাড়াতে পারে বলে আশঙ্কা স্বাস্থ্যকর্মীদের। প্রতিরোধে ইতিমধ্যেই ব্লিচিং ছেটানো, জমা জল সরাতে সচেতনতা বাড়াবার কাজ শুরু হয়েছে। নাগরাকাটা, মেটেলি এবং মালবাজার ব্লকের প্রায় ৬০টি বড় চা বাগানের মধ্যে থাকা চা শ্রমিক পরিবারগুলোর কাছে সচেতনতার বার্তা পৌছে দেওয়াটাও সহজ কাজ নয় বলে মানছেন স্বাস্থ্যকর্তারা। মালবাজার মহকুমায় ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর খোঁজ মেলেনি, কিন্তু জ্বরে আক্রান্তদের সংখ্যা বর্ষায় যথেষ্টই বেড়েছে বলে জানা গেছে।

ইসলামপুর

ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে ইসলামপুর হাসপাতালে চিকিত্সাধীন শান্তিনগরের বাসিন্দা শুক্লা দাস। হাসপাতালের সুপার নারায়ণচন্দ্র মিদ্যা অবশ্য জানিয়েছেন, ডেঙ্গি বলে সন্দেহ হচ্ছে, কিন্তু রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট না এলে কিছু বলা সম্ভব নয়। ইসলামপুর পুরএলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, অন্য পুর এলাকাতে নিয়মিত মশা তাড়ানোর জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হলেও ইসলামপুর তা নেওয়া হচ্ছে না।

মালদহ

জ্বর নিয়ে রোগী ভর্তি থাকলেও মালদহ জেলায় এখনও ডেঙ্গির জীবাণু ধরা পড়েনি বলে দাবি স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের। মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, জ্বর নিয়ে শুক্রবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৩২ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। প্রত্যেকেরই রক্ত পরীক্ষা করা হয়েছে। তবে কারও রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু ধরা পড়েনি বলে জানিয়েছেন মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সুপার তথা সহ অধ্যক্ষ অমিত কুমার দাঁ। তিনি বলেন, মেডিক্যাল কলেজের মেডিসিন বিভাগে ডেঙ্গি রোগীদের জন্য পৃথক চিকিৎসা ব্যবস্থা করা হয়েছে। পর্যাপ্ত কিটও মজুত রয়েছে।

জলপাইগুড়ি

পাশের শহর শিলিগুড়িতে ডেঙ্গির থাবা বসতেই সতর্ক জলপাইগুড়ি জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর৷ এদিন জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে ডেঙ্গি নিয়ে জেলার বিএমওএইচ ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রকাশ মৃধা৷ কোনও এলাকায় জ্বরের খবর পেলেই স্বাস্থ্যকর্মীদের বাড়ি বাড়ি ঘুরে খোঁজ নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷ মঙ্গলবার জলপাইগুড়ি পুরসভাতেও একটি বৈঠক ডাকা হয়েছে৷ বৈঠকে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক, সমস্ত কাউন্সিলারদের পাশাপাশি জলপাইগুড়ি শহরে অবস্থিত সমস্ত স্কুল কর্তৃপক্ষকে ডাকা হবে৷

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dengue Meeting
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE